ভিন ধর্মে প্রেম, তরুণীকে খুন করল বাবা-দাদা, ধরিয়ে দিল একটি নম্বর!
ডোমেরা যুবতীর শরীরের দুটি অংশে দুটি ফোন নাম্বার দেখতে পায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে এক তরুণীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। রক্ত চুইয়ে পড়ছে দেহ থেকে। মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন। বর্ধমানের জামালপুরের স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে দেহটি দেখেছিলেন। পরে খবর যায় পুলিসে। বর্ধমান পুলিস দেহ উদ্ধার করে। কিন্তু পরিচয় জানা যাচ্ছিল না তরুণীর। কিন্তু ডোমরা পুলিসকে দিল একটি ক্লু। তরুণীর শরীরে লেখা ছিল দুটি নম্বর। আর তাতেই রহস্যের উন্মোচন। উঠে এল রাজ্যে অনার কিলিংয়ের আরও এক ভয়ঙ্কর ঘটনা।
অনার কিলিং' এর এই রোমহর্ষক ঘটনায় আরও এক নতুন সংযোজন। বিহারের মুজফফরপুরের ইলাদাদ গ্রামের বাসিন্দা জাহানা খাতুন। বয়স মাত্র উনিশ। প্রেমে পড়ে ভিন ধর্মের একটি ছেলের। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তরুণীর পরিবার। তাই সঙ্গীর সঙ্গেই পালিয়ে যায় সে। কিন্তু বাড়ির লোক তাদের ফিরিয়ে আনে। তবুও বাঁধা মানেনি প্রেম। আবার পালায় দুজনে। এবারেও বুঝিয়েসুঝিয়ে ফিরিয়ে আনে বাড়ির লোক। কিন্তু এবার মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে অন্য প্ল্যান ছিল তরুণীর বাবা ও দাদার।
আরও পড়ুন: পাত্রী দেখতে গিয়ে তাঁর বাড়িতে বারাকপুরের পাত্র যা ঘটালেন, তা এই রাজ্যে কেন দেশে কোথাও আগে ঘটেনি!
বাবা মহঃ মুস্তাক ওরফে মুস্তাফা আর দাদা মহঃ জাহিদ, দুজনেই কলকাতায় পার্ক সার্কাস এলাকায় থাকেন। তাঁরা পেশায় গাড়ি চালক। তাঁরা বুঝিয়ে জাহানাকে কলকাতা নিয়ে আসেন। কলকাতা থেকে গাড়ি করে ৩১ অগাস্ট বর্ধমানের উদ্দেশে রওনা দেন। পথের মাঝে জামালপুরে শ্বাসরোধ করে বাবাই খুন করেন জাহানাকে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মেয়ের মাথায় ভারী পাথর দিয়ে আঘাত করেন তিনি।
এরপর তরুণীর দেহ নবগ্রামে ফেলে পালান বাবা ও দাদা। পরের দিন অর্থাত্ এই মাসের প্রথম দিন জাতীয় সড়কের ধারে ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। এরপরই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। ডোমেরা যুবতীর শরীরের দুটি অংশে দুটি ফোন নাম্বার দেখতে পায়। এর একটি সেই প্রেমিকের, যিনি বর্তমানে মুম্বাইতে কর্মরত। জামালপুর থেকে পুলিশের দল মুম্বই যায়। পুলিস মৃত জাহানার ছবি দেখায় ওই যুবককে। একেবারে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। জানান, জাহানার বাবা ও দাদা তাকে কলকাতায় নিয়ে যান। তাঁরাই জাহানাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন ওই যুবক।
আরও পড়ুন: এ কী হল কেষ্টর! সকলের সামনে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন অনুব্রত মণ্ডল
ওই যুবকের কাছ থেকেই বাবা ও দাদার ফোন ও ঠিকানা পায় পুলিস। শুরু হল তল্লাশি। পুলিসি জেরায় ভেঙে পড়েন জাহানার বাবা ও দাদা। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। তবে এত সবের পরও নিজেদের কৃতকর্মের জন্য বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নন তাঁরা। ‘ গ্রামে মানসম্মান চলে যাচ্ছে ভিন জাতে প্রেমের কারণে, মেয়েও তাই করেছে, তাই তাকে শাস্তি দিয়েছি’, পুলিসের সামনেও বুক চিতিয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টিতেই স্পষ্ট সেকথা জানালেন জাহানার বাবা।