Calcutta High Court: ৪৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর হাইকোর্টের নির্দেশে উচ্ছেদ ভাড়াটে!
১৯১২ সালে বিষ্ণুপুরের রূপকথা সিনেমাতলায় প্রায় সাড়ে ১০ কাঠা জমি কিনে তৈরি হয় বাড়ি। ১৯৭৯ সালে ব্যবসায়ী জ্যোতির্ময় গোস্বামী প্রথমে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের জন্য মামলা করেন।
মৃত্যুঞ্জয় দাস: দীর্ঘ ৪৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর, অবশেষে পূর্বপুরুষের স্মৃতি জড়ানো বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হল ভাড়াটিয়াকে। ভাড়া না দেওয়ায় ৪৪বছর আগে আদালতে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের মামলা করেছিলেন কলকাতার এক ব্যবসায়ী। অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিসের উপস্থিতিতে বিষ্ণুপুর শহরের রূপকথা সিনেমাতলায় বাড়ি খালি করা হল। এতবছর পর বাড়ির দখল ফিরে পাওয়ায় খুশি হয়েছেন কলকাতা নিবাসী ওই ব্যবসায়ী জ্যোতির্ময় গোস্বামী। অন্যদিকে এত বছর ধরে দখল করে থাকা ওই বাড়ির বাসিন্দার দাবি, তাঁরা অভিযোগকারীর অন্য শরিকদেরকে নিয়মিত ভাড়া দিয়ে এসেছেন। তার নথি আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁরা এদিন বাড়ি খালি করে দেন।
দখল পাওয়া বাড়ির মালিক জ্যোতির্ময় গোস্বামী বলেন, কর্মসূত্রে আমরা আমরা কলকাতার বাসিন্দা হলেও আমাদের এই পৈত্রিক বাড়িকে ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। ভাড়া না দেওয়ায় ৪৪ বছর আগে মামলা করেছিলাম। তবে আদালতের প্রতি আস্থা ছিল। দেরি হলেও জয় পাওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। ওদিকে ওই বাড়িতে বসবাসকারী অসীম মল্লিক বলেন, এই বাড়িটির একাধিক শরিক রয়েছে। তাঁদেরকে নিয়মিত ভাড়া দিয়ে এসেছি। শুধু তাই নয়। তাঁদের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে। আদালতকে মান্যতা দিয়ে এদিন বাড়ি খালি করে দিয়েছি। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবারও আইনের দ্বারস্থ নেব।
মামলাকারীর আইনজীবি আশিস দে বলেন, আমার মক্কেলের দাদু বাঁকুড়ার জয়পুরের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯১২ সালে তিনি বিষ্ণুপুরের রূপকথা সিনেমাতলায় প্রায় সাড়ে ১০ কাঠা জমি কেনেন। এবং সেখানে বাড়িও তৈরি করেন। পরবর্তীকালে তাঁর ছেলে পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্টটেন্ট জ্যোতিষচন্দ্র গোস্বামী কর্মসূত্রে কলকাতার বসবাস করেন। তখন থেকেই ওই বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাড়াটিয়া ছিলেন। পরবর্তীকালে একটি পরিবার ভাড়া দেননি। তাঁদেরকে উঠে যাওয়ার জন্য বলা হলেও তাঁরা বাড়ি ছাড়েননি। তাই ১৯৭৯ সালে জ্যোতিষচন্দ্র গোস্বামীর ছেলে পেশায় ব্যবসায়ী জ্যোতির্ময় গোস্বামী প্রথমে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদের জন্য মামলা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওই বাড়িতে বসবাসকারী বাসিন্দারা পালটা মামলা করেন। তবে আদালত মালিকের পক্ষেই রায় দেন।
তার বিরুদ্ধে বিবাদীপক্ষ প্রথমে জেলা আদালত এবং পরে হাইকোর্টে যান। এভাবেই ৪৪টা বছর কেটে যায়। কয়েকদিন আগে ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ করে প্রকৃত মালিককে বাড়ির দখল দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশ স্থগিতের জন্য বিবাদীপক্ষ পুনরায় হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। বিচারক তা খারিজ করে দেন। সেই মতো এদিন বিষ্ণুপুর থানার পুলিসের উপস্থিতিতে জ্যোতির্ময়বাবুর হাতে বাড়ির দখল দেওয়া হয়। ওই বাড়িতে বসবাসকারীদের জিনিসপত্র সরানো হয়। তার আগে গোটা জমিটি আমিন দিয়ে মাপজোখ করা হয়।
আরও পড়ুন, Malda Pakchoi Farming: দেশি পদ্ধতিতেই ফলছে বিদেশি শাক! চিনা পালং 'পকচই' চাষে ব্যাপক লাভ...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)