কোচবিহারে বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দিল না রাজ্য সরকার
`অনুমতি দিক না দিক, রথযাত্রা হবেই।` হুঙ্কার দিলীপ ঘোষের।
নিজস্ব প্রতিবেদন : কোচবিহারের রথযাত্রায় অনুমোদন নয়। হাইকোর্টে জানালেন এজি। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে এদিন রথযাত্রা মামলার শুনানির সময় এজি বলেন, কোচবিহারে রথযাত্রায় অনুমতি দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। কারণ, বিজেপির রথযাত্রায় কোচবিহার পুলিস সুপারের আপত্তি রয়েছে।
এজির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির কী মত, বেলা ১২টার সময় তা শুনবে আদালত। উভয়পক্ষকেই বেলা ১২টার সময় ফের আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এদিকে রাজ্য সরকারের আপত্তিকে কার্যত হেলায় উড়িয়ে দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। হুঙ্কারের সুরে তিনি বললেন, "অনুমতি দিক না দিক, রথযাত্রা হবেই।"
রাজ্যে রথযাত্রা হবে কি হবে না, বুধবার হাইকোর্টে সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি। বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। রথযাত্রার অনুমতি প্রসঙ্গে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। বুধবার ছিল মামলার শুনানি। অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানতে চান, রথযাত্রা সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা উভয়পক্ষ একসঙ্গে বসে সমাধান করতে পারে কি না? বেলা দুপুর ২টোর মধ্যে একথা জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয় এজিকে।
কিন্তু ২টোর সময় ফের আদালত বসলে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীকে এজি জানান, রাজ্য সরকার ও বিজেপি একসঙ্গে বসে রথযাত্রা সংক্রান্ত যাবতীয় ইস্যু সমাধান করার বিষয়ে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত জানানো সম্ভব। এদিকে তার একদিন পর থেকেই রথযাত্রার কর্মসূচি রয়েছে। বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে তখন এজি বলেন, বৃহস্পতিবার-ই রথযাত্রা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একথা শোনার পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এজিকে তাদের সিদ্ধান্ত আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি।
বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর প্রশ্নবাণের সামনে পড়তে হয় এজিকে। "রথযাত্রায় অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রথমে ডিজি তারপর আইজিকে জানানো হয়। তারপরও কেন অনুমতি দেওয়া হয়নি? রথযাত্রা নিয়ে স্বয়ং রাজ্যপালও জিজ্ঞেস করেছেন। তারপরও মনে হয়নি অনুমতি দেওয়া যায়?" এজির কাছে জানতে চান বিচারপতি। উত্তরে এজি বলেন, "ডিজি, আইজি যথাযত কর্তৃপক্ষ নন যে অনুমতি দেবেন। রাজ্যপালের সাংবিধানিক অধিকার নেই যে এবিষয় হস্তক্ষেপ করবেন।"
এজির উত্তর শুনে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। তিরস্কারের সুরে বলেন, "ডিজি, আইজি সেকথা জানাতে পারতেন কোথায় অনুমতি নিতে হবে। দুঃখিত এজি!বিচারপতিরা কোন মাসিহা (দেবদূত) নন, যে প্রতিটা রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কোর্টে করবেন!" দুপক্ষকে বসে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুন, জমি আন্দোলনের স্মৃতিতে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ৪০ ফিট উঁচু মিনার হবে সিঙ্গুরে
কিন্তু, এর বিরোধিতা করেন এজি। বলেন, "আমরা জানি না কত মানুষ আসবেন এখানে? বিজেপির কোন কেন্দ্রীয় নেতা আসবেন? তিনি কী ক্যাটেগরি নিরাপত্তা পান? সব জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে বসতে হবে।" এজির জবাব শুনে বিচারপতি চক্রবর্তী ফের বলেন, এই সব প্রশ্নের উত্তরই উভয়পক্ষ একসঙ্গে বসলেই সম্ভব।