নিজস্ব প্রতিবেদন: ছেদ পড়ল ৪০০ বছরের দীর্ঘ ইতিহাসে। কোভিড-আবহে (COVID-19)এ বার বড়দিনেও (CHRISTMAS) বন্ধ থাকছে ব্যান্ডেল চার্চের দরজা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ব্যান্ডেল চার্চ তীর্থযাত্রীদের কাছে এক বরাবরের আকর্ষণ। খ্রিস্টধর্মী বা খ্রিস্টভক্তদের (CHRISTIANS) কাছে এই চার্চের গুরুত্ব প্রবল। কিন্তু এ বার ক্রিস্টমাসে সকলকেই হতাশ হতে হবে। কেননা, কোভিড-১৯ সঙ্কটের কারণে বন্ধ থাকবে চার্চ। ১৫৯৯ সালে স্থাপনের পর যা কখনও ঘটেনি। দীর্ঘ ৪২২ বছর ধরে হুগলি নদীর (HOOGHLY RIVER) পশ্চিমপারে ব্যান্ডেল চার্চ এক অন্যরকম ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করে আসছে। শুধু হুগলি জেলা নয়, শুধু পশ্চিমবঙ্গও নয়, রাজ্য ছাড়িয়ে গোটা দেশেই স্বীকৃত ব্যান্ডেলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব (HISTORICAL VALUE)। 


প্রত্যেক বছরই বহু পর্যটক (TOURISTS) ব্যান্ডেল চার্চে আসেন। প্রতি বছর শীত পড়তেই চার্চমুখী হওয়া শুরু করেন দূরদূরান্তের মানুষ। আর ডিসেম্বর পড়তেই ভিড় বাড়তে থাকে। আর ২৫ ডিসেম্বর তো এখন আর শুধু খ্রিস্টপ্রেমী মানুষের দিন নয়, এ দিনটি এখন সব ধর্মের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের দিন, সার্বিক উৎসবের দিন। হুগলি জেলায়, বিশেষ করে ব্যান্ডেল চার্চে বড়দিন উপলক্ষে হাজার-হাজার মানুষের সমাগম হয়।


তবে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই ২৫ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি ব্যান্ডেল চার্চের মূল ভবনের গেট বন্ধ রাখা হচ্ছিল। যদিও সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে চার্চের সুদৃশ্য মাঠে ঢোকার অনুমতি মিলত। 


কিন্তু এ বারে কোভিড-আবহে সেটাও হবে না। কারণ, কোভিড-আবহে ব্যান্ডেল চার্চের দরজা এখনও খোলেনি কর্তৃপক্ষ। এ বছর তা খোলার কোনও রকম আশাও নেই বলে জানিয়ে দিলেন চার্চের ফাদার 'ফাদার ফ্রান্সিস'। পাশাপাশি ২৪ ডিসেম্বর রাত ১২টায় বড়দিনের ঐতিহ্যময় প্রার্থনাও এবারে বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। প্রার্থনা হবে পরের দিন, অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর সকাল ৯টায়। যে প্রার্থনায় ৫০ জন করে চার বারে মোট ২০০জন অংশ নেবেন। সেই প্রার্থনায় ব্যান্ডেল চার্চের সদস্যরাই অংশগ্রহণ করতে পারবেন। 


ALSO READ: Big Breaking: বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন Suvendu Adhikari, শনিবারই BJP-তে যোগদান!


তবে অন্যদের জন্য থাকছে ভার্চুয়াল প্রার্থনার ব্যবস্থা। ব্যান্ডেল চার্চের ভার্চুয়াল প্রার্থনা অবশ্য লকডাউনের পর থেকে প্রতি রবিবারই করা হয়েছে। ফাদার ফ্রান্সিস বলেন, 'এবারে বড়দিনে মাদার মেরি ও যিশুর সামনে সবার আগে বিশ্বে কোভিডে মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। পাশাপাশি, প্রভুর কাছে কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরোগ্য কামনা ও অতিমারী দূরীকরণের আর্জিও জানানো হবে।


চার্চ বন্ধ থাকায় এখানকার ছোট-বড় দোকানদাররাও সমস্যায় পড়েছেন। দোকানগুলি লকডাউনে পুরোপরি বন্ধ ছিল। কেউ সব্জি কেউ মাছ বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। আনলক-পর্ব চালু হওয়ায় অনেকে আশার আলো দেখেছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বিশেষ করে বড়দিনের কথা ভেবে মনে মনে একটু স্বস্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু এই ঘোষণার পরে তাঁদের মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। কেননা, দোকান খুললেও পর্যটকরা আসবেন না। বা খুব কম আসবেন। ইতিমধ্যেই অনেকে এসে চার্চ বন্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছেন। ফলে আনলক-পর্বের প্রথম থেকেই তাঁদের বিক্রিবাটা তলানিতে। 


একই অবস্থা এখানকার মাঝিদেরও। ব্যান্ডেল চার্চ দেখে বহু দর্শনার্থী গঙ্গাবক্ষে নৌকাযোগে হুগলির ইমামবাড়ায় যান। চার্চ বন্ধ থাকায় নৌকা করে ইমামবাড়া যাওয়ার আগ্রহ হারিয়েছেন সাধারণ মানুষ। শীত পড়তে যে সমস্ত দর্শনার্থী ব্যান্ডেল চার্চে আসছেন তাঁরাও মন খারাপ করে বাড়ি ফিরছেন।