কেন্দ্র টাকা অনুমোদন করতেই আবাস যোজনার সমীক্ষা শুরু রাজ্যে, পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপনে আবেদনকারীর সংখ্যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ জেলা প্রশাসনের। অন্যান্য ব্লকে যেখানে ৩ থেকে ৫ হাজার উপভোক্তার আবেদন জমা পড়েছে। তপনে তা ছিল ৪২ হাজার। যা বাস্তবে প্রায় সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে।
প্রসেনজিৎ সরদার: কেন্দ্রীয় সরকার টাকা অনুমোদন করতেই বিভিন্ন জেলায় আবাসন প্রকল্পে আবেদনকারী উপভোক্তাদের নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপনে আবেদনকারীর সংখ্যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ জেলা প্রশাসনের। অন্যান্য ব্লকে যেখানে ৩ থেকে ৫ হাজার উপভোক্তার আবেদন জমা পড়েছে। তপনে তা ছিল ৪২ হাজার। যা বাস্তবে প্রায় সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। জেলা প্রশাসনের তরফে আসল উপভোক্তা খুঁজে বের করতে জেলার বিভিন্ন ব্লক থেক ১৯১ জন আধিকারিককে তপনে মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁদের জন্য ২৫টি গাড়ি এবং ৫০টি বাইকের ব্যবস্থাও করেছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন, Mamata In Taki: ইছামতীতে সারেং; হাসনাবাদের স্কুলে শিক্ষক, বুধবার অন্য মেজাজে মমতা
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তা নিয়ে সরব হয়েছেন। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ঘোষণা হতে নিজেদের আখের গোছাতে নেমেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকারের দাবি, আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হতেই পারে প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে সমীক্ষা করছে। সমীক্ষার পর যা ফলাফল আসবে সেই অনুযায়ী বাড়ি পাবেন বাসিন্দারা। কিন্তু একটা ব্লক থেকে কী করে এত সংখ্যক আবেদন জমা পরল তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জেলা শাসকের নির্দেশে প্রায় ২০০ জন সরকারি আধিকারিকের একটি টিম তৈরি করে শুরু হয়েছে সমীক্ষা এবং দ্রুত সেই সমীক্ষা শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা শাসক।
২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় আবাস যোজনায় তপন থেকে আবেদন জমা পড়েছিল ৪২ হাজার। তার মধ্যে ৪ হাজার আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বাতিল হয়ে যায়। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৩৮ হাজার উপভোক্তার একটি তালিকা বের হয়। কেন্দ্রীয় সরকার কিছু গ্রামীণ প্রকল্পে ওই অর্থবর্ষের উপভোক্তাদের জন্য টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। তা নিয়ে সব জেলাতেই আসল উপভোক্তা কারা খুঁজে বের করতে মাঠে নেমে পড়েছে প্রশাসন। তপন ব্লকের ক্ষেত্রে তা বেশ বড় আকারেই হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘তপনের আবেদন অনেকটা বেশি বলেই সেখানে ভালোভাবে খোঁজা দরকার আসল উপভোক্তা কারা। এমনিতে জেলার সবগুলি ব্লকেই এই কাজ শুরু করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন, Students In Digha: হাবড়া থেকে সোজা দীঘা; সৈকতে রাত কাটিয়ে সমুদ্রে নামতে গিয়ে পাকড়াও ২ স্কুলপড়ুয়া
এর আগে গ্রামীণ এলাকায় ১০০ দিনের কাজ এবং আবাসন প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। সংগঠনের তরফে তপনের ঘটনায় কটাক্ষ করা হয়েছে তৃণমূলের দিকেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা জেলার সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘তপনে বরাবর দুর্নীতি হয়েছে। ভালো করে তদন্ত করে দেখা হোক, কোন কোন তৃণমূল নেতা আবাস যোজনায় নিজেদের এবং ঘনিষ্ঠদের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছেন।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘তদন্ত নয়, সমীক্ষা। কারা আসল উপভোক্তা, খুঁজে বের করতেই এই পদক্ষেপ।’’