Anubrata Mandal: `পেমেন্ট পাচ্ছে না ২০০ লেবার `, রাইস মিল অ্যাকাউন্ট ডিফ্রিজ করার আর্জি `দরদী` কেষ্টর!
Cattle Smuggling Case Update: এদিন বিচারক অনুব্রত মণ্ডলকে দেখে বলেন, `আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে। অনুব্রত বাবু, কেমন আছেন?` যার জবাবে অনুব্রত মণ্ডল জানান,`শরীর ভালো নেই। সবরকম অসুবিধা হচ্ছে।`
বাসুদেব চট্টোপাধ্য়ায়: পেমেন্ট পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। তাই রাইসমিলের অ্যাকাউন্ট ডিফ্রিজ করার আর্জি কেষ্টর। এদিন তিহার জেল থেকে আসানসোল সিবিআই আদালতে অনুব্রত মণ্ডলের ভার্চুয়াল প্রোডাকশন ছিল। সেই সময়ই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর কাছে অনুব্রত মণ্ডসল আর্জি জানান, '২০০ লেবার পেমেন্ট পাচ্ছে না। রাইসমিলের অ্যাকাউন্ট ডিফ্রিজ করে দিন।'
যার জবাবে বিচারক জানতে চান, কোন রাইস মিল? অনুব্রত মণ্ডল তখন বলেন, ভোলে বোম রাইস মিল। অনুরোধ করেন, রাইস মিলের দুটো অ্যাকাউন্ট যেন খুলে দেওয়া হয়। কারণ, নইলে লেবাররা পেমেন্ট পাচ্ছে না। দুই রাইস মিলে মোট ২০০ জন শ্রমিক আছে। পাশাপাশি, বহু জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। অনুব্রত মণ্ডলের এই আর্জির প্রেক্ষিতে বিচারক তাঁকে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করার পরামর্শ দিলেন। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বলেন,'আপনার মুখের কোথায় তো আমি কোনও অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারি না। আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। আপনার ও সিবিআই, দুপক্ষের কথা শুনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
এর পাশাপাশি, এদিন বিচারক অনুব্রত মণ্ডলকে দেখে বলেন, 'আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে। অনুব্রত বাবু, কেমন আছেন?' যার জবাবে অনুব্রত মণ্ডল জানান,'শরীর ভালো নেই। সবরকম অসুবিধা হচ্ছে।' তখন বিচারক জানতে চান, ডাক্তার দেখছে তো? অনুব্রত মণ্ডল বলেন, 'ডাক্তার দেখাচ্ছি। জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডে পড়ে আছি।' এরপরই এদিন সিবিআই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অর্ডার কপিতে অনুব্রত মণ্ডলের সবরকম চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেন তিহাড়ের জেল সুপারকে। এরপর ফের ৭ জুন কেষ্টর পরবর্তী ভার্চুয়াল প্রোডাকশন।
প্রসঙ্গত, গরুপাচার মামলায় বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছে বাবা-মেয়ে। এর আগের দিন দিল্লি আদালতে অনুব্রত জানান, মেয়ের সঙ্গে আধঘন্টা কথা বলেছেন তিনি। আদালত থেকে বেরনোর পথে কেষ্ট বলেন, 'মেয়ে জামিনের আবেদন করেছে, ঈশ্বর যেন জামিনটা দিয়ে দেয়। মেয়ের সঙ্গে আধ ঘণ্টা কথা হয়েছে। যতক্ষণ সময় পেয়েছি কথা বলেছি।' উল্লেখ্য, শারীরিক অসুস্থতার কারণে দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্টে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজিরার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। কেষ্টর কথায়, 'আমার শরীর খুব খারাপ। তাই ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজিরার আবেদন করেছি। বাইরে ডাক্তার দেখানো নিয়ে কথা চলছে।'
ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডল বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সেখানে কেষ্টর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তারা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, শুধু গোরুপাচারের নয় সরকারি কাজে টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে টাকা নেওয়া থেকে জেলা পরিষদের কাজ থেকেও কমিশন নিতেন অনুব্রত মণ্ডল। কাজের ভিত্তিতে ১ থেকে ৫ শতাংশ হারে কমিশন তুলে দিতেন তিনি। অনুব্রতর বিরুদ্ধে ২০৪ পাতার চার্ডশিট দিয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দাবি, ভুয়ো লোন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা কালো থেকে সাদা করা হয়েছে। এর জন্য অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রির সাহায্য নিয়েছিলেন অনুব্রত।
তদন্তকারী অফিসাররা বলছেন, যদি কোনও ব্যক্তির কাছে কালো টাকা থাকে তাহলে সেই টাকা যদি সাদা করতে চান তার অনেক পন্থার মধ্যে রয়েছে এই অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রি। অনেকে একে হাওয়ালাও বলে থাকেন। এক্ষেত্রে যেটা হয় তা হল যে ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করতে চাইছেন তিনি কাউকে নগদে টাকা দিয়ে দেন। সেই টাকা পেয়ে কোনও ব্যক্তি বা কোম্পানি তাঁদের অ্যাকাউন্টে তা ব্যবসায়িক লেনদেন হিসেবে দেখিয়ে দেন। পরবর্তীতে সেই টাকাটাই ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে দেখানো হয়।