বক্সায় নয়া বিহঙ্গ
উত্সাহিত বন দফতর চাইছে ভবিষ্যতে আরও বড় করে পাখি উতসব করতে ।
মৌপিয়া নন্দী
বাঘের ঘরে শুধু ঘোগের বাসা নয়, পাখিরও যে বাসা হতে পারে তার প্রমাণ বক্সা টাইগার রিজার্ভ। সদ্য সমাপ্ত বক্সা তৃতীয় বার্ড ফেস্টিভ্যালে এমন ৭ টা ফাখির প্রজাতির হদিশ মিলেছে যার এর আগে এই অঞ্চলে কোনও রেকর্ড নেই। এবারের পাখি উত্সবে মোট ২১৪ প্রজাতির পাখি দেখতে পেয়েছেন বার্ড ওয়াচাররা। এমনিতেই বার্ড ওয়াচারদের প্যারাডাইস বলা হয় বক্সাকে। ধনেশ পাখির আঁতুড়ঘর হিসাবে কদর রয়েছে পক্ষীবিশারদদের মধ্যে। এযাবত ৫১৪ রকমের পাখির রেকর্ড ছিল বক্সায়। যার মধ্যে ২২৫ রকম প্রজাতির স্থায়ী ঠিকানা বক্সা। দূরের পরিযায়ী প্রজাতি ২২টি এবং ৩২রকমের স্থানীয় প্রজাতি। কিন্তু সবুজনিধন, জনবসতি বৃদ্ধি, চা বাগান, ডলোমাইটের সমস্যা প্রভাব ফেলছিল এই জঙ্গলের জীববৈচিত্রে। পাখিদের আনাগোনাও কমছিল। ২০১৬ সাল থেকে পাখি উত্সবের ভাবনা আসে বনকর্তাদের মাথায়। ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর ৬-৯ জানুয়ারি বক্সায় পাখি উতসবের আয়োজন করে বন দফতর।
এবছরও ৬-৯ জানুয়ারি পাখি উত্সবে অংশ নেন মোট ৩৭ জন বার্ডওয়াচার। বিশিষ্ট পক্ষীবিশারদ থেকে ওয়াইল্ডলাইফ ফোটোগ্রাফার গাইড এবং বিশেষজ্ঞ হিসাবে অংশ নিয়েছিলেন এই পাখি উত্সবে । মোট পাঁচটি পথ চিহ্নিত করে চলে পাখির খোঁজ। যার মধ্যে ছিল সদ্য সংস্কার করা নারাথুলা বিলও। ভূটান পাহাড়ের পাদদেশে এই প্রাকৃতিক অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদে পরিযায়ীর সংখ্যা কমছিল। এবছর মরশুম শুরুর আগেই এই বিল সংস্কার করে বনদফতর । পাখির সংখ্যা এবার অনেকটাই বেশি। বক্সা টাইগার রিজার্ভের ফিল্ড ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, চূড়ান্ত চেকলিস্ট অনুযায়ী ৭টি নতুন প্রজাতির পাখির খোঁজ পেয়েছেন পাখিসন্ধানীরা ।
ব্লিদস রিড ওয়ার্বলারের খোঁজ মিলেছে রায়মাটাং-এর কাছে। ব্রাউন ব্রেস্টেড ফ্লাইক্যাচার দেখা দিয়েছে রায়ডাকের কাছে যারা বার্ডিং করছিলেন তাদের। লং বিল রেন ব্যাবলার ধরা দিয়েছে বক্সা দুয়ার জয়ন্তীর কাছে। সংকোশ নদীর কাছে লেন্সবন্দি হয়েছে রেড নেপড আইবিস। রায়ডাক, রায়মাটাং দু জায়গাতেই চোখে পড়েছে শর্ট টোড স্নেক ঈগল। রায়মাটাং এর কাছেই দেখা মিলেছে স্লেটি হেডেড প্যারাকিটের। বক্সা দুয়ার জয়ন্তীর কাছে হদিশ মিলেছে আরেক নতুন প্রজাতি হুইসলারস ওয়ার্বলার। উত্সাহিত বন দফতর চাইছে ভবিষ্যতে আরও বড় করে পাখি উতসব করতে ।