প্রসেনজিৎ মালাকার: অমিত শাহর বীরভূম সফরের চার দিনের মধ্যে দল ছাড়লেন বিজেপির এক গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ- প্রধান। "নামমাত্র পার্টিতে থাকা। তার থেকে না থাকা অনেক ভালো। তাই বিজেপি থেকে বিদায় নিলাম।" দলের প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট করে দল ছাড়লেন বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। দলত্যাগী ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের নাম সমীর লোহার। তিনি বীরভুমের ময়ুরেশ্বর বিধানসভার মল্লারপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মঙ্গলবার বিকেলে তিনি তাঁর ফেসবুক ওয়ালে দলের নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট করেন। অনুব্রতহীন যে বীরভূমকে পাখির চোখ করে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে আসরে নেমেছে বিজেপির হাইকম্যান্ড, সেই জেলায় বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের দল ছাড়ার বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। সমীর লোহার ২০১১ সাল থেকে বিজেপি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১২ বছর বিজেপিতে ছিলেন। কিন্তু ১২ বছর বিজেপিতে থাকলেও দলে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হতো না। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বিষয়টি বারবার জানালেও তারা কোনও সুরাহা করেননি বলেও দাবি তাঁর। আর সেই কারণেই দলের নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে দল ছাড়লেন তিনি।



সমীর লোহার


ওদিকে কেষ্টহীন বীরভূমে ফের তৃণমূলেও ভাঙন। সামনে পঞ্চায়েত ভোট, আর তার আগে অনুব্রতর গড়ে আবার তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন। কয়েকদিন আগে বোলপুরে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন ২১ বছরের তৃণমূল নেতা ও অঞ্চল সভাপতি নুরুল হুদা ও তাঁর সমর্থকরা। তারপর, এদিন বীরভূমের লাভপুরের হাতিয়া অঞ্চলের ৫টি গ্রামের প্রায় ১০০ টিরও বেশি পরিবার তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি ছেড়ে সিপিআইএম-এ যোগদান করেন। লাভপুরের তরুলিয়া হাটে এই যোগদান কর্মসূচি হয়। এদিকে যখন তৃণমূল ও বিজেপি, দু-পক্ষই বীরভূমে সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই দুই দলে ভাঙন। অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল ও বিজেপি উভয় পক্ষ-ই। তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগদান করা আব্দুল আলিম বলেন, 'তৃণমূলের দুর্নীতির কারণে আমরা তৃণমূল ছেড়ে সিপিআইএমে যোগদান করলাম। আমরা তৃণমূলের কর্মী ছিলাম। কিন্তু নেতাদের কিছু বলতে গেলে হুমকি দেয়। জেলে ভরার হুমকি দেখায়। তার জন্য আমরা প্রায় একশোর বেশি পরিবার সিপিআইএম-এ যোগদান করলাম।'


প্রসঙ্গত, সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর বীরভূমে বিশেষভাবে নজর দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল থেকে বিরোধীদল সকলেই। যদিও অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হলেও, তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি পদে তিনি-ই বহাল রয়েছেন। তবে বীরভূমকে নিজেই দেখবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর বীরভূম গোষ্ঠী কোন্দল বার বার প্রকাশ পাচ্ছে। গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে ও বীরভূমে তৃণমূল সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে মুখ্যমন্ত্রী কালীঘাটে বৈঠক করেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বীরভূমে এসে দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক ও সভা করেন। তৃণমূলকে সাধারণ মানুষের আরও কাছে পৌঁছে দিতে দিদির সুরক্ষা কবজ প্রকল্প চালু হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বীরভূম তৃণমূলে এখন দল ছাড়ার হিড়িক চলছে যেন। 


পাশাপাশি, বিজেপিও বীরভূমকে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে। কেষ্টহীন বীরভূমে দাঁড়িয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৪ লোকসভা ভোটে বাংলায় ৩৫ আসন বিজয়ের টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন কর্মীদের। গত কয়েক দিনে শুভেন্দু অধিকারী থেকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বীরভূমে সভা করেছেন। গত বুধবারই সুকান্ত মজুমদার বীরভূমের লাভপুরে মিছিল ও পথসভা করেন বিজেপি সংগঠনকে মজবুত করতে। কিন্তু রাঢ়ভূমে বিজেপি সংগঠন মজবুত হওয়ার বদলে এ যেন উলটপুরাণ! দল ছাড়লেন একাংশ কর্নীরা। বিজেপি-র গেরুয়া পতাকা ত্যাগ ছেড়ে সিপিআইএম-এ লাল ঝান্ডার নীচে আশ্রয় নিলেন তাঁরা।


আরও পড়ুন, Aparupa Poddar: 'তুই বাঁচবি তো?' হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে অপরূপাকে হুমকি! জোর চাঞ্চল্য...



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)