নিজস্ব প্রতিবেদন: আমাদের মতো গরিবের পেঁয়াজ সংরক্ষণ করার মতো জায়গা থাকে না কি? গত বছর তো ১০০ টাকা বস্তা পেঁয়াজ বেচেছি। ভাল পেঁয়াজও পচা বলে সস্তায় নিয়ে চলে গেল। ভাবলেশহীন মুখে বলেই চলেছিলেন হুগলির বলাগড়ের পেঁয়াজ চাষি বিশ্বনাথ হালদার। পেঁয়াজের দাম বাড়ায় খুশি নন তিনি। কারণ বিলক্ষণ জানেন, ফসল উঠতে শুরু করলেই পড়ে যাবে দর। আবার মহাজনের ঋণ শোধ করতে নাভিশ্বাস উঠবে তাঁর।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গত মরশুমে সাকুল্যে ২ টাকা কেজি দরে হুগলির বলাগড়ের চাষিরা। ৪০ কিলোগ্রামের এক বস্তা বিক্রি হয়েছিল ৯০ - ১০০ টাকায়। সেই পেঁয়াজ কিলোপ্রতি ১৫০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে হুগলির বলাগড়ের চাষিদের। গোটা পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, পড়শি রাজ্যগুলি এমনকী পড়শি বাংলাদেশেও জনপ্রিয় বলাগড়ের সুখসাগর পেঁয়াজ। ফসল ওঠার মরশুমে পেঁয়াজের দর নেই। সেই সংরক্ষণের ব্যবস্থা। তাই ভাল নেই বলাগড়ের পেঁয়াজ চাষিরা। 


জানুয়ারিতেই ব্রিগেডে সমাবেশ করবে AIMIM, আসছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি


রাজ্যে পেঁয়াজ চাষে নামকরা হুগলির বলাগড় ব্লক। ব্লকের প্রায় ৩,৫০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। বিখ্যাত বলাগড়ের সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজ। এমনকী এখান থেকে পেঁয়াজের বীজ কিনে নিয়ে যান ভিন রাজ্যের চাষিরা। বীজ রফতানি হয় বাংলাদেশেও। বলতে গেলে পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজের রাজধানী বলাগড়। কিন্তু চাষির মুখে হাসি নেই। কারণ তাঁরা জানেন, ফসল ওঠা শুরু হলেই পড়ে যাবে দর। 


গত বছর বরো মরশুমের শেষে বৃষ্টিতে পেঁয়াজ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। মাঠেই পচে গিয়েছিল প্রচুর পেঁয়াজ। এক হেক্টর জমিতে গড়ে ফলে ২৩ টন পেঁয়াজ। তেমন ফলন মেলেনি। তার ওপর পেঁয়াজের মান খারাপ বলে দর দেননি ক্রেতারা। ফলে এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯,০০০ - ১২,০০০ টাকার। যদিও বিঘায় চাষের খরচ প্রায় ২০,০০০ টাকা। 


গত বছর প্রকৃতির কোপ পড়েছিল মরশুমের শুরুতে। আর এবার শুরুতেই সব ঘেঁটে দিয়েছে বুলবুল। ঘূর্ণিঝড়ের বৃষ্টিতে মাঠে জল জমায় ধান কাটতে প্রায় ১ ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছে চাষিদের। ফলে পেঁয়াজ চাষ শুরু করতেও দেরি হয়েছে। ফলনে যার প্রভাব পড়বে বলে আতঙ্কিত চাষিরা। 


হুগলি জেলার উদ্যান পালন দফতরের তরফে চাষিদের পেঁয়াজ সংরক্ষণে উৎসাহিত করা হয়। জেলার উদ্যান পালন দফতরের ডেপুটি ডাইরেক্টর মৌটুসি মিত্র ধর বলেন, 'আমরা চাষিদের বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পেঁয়াজ চাষ ও সংরক্ষণে উৎসাহিত করি। এজন্য সরকারি ভর্তুকিরও ব্যবস্থা রয়েছে।' তবে চাষিদের কথায়, সংরক্ষণ করার ঘর তৈরির মতো জমি সবার থাকে না। তাছাড়া ঋণ শোধের তাড়ায় পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হন তাঁরা।