R G Kar Incident: সেমিনার হল থেকে ফিরে রাতে ঘুমোয়, সকালে জামা-কাপড় ধোয় নির্বিকার সঞ্জয়! তারপর আর এক দফা...
R G Kar Doctor Death: আরজি করে ঘটনার জেরে মহিলা নিরাপত্তায় আরও জোর দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা পুলিস কমিশনারের। হাসপাতাল, স্কুল, মেডিকেল কলেজ, হস্টেলে নারী নিরাপত্তায় বাড়তি নজর। মহিলা নিরাপত্তায় পুলিসকে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি।
পিয়ালি মিত্র: বাইক থেকে ব্যারাক-- সবই তার অনায়াস নাগালে। সামান্য সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও সে সরকারি বাইক ব্যবহার করত, সে সরকারি গাড়িও ব্যবহার করত, সে অবলীলায় থাকত পুলিস ব্যারাকে। ভয়ংকর প্রভাবশালী বলে সে পরিচিত ছিল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আরজি করে সর্বত্র ছিল তার অবাধ যাতায়াত! এমন এমন জায়গায় সে অবাধে ঘোরাফেরা করত যা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হত না। কিন্তু সামান্য সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েওসঞ্জয় কোথা থেকে পেয়েছিল এই ক্ষমতা?
ডিউটি থাকলে সিভিক ভলান্টিয়াররা থানা বা ইউনিটের বাইক ব্যবহার করতে পারে। তবে তা তাঁদের নামে অ্যালট হয় না। তাঁদের নিজেদের নামে সরকারি বাইক বরাদ্দ হওয়ার কথা নয়। অথচ সঞ্জয়ের নামে বরাদ্দ হয়ে যায় বাইক। সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুলিস ব্যারাকেও থাকার কথা নয়, নিয়ম নেই। অথচ দিনের পর দিন সঞ্জয় কী ভাবে চতুর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে থাকত? উঠছে প্রশ্ন। এবং প্রশ্নের এখানেই শেষ নয়। পুলিস সংগঠনের কাজের কথা বলে অনেক সময় সে ব্যবহার করত পুলিসের সরকারি গাড়িও, দাবি সূত্রের। পুলিস সংগঠন সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণেই এত প্রভাব? খাতায়-কলমে কলকাতা পুলিসের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পুলিস সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল সঞ্জয়। পুলিশ সংগঠনের হয়েই কাজ করত সে।
কিন্তু এহ বাহ্য। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে চমকের পর চমক, পরের পর উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভয়ংকর ওই সব ঘটনা ঘটানোর আগে-পরে সঞ্জয় কী কী করেছিল, জানলে হয়তো হাঁ হয়ে যেতে হয়। শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে যেতে পারে ঠান্ডা স্রোত।
কী কী জানা যাচ্ছে?
জানা যাচ্ছে, ৫ অগস্ট পশ্চিম মেদিনীপুরের সালুয়াতে পুলিস ওয়েলফেয়ার কমিটির মিটিং ছিল, সেটি সেরে ৮ অগস্ট রাতেই পুলিস লেখা সাদা রঙের অ্যাপাশে বাইকে আরজিকর ফেরে সঞ্জয়। তখন রাত ১১টা। এর পরে সে বেরিয়ে যায়। তারপর মদ্যপান করে এবং আবার আরজি করে ঢোকে। এবং তার পরের ঘটনা সকলে জানে। সেমিনার হলে গিয়ে মেডিক্যাল ছাত্রীর সঙ্গে ওই নৃশংস কাণ্ড ঘটায় সে।
তবে, ঘটনার পরে খুবই নির্বিকার ছিল সে। সেখান থেকে সে পুলিস ব্যারাকে ফিরে আসে, এখানেও সে মদ খায় এবং ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে যথারীতি ঘুম থেকে ওঠে এবং নির্বিকার ভাবে জামা-ট্রাউজার্স ধুয়ে ফেলে। এদিকে ততক্ষণে আরজি করে শোরগোল পড়ে যায়, কিন্তু সঞ্জয়ের মধ্যে কোনও উত্তেজনা কেউ দেখেনি। আশ্চর্য নির্বিকার থাকে সে। তখন সে ফের ড্রিংক করে বলে জানা গিয়েছে!
এদিকে আজ, রিবারই আরজি করে ঘটনার জেরে মহিলা নিরাপত্তায় আরও জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুলিস কমিশনার। হাসপাতাল, স্কুল, মেডিকেল কলেজ, হস্টেলে নারী নিরাপত্তায় বাড়তি নজর। মহিলা নিরাপত্তায় পুলিসকে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি। কমিশনের বার্তা, সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ কোনো পুলিসকর্মী আইন ভাঙলে কোনো মতেই তা বরদাস্ত করা হবে না। তাদের প্রতি কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। শহরের পুলিসবাহিনীর উদ্দেশ্যে কমিশনারের মন্তব্য, আরজি কর হাসপাতালের মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের মহিলাদের সুরক্ষার প্রতি অতিরিক্ত সতর্ক হওয়া দরকার। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জিরো টলারেন্সের নীতি নিতে হবে! ঘটনার জেরে বাহিনীর উদ্দেশে ১৫ দফা নির্দেশও দিয়েছেন কমিশনার বিনীত গোয়েল।