নিজস্ব প্রতিবেদন:  ট্রেনে , বাসে অনবরত শোনা যায় হকারদের  হাঁকডাক বসিরহাটের গামছা । আর গুনগত মানের দিক দিয়ে যেকোন বসিরহাটের গামছার চাহিদা বেশি । বসিরহাটের সেই শিল্প আজ অস্তাচলে । বসিরহাটের সীমান্তবর্তী পানিতর গ্রাম । প্রতিদিন এখানে  খুঁটখাট শব্দ জানান দেয় দেশব্যাপী এই গ্রামের গুরুত্ব কোথায় ।  অতীতে কোনদিন  এই শব্দ থেমে থাকে নি ।

COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কিন্তু আজ তিনমাসের উপর সেই খুঁটখাট শব্দ থেমে গেছে । থমকে গেছে ব্যস্ততা । বন্ধ হয়ে গেছে দেশব্যাপী বিখ্যাত বসিরহাটের গামছা উৎপাদনের কারখানা । এখানে তাঁত যন্ত্রে গামছা বোনা হয় । থমকে আছে সেই তাঁত মেশিন । করোনা আতঙ্কে প্রথমদিকে হামাগুড়ি দেওয়া শুরু করে এই শিল্প । কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ যত বাড়তে থাকে আস্তে আস্তে মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করে বসিরহাটের গামছা শিল্প । কিন্তু সাড়ে তিনমাসের লকডাউনে পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেছে গামছা শিল্প ।

করোনার পাশাপাশি অনাহারের আতঙ্কে দিন কাটছে বসিরহাটের ইটিন্ডা , সোলাদানা ফুলবাড়ী,  বড় বাঁকড়া , কাটিয়াহাটে পিঁফা গ্রাম সহ পানিতর গ্রামের  কয়েক হাজার মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। বসিরহাটের এই  গ্রামগুলির  তাঁত শিল্পীদের তৈরি গামছার দেশ জোড়া নাম । এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ি বারান্দায় বসানো আছে তাঁত এবং চরকা। কেউ কেউ স্বাধীনভাবে ব্যবসা করেন । তবে বেশিরভাগই মহাজনের কাছ থেকে সুতো  নিয়ে গামছা তৈরি করে। মোটা ভাত কাপড়ে এখানকার কারিগরদের দিন ভালোই কাটত । কিন্তু দীর্ঘদিন লকডাউনে হাজার হাজার গামছা কারিগর এবং ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যত ক্রমশ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ।

আরও পড়ুন: অবসাদ না অভাব? রিজেন্ট পার্কে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা গোটা পরিবারের

গামছা তৈরির কারিগর আব্দুল রউপ মোল্লা এবং আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান , " এখন লকডাউন  কিছু শিথিল হলেও মহাজনরা গামছা তৈরির বরাত না দেওয়াতে তাঁত চলছে না গ্রামে। যেটুকু সম্বল ছিল তাও  শেষ হয়ে এসেছে । আমাদের অন্য কোন করার উপায় নেই । দু তিন দশক ধরে গামছা বোনার কাজ করি । অন্য কোন কাজ করতে পারব না । আরও  লকডাউন বাড়ল । এবার অনাহারে পরিবার নিয়ে  মরে যাব । " পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে সেই আশায় দিন গুনছেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক।