নিজস্ব প্রতিবেদন:  দাঁড়িয়ে থেকে ভাইদের দিয়ে নিজের মেয়ের শ্লীলতাহানি করাল বাবা। জঘন্য, ঘৃণ্য, অমানবিক- এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করেও বোধ হয় রানাঘাটের ন’পাড়ার এই ঘটনাকে বর্ণনা করা যায় না। আর এর নেপথ্যের কারণ বলতে গেলে শক্ত হয়ে ওঠে চোয়াল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রানাঘাটের  মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এই মেয়ের জীবনের প্রতিটি মোড়ে রয়েছে দুঃখ, কষ্ট, পরিবারের ওপর চাপা ক্ষোভ। কিন্তু, বছর পনেরোর এই মেয়ে বরাবরই উচ্চশির প্রতিবাদী চরিত্র। লড়াই তার নিজের বাবা তথা পরিবারের সঙ্গে। আর এই লড়াইয়ের একমাত্র সঙ্গী তার মা। 


আরও পড়ুন: দোলের স্টক এসে গেছে, মেসেজ পেয়েই হোটেলের গোপন কুঠুরিতে হানা, উদ্ধার কয়েক লক্ষ টাকার মদ


স্পষ্টবক্তা এই মেয়ে নিজেই তার জীবনের কাহিনী জানিয়েছে ২৪ ঘণ্টাকে। সেই কাহিনী শুরু করতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কয়েকটা বছর। ওই কিশোরীর বাবা পেশায় ভ্যানচালক। মদের প্রতি তার চরম আসক্তি। শুধু মদই নয়, কিশোরীর বাবার 'কুনজর' ছিল তার ভাইয়ের বউয়ের প্রতিও। যৌথ পরিবারে থাকায়, কাকিমার সঙ্গে বাবার মাত্রাতিরিক্ত মেলামেশা আর মায়ের প্রতি বাবার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন মুখ বুজে মেনে নিতে পারেনি সে।  পরিস্থিতি মাত্রা ছাড়ালে গলা চড়িয়ে প্রতিবাদ জানায় ওই কিশোরী। রুখে দাঁড়ায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে।


কিন্তু পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায় তাতে। স্ত্রীর সামনেই ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করতে থাকে কিশোরীর বাবা। আর এতে ওই কিশোরীর প্রতিবাদের সুর আরও জোরালো হয়। চলতি মাসের ৩ তারিখ বাবা-কাকিমাকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে সে। আর এটাই হল কাল।


কিশোরী ও তার মায়ের ওপর চড়াও হয় বাবা-কাকা-কাকিমা। চলে অকথ্য অত্যাচার। মাকে বাঁচাতে গিয়ে আরও বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হয় কিশোরী। অভিযোগ, এরপর বাবার নির্দেশে কিশোরীর দুই কাকা তাকে বিছানায় ফেলে শ্লীলতাহানি করে। কিশোরীর শরীরের বিভিন্ন অংশে তৈরি হয়েছে ক্ষত।


আরও পড়ুন: জলভর্তি বালতিতে ডুবে মৃত্যু মেটিয়াবুরুজের দেড় বছরের শিশুর


তবে এখানেই শেষ নয়। ওই কিশোরী ও তার মাকে বাঁশ পেটা করে খুনের চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ। সেদিন রাতের অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে মাকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিল কিশোরী। মাথার উপর অসম্মানের ছাদের তোয়াক্কা করেনি সে। এখন তারা আশ্রয়হারা। এরপর রানাঘাট মহিলা থানায় বাবা-কাকা-কাকিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে ওই কিশোরী। অভিযুক্ত তিনজনই এখন পলাতক।


বর্তমানে পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে কিশোরীর। এই কয়েক দিনের ব্যবধানে শরীরের ক্ষত কিছুটা শুকিয়েছে। কিন্তু মনের জ্বালা মেটেনি। অন্যায় মেনে না নেওয়া সেই মেয়ের ভিতরে জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। কিশোরীর কথায়, ‘মনের ভিতর কেমন একটা ধাক্কা লেগেছে। মনে হচ্ছে, এই লড়াইয়ে জিততেই হবে।’কোথা থেকে এত শক্তি পায় ছোট্ট এই মেয়েটি? প্রশ্ন করতে ক্ষীণ গলায় মায়ের উত্তর, ‘হেরে যেতে শেখেনি ও।’