Dilip Ghosh: `অযোধ্যার লোক রামকে ছাড়েনি, সীতাকে বনবাসে পাঠিয়েছে! সেখানে মোদী কে? যোগী কে?` বিস্ফোরক দিলীপ...
Dilip Ghosh: পার্টি চলতে থাকে। লড়াই চলতে থাকে। নেতা পাল্টে যায়। এটা ঠিক, আমরা ২০২১ পর্যন্ত এগিয়েছি। বহু কর্মী শহিদ হয়েছেন, আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা ১৮ সাংসদ এবং ৭৭ বিধায়ক পেয়েছিলাম। ওখানেই আমাদের গ্রোথ আটকে গিয়েছে। ভোটের শতাংশ একই আছে। আর গ্রোথ হয়নি।
অয়ন ঘোষাল: আজ, বুধবার সকালে ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াকে যথারীতি নানা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করলেন লোকসভা ভোটে সদ্যপরাজিত দিলীপ ঘোষ। তাঁকে নানা প্রশ্ন করা হয়।
দিলীপের জমানায় ১৮, শুভেন্দু-সুকান্তর জমানায় ১২
পার্টি চলতে থাকে। লড়াই চলতে থাকে। নেতা পাল্টে যায়। এটা ঠিক, আমরা ২০২১ পর্যন্ত এগিয়েছি। বহু কর্মী শহিদ হয়েছেন, আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা ১৮ সাংসদ এবং ৭৭ বিধায়ক পেয়েছিলাম। ওখানেই আমাদের গ্রোথ আটকে গিয়েছে। ভোটের শতাংশ একই আছে। আর গ্রোথ হয়নি। আমরা গত ৩ বছরে এগোতে পারিনি। ভাবতে হবে। এখানে আমরা যে গতিতে এগোচ্ছিলাম সেটা সারা দেশে আলোচনার বিষয় ছিল। সবাই অনেক আশা করেছিলাম। কিন্তু সব কর্মীরা নামেননি। গতি রুদ্ধ হয়ে গেলে কর্মীরা হতাশ হয়ে যাবেন।
পদ থেকে আপনাকে অপসারণ এবং আপনার আসন চেঞ্জ
অসম্ভব কিছু না। সব সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ে। বাংলার মানুষ বলবেন, এইগুলি ঠিক হয়েছে, না, ভুল হয়েছে। আমাকে দল যখন যা বলেছে আমি নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি। পুরো ইমানদারি দিয়ে করেছি। ফাঁক রাখিনি। এবার বর্ধমানে হেরে যাওয়া কঠিন সিট ছিল। যাঁরা সেখানে সেদিন ছিলেন তাঁরাও মেনেছেন, একটা জায়গায় অন্তত লড়াই হয়েছে। দলের পলিসির উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। যাঁরা আমাকে ওখানে পাঠিয়েছেন, তাঁরা ভাববেন।
আপনাকে আন্দামানে সংগঠনের কাজে পাঠানো হল মাঝে
কালাপানি কাকে বলে আমি জানি। চক্রান্ত এবং কাঠিবাজি রাজনীতির অঙ্গ। আমি ব্যাপারটা সেভাবেই নিয়েছি। তার পরেও যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। কিন্তু সফলতা আসেনি। রাজনীতিতে সবাই কাঠি নিয়ে ঘুরতে থাকে।
ধরাশায়ী বিজেপি
আমি যেটুকু রাজনীতি বুঝি, দেশে বহুবার এরকম উত্থান-পতন হয়েছে। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর বিজেপি দুটো সিট পেয়েছিল। অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো লোককে খারাপ ভাবে হারতে হয়েছিল। বাজপেয়ী সরকার চলে যাওয়ার আগে মমতার মাত্র ৮টা সিট ছিল। উনি বাড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আমার কর্মী যাঁরা, তাঁদের এই উত্থান-পতনকে সঙ্গী করেই এগোতে হবে। ব্যক্তিগত রেষারেষির এবং ভুল পলিসির জন্য এইভাবে হাজার হাজার কর্মীর আত্মত্যাগ বিফলে চলে গেলে পরবর্তী কালে দলের কাজে তাঁদের লাগানো মুশকিল হয়ে যাবে। মানুষের পার্টির উপর আস্থা চলে যাবে।
কর্মীদের মনোবলের কী অবস্থা?
নেগেটিভ রেজাল্ট হলে মন খারাপ হয়। ২০২১-এর ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসের পরে অনেক কর্মী বসে গিয়েছিলেন। কিন্তু পার্টির কথা ভেবে আবার নির্বাচনের আগে ফিরে এসেছিলেন। তাঁরা কাল থেকে অনেকে ঘরছাড়া। কারণ তাঁরা আগের অভিজ্ঞতা থেকে ভয় পাচ্ছেন। আমাকে দেখে অনেকে বেরিয়েছিলেন। যদি আবার সেরকম পরিস্থিতি হয়, তাহলে আগামী দিনে পার্টি আরও ৫ বছর পিছিয়ে যাবে। পার্টির এবার ভাবা উচিত। যে কর্মীরা পার্টির জন্য বেরোয় তাঁরা যেন তাদের সংকটে পার্টিকে পাশে পায়। এটাও পার্টিকে দেখতে হবে।
ফৈজাবাদে পার্টির হার
রামমন্দির আন্দোলন যখন প্রথম শুরু হয় ওখানে তখন সিপিআই জিতত। তারপর বিনয় কাটিহারকে ওখানে নিয়ে এসে জেতানো হয়। রামমন্দির নিয়ে এত আন্দোলন এবং মন্দির বানিয়ে দেওয়া, তার পরেও কেন হেরেছি? কারণটা পৌরাণিক। অযোধ্যার লোক রামকে ছাড়েনি। সীতাকে বনবাসে পাঠিয়েছে। মোদী কে? যোগী কে?
ইন্ডিয়া জোটের সক্রিয়তা
নাইডু এবং নীতীশবাবুর মতো পাল্টিরাম যাঁরা আছেন, তাঁদের উপর ভরসা করা মানেই বেইমানি। বারবার ঠকতে হয়। এঁরা বিজেপির সাপোর্ট নিয়ে জিতে আসেন। তারপর বিজেপি ছেড়ে অন্যের সঙ্গে হাত মেলান। এটা দল দেখবে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় কেউ বিশ্বাস করে না।
ফ্লপ সন্দেশখালি ইস্যু
আন্দোলনটা রাজনৈতিক ছিল না। সাধারণ মানুষের আন্দোলন ছিল। পরে এটাকে বিজেপি টেক-আপ করেছে। আমরা তাঁদের ন্যায় দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কালও অত্যাচার হয়েছে। এরপর ওই মহিলারা ওখানে আর থাকতে পারবেন কি না জানি না। এই আন্দোলন সারা দেশে নজির গড়েছিল। ওটা আমাদের পুরনো গড়। ঘোরতর তৃণমূল জমানাতেও আমরা ওখানে ভালো ভোট পেতাম। কিন্তু আরও ভালো রেজাল্ট হবে ভেবেছিলাম। হয়নি।