WB Panchayat Election 2023: কাজে এল না স্বজন হারানোর আবেগ, বগটুইয়ে ফুটল কোন ফুল?
WB Panchayat Election 2023: এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মিহিলাল সেখের পরিবারের ৩ জন বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হন। এদের মধ্যে ২ জন হন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী এবং তৃতীয়জন হন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচনে হারলেন মিহিলালের পরিবারের ২ সদস্যই
প্রসেনজিত্ মালাকার: বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় মাথা তুলছে বিরোধীরা। ইতিমধ্য়েই ৬ পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে বিজেপি। দুটি আসনে জয়ী হয়েছে বামেরা। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বগটুই হত্যাকাণ্ডে অভিযোগের তির উঠেছিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের দিকে। সেই বগটুইয়েই এবার ফুটল জোড়া ফুল।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতের লড়াইয়ে ছিলেন সাংসদ মিমির ৩ মামী, শেষ হাসি হাসলেন কে?
গত বছর ২১ মার্চ বগটুইয়ে প্রাক্তন পঞ্চায়েত উপ প্রধান ভাদু সেখ খুনের পর বগটুই গ্রামে হামলা চালায় জনতা। ব্যাপক বোমাবাজি, গুলি চালনায় তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা গ্রাম। বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয় ১০ জনকে। সেই ঘটনায় প্রাণ হারান বগটুইয়ের বাসিন্দা মিহিলাল সেখের স্ত্রী, মা, মেয়ে ও বোন। ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। মিহিলাল দাবি করেন, স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন। সেই মিহিলালের পারিবারের সদস্যরা বিজেপিতে যোগদান করেন। বিজেপির টিকিটে মনোনয়ন জমা দেন তাঁর ভাইপো, ভাইপোর স্ত্রী ও অন্য এক আত্মীয়। তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধেই তাঁর পরিবারের লোকজন ভোটে দাঁড়িয়েছে পরিবারের সদ্যসরা। এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মিহিলাল সেখের পরিবারের ৩ জন বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হন। এদের মধ্যে ২ জন হন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী এবং তৃতীয়জন হন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচনে হারলেন মিহিলালের পরিবারের ২ সদস্যই। স্বজন হারানোর ভাবাবেগ কাজে লাগাতে পারলেন না মিহিলাল। তবে বর্ষাল পঞ্চায়েতে মিহিলালের পরিবারের সদস্যারা হারলেও ৮টি আসনে জিতলেন বিজেপি প্রার্থীরাই। অন্যদিকে তৃণমূল পেয়েছে ১১ আসন। সিপিএমের দখলে গিয়েছে ৩ আসন।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ বগটুইটের প্রাক্তন উপপ্রধান ভাদু শেখকে কেউ বা কারা গুলি করে হত্যা করে। সেই ঘটনার পাল্টা হিসেবে বগটুই গ্রামে হামলা চালায় একটি সশস্ত্র দল। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ভাদু শেখের বিরোধী পক্ষের লোকজনের বাড়িঘর। এতে জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। সেই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে মনে করা হয় লালন শেখকে। ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল লালন। গত ৪ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। গোপনসূত্রে সিবিআইয়ের কাছে খবর ছিল ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের একটি গ্রামে লুকিয়ে রয়েছে। সেখান থেকে তাকে তুলে এনে রামপুরহাটের বাইরে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখে সিবিআই। সেখানেই তাকে জেরা করা হচ্ছিল। সেখানেই আজ তার বিবস্ত্র অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
উল্লেখ্য, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজারেরও বেশি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এগিয়ে প্রায় ৩ হাজার আসনে। অন্যদিকে, পঞ্চায়েত সমিতির ৫৮ আসনে জয়ী হয়েছে তৃণণূল কংগ্রেস। ফলে বিরোধীরা বিভিন্ন জায়গায় খাতা খুললেও তা একেবারেই নগন্য।