নিজস্ব প্রতিবেদন: বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষারত্ন সম্মানপ্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সমাজ গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সঙ্গে শিক্ষকদের স্বার্থে রাজ্য সরকারের একাধিক পদক্ষেপের দিকগুলি তুলে ধরেন তিনি। শুধু তাই নয়, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে কেন্দ্র সরকারের নীতিরও তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এদিন ভাষণের শুরুতে তিনি বলেন, "স্কুলের সুনাম বৃদ্ধি করেন শিক্ষকরা।" শিক্ষক দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, "দুটি জিনিস মানুষ কখনও ভোলে না। মা-বাবা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে কেউ ভোলে না।" সরকারের ঋণের বোঝার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, "টাকা দিয়ে শিক্ষকের ঋণ শোধ করা যায় না। গত আট বছরে কাজ করতে গিয়ে আমার অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই বছরেও আমাদের ৫৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ শোধ করতে হয়েছে।" সরকারের অর্থনীতির বিষয়ে এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আয়ের থেকে বেশি দেনা শোধ করতেই চলে যায়। সরকারের যদি আয় না থাকে তাহলে কোথা থেকে কন্যাশ্রী, সাইকেল, দুটাকা কিলো চাল, স্বাস্থ্যসাথী, এত সংস্কৃতি, এত প্রতিষ্ঠান, এত পরিকাঠামো করবে?"


তবে এর মধ্যেও সরকারের উন্নয়নের প্রচেষ্টার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী। "আট বছরেও আমি যা করে দেখিয়েছি। আগামী আশি বছরেও কেউ করতে পারবে না আমি চ্যালেঞ্জ করছি।" তিনি বলেন, "আমি সমালোচনা স্বাগত জানাই।" সমালোচকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "ভেবে দেখুন, বাংলা কতটা এগিয়ে গিয়েছে। আমি যখন দিল্লিতে পার্লামেন্ট করতে যেতাম, তখন শুনতে হত বাংলা তো ছাগলের তৃতীয় ছানা! সবেতেই বাংলার স্থান ছিল ২২-২৪তম স্থানে। অনেক সাবজেক্টে বাংলা এখন এক নম্বরে। আজ বাংলা মডেল হয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে। শিক্ষাসমাজের গর্ব হওয়া উচিত।"


আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের স্বীকৃতির দিকটি নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, "আমাদের কন্যাশ্রী ও সবুজ সাথী রাষ্ট্রসংঘেও প্রথম হয়েছে। মেয়েদের পড়াশোনার মাধ্যমে এগিয়ে আসার জন্য এগুলো করা।"


আরও পড়ুন: বনগাঁ পুরসভার আস্থা ভোটে ১৪-০তে জয়ী তৃণমূল, ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিজেপি


এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমাদের টাকা নেই। তবু, একটা সংসারে যখন মায়ের কাছে টাকা থাকে না, হাঁড়ির টান ধরে মা লক্ষীর ভাঁড়টা ভাঙে। ২০০ কোটি দেওয়া আছে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপে। সেখান থেকেই ছাত্রছাত্রীদের গবেষণায় ২০ কোটি টাকা দিতে বললাম।"


কেন্দ্রকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "আমাদের মুশকিল হল, কেন্দ্র নতুন প্রকল্প চালু করে দুই বছর পর তা বন্ধ করে দেয়। প্রথমে কেন্দ্র-রাজ্য সমান টাকা দিয়ে প্রকল্পগুলি শুরু হয়। তার পর এক সময়ে কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে তখন রাজ্যের ঘাড়েই পুরো প্রকল্পের খরচ এসে পড়ে। এ দিকে তখনও সেই প্রকল্প নিয়ে নিজেদের প্রচার করে কেন্দ্র।" 


শিক্ষকদের পেনশনের বিষয়ে এদিন তিনি বলেন, "সব রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র পেনশন তুলে দিয়েছে। কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকার পেনশন ও গ্রাচুইটি দেয়। এটা না দিলে এক লাফে ১০,০০০ কোটি টাকা কমে যাবে। কিন্তু শিক্ষকদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা সেটা করিনি।"