নিজস্ব প্রতিবেদন: মে মাসের কথা। পশ্চিমবঙ্গ তখন পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সরগরম। শাসক-বিরোধী দুই পক্ষই ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছে। একদিকে তৃণমূলের উন্নয়নের স্লোগান, আর অন্যদিকে বিরোধীদের ভোট লুঠের অভিযোগ। ব্যালট যুদ্ধে বলি হয়েছে নিষ্পাপ প্রাণ। শাসক-বিরোধী দুই দলের কর্মীরা তো বটেই, গুলি-বন্দুকের লড়াই আঘাত হেনেছে সাধারণ পরিবারেও। এমন অবস্থায় রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে অনেককেই আওয়াজ তুলতে দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- এক্সক্লুসিভ: এলপিজি আঁচ থেকে বাঁচতে তৃণমূল-দিলীপ সখ্যতা?


বীরভূমের বেলাগাম সন্ত্রাস ও অরাজকতার পরিস্থিতি-কে তুলে ধরে সে সময় একটি কবিতা লিখেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। ‘মুক্ত গণতন্ত্র’ নামের ওই কবিতার এক পঙ্কতিতে কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, ‘যথার্থ এই বীরভূমি-/ উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে/ পেয়েছি শেষ তীরভূমি।/ দেখ্ খুলে তোর তিন নয়ন/ রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে/ দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’। কবির এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে পাল্টা মাইক ধরেছিলেন অনুব্রতও। শঙ্খ ঘোষকে আক্রমণ করতে গিয়ে বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি এমনও বলেন, “এ কোন নতুন কবি উঠে এসেছেন, যে আমার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন।” এখানেই থামেননি তিনি, জ্ঞানপীঠ শঙ্খ ঘোষকে বিঁধতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল আরও বলেন, “শঙ্খ একটা ভাল জিনিস, সব পবিত্র কাজে লাগে। শঙ্খ ভুল করলে দেবতার অসম্মান হয়। সেই কারণেই ওঁর নাম শঙ্খ রাখা উচিত হয়নি”। অনুব্রত মণ্ডলের এই বক্তব্যের পর রাজ্যের নাগরিক সমাজ-সহ সাংস্কৃতিক মহলের একাংশ তাঁর সমালোচনা করলেও পাশে দাঁড়ান খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সে কারণেই নিজের বক্তব্যের কারণে ক্ষমা চাওয়া তো দূর, কবি শঙ্খ ঘোষ নিয়ে কট্টর অবস্থানেই অনঢ় থাকেন অনুব্রত।


আরও পড়ুন- 'অনুব্রত মণ্ডলকে সরাতে হবে', ৫০ লাখের সুপারি বিজেপির!


শুক্রবার Zee ২৪ ঘণ্টার ফেসঅফ অনুষ্ঠানেও সেই একই ধারা অব্যাহত রাখলেন অনুব্রত মণ্ডল। কবি শঙ্খ ঘোষ নিয়ে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন তা ভুল নয়। বরং শঙ্খ ঘোষই ভুল করেছিলেন, আর সেটা সংশোধন করে দিয়েছেন তিনি, ফেসঅফ অনুষ্ঠানে এসে এই কথাই বলে গেলেন অনুব্রত মণ্ডল।


আরও পড়ুন- বাবা, তুমি এমন কথা কেন বললে? অনুব্রতের বিতর্কিত মন্তব্যে 'শাসন' মেয়ের


তাঁর কথায় এত বিতর্ক হয় কেন? এডিটর অনির্বাণ চৌধুরির এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই শঙ্খ ঘোষের প্রসঙ্গ আসে। এবং তিনি বলেন, “আমি শঙ্খ বাবুকে শ্রদ্ধা করি। উঁনি কবি মানুষ। ভালবাসি। উঁনি ভুল করেছেন, আমি সংশোধন করে দিয়েছি”। উল্টে তাঁর প্রশ্ন, বিজেপি নেতাদের বক্তব্য নিয়ে কেন কোনও লেখা শঙ্খ ঘোষ লিখছেন না? এই অনুষ্ঠানে তৃণমূলের ডাকাবুকো নেতাকে বলতে শোনা যায়, “অনুব্রত খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে উন্নয়ন, আর দিলীপ বাবু যখন বললেন, একশো দেড়শো লোক শ্মশানে যাবে, তখন কি কলমটা বন্ধ হয়ে গেল? উঁনি ভুলে গিয়েছেন, আমি মনে করিয়ে দিয়েছে। উঁনি লিখতে ভুলে গিয়েছেন, আমি বুঝিয়ে দিয়েছে। যদি কলমের কালি শেষ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে সিস বদলে নিতে হবে”।