দেখেনি ছেলে, স্টেশনে ফেলে রেখে যায় ছোট মেয়ে, বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়াল বড় মেয়ে
`মা তুমি আমার কাছেই থাকবে`, মাকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মহিলা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'স্বামী-স্ত্রী আর অ্যালসেসিয়ান, জায়গা বড়ই কম; আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম'। নচিকেতার এই গান আজও যেন ভিষণ ভাবে সত্যি। বর্তমান সময়ে একটু বেশি প্রসঙ্গিকও বটে। ঠিক যেমনটা হাওড়ার রাম রাজাতলার বাসিন্দা সাবিত্রী দেবীর কাছে।
সাবিত্রী দেবীর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। গতবছর পর্যন্ত হাওড়ায় ছেলের কাছেই থাকতেন বছর ৭৫-এর এই বৃদ্ধা। তবে গতবছর লকডাউন থেকেই সাবিত্রী দেবী বুঝতে পারেন ছেলের সংসারে তিনি একটি বাড়তি প্রাণী হয়ে উঠেছেন। অপমান, অশ্রদ্ধায় বুকের ভিতর জমতে থাকে জমাট বাঁধা কষ্ট। কষ্ঠ দূর করতে উত্তরপ্রদেশের বালিয়াতে বসবাসকারী ছোট মেয়ের কাছে গিয়ে ঠাঁই নেন। কিন্তু সেখানেও জোটেনি সম্মান-শ্রদ্ধা। ছোট মেয়ের মনটাও যে বড়ই ছোট! বৃদ্ধা মাকে দেখার দায় বইতে নারাজ সেও। সেজন্যই হয়ত সুগারের রোগী মাকে একদিন বাড়ির কাছের রেল প্লাটফর্মে ফেলে রেখে চলে যান। এবার কী হবে? কোথায় যাবেন? ফিরে আসবেন ছোট ছেলের কাছে? না, সেখানে তো সম্মান নেই। মনের এই দোলাচলে উত্তরপ্রদেশ থেকে ট্রেন ধরে বাণিজ্য নগরী মুম্বইতে পাড়ি দেন সাবিত্রী দেবী।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর জেলায় BJP-র বিরুদ্ধে ভোট পরবর্তী হামলার অভিযোগ TMC-র, ওড়ালেন বিধায়ক
আরও পড়ুন: নদীগর্ভে তলিয়ে গেল আস্ত একটা স্কুল, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা
সেখানে শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নজরে পড়েন তিনি। সংগঠনের হাসপাতালে আশ্রয় হয় বৃদ্ধার। শ্রদ্ধা সংগঠনেরই একজন স্বেচ্ছাসেবক থাকেন হুগলিতে। তাঁর মাধ্যমেই সাবিত্রী দেবীর কথা জানতে পারেন রিষড়ায় থাকা সাবিত্রী দেবীর বড় মেয়ে। মায়ের খোঁজে মুম্বইয়ে পৌঁছে যান তিনি। রবিবার বড় মেয়ের সঙ্গে মুম্বই থেকে রিষড়ায় ফিরলেন বৃদ্ধা। দু'জনেরই চোখে জল। মাকে আঁকড়়ে ধরে তিনি বলেন, "মা তুমি আমার কাছেই থাকবে। তোমাকে আর কোথাও যেতে হবে না মা।"