Corp Insurance: জমি না থেকেও অ্যাকাউন্টে টাকা! বাঁকুড়়ার ছাতনায় শষ্য বিমায় ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগ
গ্রামের প্রকৃত কৃষকরা যে পরিমাণ জমির তথ্য আবেদনের সঙ্গে জমা দিয়েছিলেন তা ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে দিয়েছে কৃষি দফতর। ফলে বিমার নামমাত্র টাকা পেয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে গ্রামের যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব জমি নেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে মোটা মোটা অঙ্কের বিমার টাকা ঢুকছে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শষ্য বিমায় ব্যাপক বেনিয়ম। ছাতনায় একটি গ্রামেই ২২ জন ভুয়ো কৃষককে শষ্য বিমা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ। নিজস্ব জমি না থাকা সত্ত্বেও ২২ জনকে ভুয়ো কৃষক হিসাবে দেখিয়ে শষ্য বিমা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অন্যদিকে গ্রামের প্রকৃত কৃষকদের জমির পরিমাণ কমিয়ে তাঁদের নামমাত্র শষ্য বিমা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের হাউসিবাদ গ্রামের এই ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে কৃষি দফতর। অভিযোগ পাওয়ার পরই শুরু হয়েছে তদন্ত।
গত কয়েক বছর ধরে এ রাজ্যের কৃষকরা খারিফ ও রবি মরশুমে নিজেদের শষ্য বিমা করার সুযোগ পাচ্ছেন। দুটি মরশুমে পৃথক পৃথকভাবে নিজেদের চাষযোগ্য জমির বিবরণ সহ শষ্য বিমা করার জন্য ব্লক স্তরের কৃষি দফতরে আবেদন জানান কৃষকরা। সেই আবেদনের তথ্য যাচাই করে কৃষি দফতর তা পাঠিয়ে দেয় বিমা সংস্থার কাছে । সেই তথ্যের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার বিমার প্রিমিয়াম জমা করে সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থায়। আবহাওয়া বা অন্য কোনও কারণে ফসলহানি হলে সরাসরি বিমা সংস্থা কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিমার টাকা জমা করে।
এখন চলতি বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বাঁকুড়ার ছাতনায় মার খেয়েছে খারিফ মরশুমের আমন চাষ। বৃষ্টির অভাবে বহু জমিতে ধান রোপণের কাজই করতে পারেননি ওই ব্লকের কৃষকরা। সেই কারণে সম্প্রতি বিমা সংস্থার তরফে ছাতনা ব্লকের কৃষকদের শষ্য বিমার টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে। আর তার শুরুতেই বড়সড় বেনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। ছাতনা ব্লকের হাউসিবাদ গ্রামের কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, গ্রামের প্রকৃত কৃষকরা যে পরিমাণ জমির তথ্য আবেদনের সঙ্গে জমা দিয়েছিলেন তা ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে দিয়েছে কৃষি দফতর। ফলে বিমার নামমাত্র টাকা পেয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে গ্রামের যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব জমি নেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে মোটা মোটা অঙ্কের বিমার টাকা ঢুকছে। গ্রামবাসীদের দাবি, যাদের জমি নেই, তাদের আবেদনে হয় অন্যের জমি অথবা ভুয়ো জমির তথ্য দিয়ে বিমার মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, শুধু একটি গ্রামেই ২২ জনকে ভুয়ো কৃষক হিসাবে দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা পাইয়ে দেওয়া হলে গোটা ছাতনা ব্লকে দুর্নীতির বহর কতটা তা আন্দাজ করা মুশকিল।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই স্থানীয় বিডিও, জেলাশাসক এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এরপরও ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামীতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীরা যাঁদের ভুয়ো কৃষক বলে দাবি করেছেন, তাদের কারও সাফাই তিনি ভাগচাষি। আবার কারও সাফাই সবটাই চক্রান্ত। অভিযোগ পেতেই কৃষি দফতর তদন্ত শুরু করেছে। কৃষি দফতরের যুক্তি, যাদের ভুয়ো কৃষক বলা হচ্ছে তারা কেউই ভুয়ো কৃষক নয়। তাঁদের কারও নিজস্ব জমি রয়েছে, কেউ আবার ভাগচাষি। ভাগচাষিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে সংশাপত্র সংগ্রহ করে তা বিমার আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। এরপরও যদি কোনও গন্ডগোল হয়ে থাকে তাহলে তার দায় বিমা সংস্থার। একই দাবি করেছেন ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও।
আরও পড়ুন, Malbazar: ফের ট্রেনচালকের তৎপরতায় বাঁচল দাঁতাল! হাতি বাঁচানোয় হাফসেঞ্চুরি রেলের...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)