শুভঙ্কর চক্রবর্তী: বয়স ছাব্বিশ। সেখ মহম্মদ আবু শাহিদ। সবাই ডাকে তাঁকে সাহিদ নামে। বাড়ি হুগলীর আরামবাগে। পেশা সূত্রে সাহিদ একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং ইলাস্ট্রেটর। গত পাঁচ বছর ধরে মুম্বইয়ের এক ডিজিট্যাল মিডিয়ায় কর্মরত। বলিউড ছবির প্রোমোশনের কাজ, অ্যানিমেশন, মোশন ডিজাইনিং এবং গ্রাফিক্সের বিভিন্ন কাজ করে চলেছেন  শাহিদ। চেনা পরিসরের বাইরে তাঁকে লোকজন খুব একটা চিনত না। চেনবার কথাও নয়। কারণ দর্শক সিনেমাহলে বসে সিনেমাটাই দেখে, সিনেমা শেষে কালো স্ক্রিনে এন্ড ক্রেডিটসের তোয়াক্কা করে না, এগজিট গেট দিয়ে বেরিয়ে যায়। ক্যামেরার ওপারে থাকা কলাকুশলীদের নিয়ে তাই আলাদা কোনও উন্মাদনা আজও জন্মায়নি দর্শকদের মনে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 


তবে, এখন শাহিদকে মানুষ চিনতে শুরু করেছে। হুহু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ছে তাঁর ফলোয়ার্স। দিন কয়েক আগে ছিল মাত্র ২০০০, এখন তা লাফে-লাফে বেড়ে ২৯০০০! কিন্তু এর কারণ কী? সৌজন্যে সিন্থোগ্রাফি (SYNTHOGRAPHY)! আজকাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে স্থিরচিত্র। ঠিক যেমন ফোটোগ্রাফি, এমন সব ছবিকে বলা হয় সিন্থোগ্রাফি (SYNTHOGRAPHY)। সহজে বলা যাক, ধরুন কিছু শব্দ, ‘রাগী’, ‘হাতে বন্দুক’, ‘মহাভারত’ এবং ‘ভীম’ লিখলেন একটি নির্দিষ্ট এ-আই সফ্টওয়্যারে আর সঙ্গে সঙ্গে আপনি দেখতে পেলেন একেবারে মহাভারতের ভীমের মতো এক চরিত্রকে, তার হাতে বন্দুক, আর চোখ থেকে রাগ ঝরে পড়ছে। শুধু টাইপ করেই তৈরি হচ্ছে একটি স্থিরচিত্র। হাতে আঁকার কোনও ব্যাপারস্যাপার নেই। তবে এতে একটি ক্যাচও আছে। আপনাকে হতে হবে ভীষণ স্পেসিফিক, শব্দ যা ছবিটিকে তৈরি করতে সাহায্য করবে, সেগুলো যত নিঁখুতভাবে চরিত্রটির বর্ণণা দিতে পারবে, তত জীবন্ত হয়ে উঠবে ছবি। অন্যথায় যে ছবি জেনারেট হবে তা একেবারে র‌্যান্ডম। ’ভীম’ মহাভারতের না হয়ে, হতে পারে স্পার্টাকাসের! তাই, মহাভারতের ভীম তৈরি করতে হলে এ-আইকে বোঝাতে হবে, ‘মহাভারত’-ই, ভাইকিংস বা অন্য কিছু নয়।


আরও পড়ুন:  Dev | Mithun Chakraborty: ‘কাউকে ছোট করে প্রজাপতিকে বড় বানাতে চাই না’, বিতর্কের জবাব দিলেন দেব


এই সিন্থোগ্রাফি নিয়ে একের পর এক কাজ করে, তা পোস্ট করছিলেন শাহিদ। ‘‘আমি প্রথমে ভারতীয় সুপারহিরো নিয়ে একটি সিরিজ করি, তখন বহু মানুষের বাহবা পেয়েছিলাম। কিন্তু যখন বাঙালি ভূতের সিরিজ করলাম, ঝড়ের মতো শেয়ার শুরু হল। ৪২,৫০০টা শেয়ার, ৪ মিলিয়ন ভিউজ!’’ বললেন শাহিদ। কিন্তু এই যে এত চটজলদি ছবি তৈরি করে ফেলছে একটা সফ্টওয়্যার, তাতে যাঁরা হাতে আঁকেন, বা শিল্পীদের আঁকা কাজগুলোয় তো কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে? ‘‘এটা তো সেই কম্পিউটার এলে কর্মী ছাঁটাই হবে টাইপের হয়ে গেল, নতুন কোনও কিছু ঘটলে তা মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে, কিন্তু মানুষ তার পরে ধাতস্থ হয়ে ওঠে, এআইয়ের ক্ষেত্রেও তা-ই হবে। আর একটা কথা এটা এমন নয়, যে শুধু এ-আই সফ্টওয়্যারে গোটাটা হয়ে যাচ্ছে, নিজের ক্রিয়েটিভিটি ব্যবহার করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে ফোটোশপ কাজে আসতে পারে।’’ বললেন শাহিদ।


আরও পড়ুন: Mithun Chakraborty-Dev: ‘দেবকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিল’, প্রজাপতির সেলিব্রেশনে বিতর্ক উসকে দিলেন মিঠুন



বর্তমানে এ আই-এর ব্যবহারে মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়েছে। কোনও ভিডিয়োতে ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েসওভার জন্য গোটা স্ক্রিপ্ট তৈরি করছে সফ্টওয়্যার। অঙ্কের সমাধান কিংবা ছবি-ভিডিয়ো সম্পাদনা সবেতেই এ-আইএর ব্যবহার হচ্ছে। ‘সিন্থোগ্রাফি’র মাধ্যমে এই ছবি তৈরির বিষয়টাও আরেক দিক। শাহিদ ‘মিডজার্নি’ নামে এক সিন্থোগ্রাফি সফ্টওয়্যারে কাজ করেন। এই সফ্টওয়্যারের ব্যবহারে প্রথমে ২৫টি ছবি তৈরিতে কোনও টাকাপয়সা ব্যয় করতে হবে না। কিন্তু পরেরগুলো তৈরিতে অর্থ ব্যয় করতেই হবে শিল্পীদের, জানান শাহিদ। তাঁর কথায় ‘‘আর্ট মানেই মানুষ ভেবে ফেলে, সবই বিনামূল্যে হবে! এই ধারণায় বদল আনা দরকার’’।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)