চম্পক দত্ত: বিডিও-র নির্দেশে কাজ করতে গিয়ে প্রধানের রোষের মুখে গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট। এমনকি মারধরের অভিযোগ উঠল প্রধানের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল শোরগোল এলাকায়। সুবিচার চেয়ে ব্লকের অধীনে থাকা সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের র্নিবাহী সহায়করা একত্রিত হয়ে নিরাপত্তার দাবিতে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এমনই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বান্দিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। বান্দিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট জিয়ারুল রহমানের অভিযোগ, অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে মারধর করে তাপস দোলুই নামে এক ব্যাক্তি। তাপস দোলুই ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের যুব তৃণমূলের নেতা।


কিন্তু কেন মারধর? জিয়ারুলের অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েতে বেশ কয়েকদিন ধরেই কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে একটা ঝামেলা চলছিল। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শনিবার টাকা জমা নেওয়ার শেষ দিন ছিল। আর সেই দিন প্রধান গ্রাম পঞ্চায়েতে উপস্থিত ছিলেন না। তাই বিডিওকে ফোন করে টাকা জমা নেওয়ার বিষয়টি জানালে বিডিওর নির্দেশেই টাকা জমা নিতে গিয়েছিলেন জিয়ারুল। এতেই প্রধানের রোষের মুখে পড়তে হয় তাকে।


আরও পড়ুন: Banarhat: ডায়না নদী কার? সীমানা নিয়ে বিবাদ দুই ব্লকের প্রশাসনিক কর্তাদের


এই নিয়ে সোমবার গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে প্রধানের অনুগামীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে জিয়ারুল। এমনকি সেই ঘটনার কথা জানতে পেরে ব্লকের বিডিওর উদ্যোগে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে পাঠাতে হয় পুলিস।


সেই রাগেই জিয়ারুল বাড়ি ফেরার সময় বান্দিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কদমতলা গ্রামে তাকে একা পেয়ে মারধর করে প্রধান অনুগামী তথা ব্লক তৃণমূলের যুবনেতা তাপস দোলই। সেইসময়ও ফোন পেয়ে বিডিওর তত্ত্বাবধানে ঘটনাস্থলে পাঠাতে হয় পুলিস। আর এরই প্রতিবাদে নিরাপত্তার দাবিতে জিয়ারুলের পাশে দাঁড়ায় ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়কেরা।


আরও পড়ুন: Egra Blast: ২০ বছর আগে কী ঘটেছিল ভানুর বাজি কারখানায়? এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য!


মঙ্গলবার বিকেলে বিডিওর কাছে গিয়ে সকলেই স্মারকলিপি জমা দেন। যদিও মারধরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষ। তবে ওই নির্বাহী সহায়কের ফোন পেয়ে মৌখিক ভাবে তিনি পুলিসে নিরাপত্তা দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান।


তবে এখনও পর্যন্ত ওই কর্মীর থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ মেলেনি। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন ব্লকের বিডিও। অপরদিকে এই বিষয়ে সুর ছড়িয়েছেন চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ। তিনি প্রধানের বিরুদ্ধেই চরম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।


যদিও এই বিষয়ে বান্দিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নমিতা কোটালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে মারধরের ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে ওই দিন গ্রাম পঞ্চায়েতে যে পুলিসের উপস্থিতি ছিল এবং ওই নির্বাহী সহায়কের সঙ্গে পুলিস ছিল তা স্বীকার করে নেন প্রধান।


অভিযুক্ত ব্লক তৃণমূলের যুবনেতা তাপস দোলই এর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে বেশ কয়েকজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারা যায় মারধরের ঘটনাটি সত্য।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক মারধরের দিনের ঘটনার কথা স্বীকারও করেন। আর এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে চন্দ্রকোনা জুড়ে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)