নিজস্ব প্রতিবেদন: গতকাল জঙ্গলমহলে প্রথমদফার ভোট মেটার পরই আজ NIA-এর জালে ছত্রধর মাহাত। দীর্ঘ ১১ বছর পর  শনিবার ঝাড়গ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত লালগড় থানার আমলিয়া গ্রামে নিজের বুথে ভোট দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। এরপর আজ ভোরে লালগড় থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে NIA। উল্লেখ্য, ১৬, ১৮, ২২ মার্চ NIA-এর পক্ষ থেকে তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু হাজিরা দেননি তিনি। এরপরই আদালতের নির্দেশ মেনে আজ তাঁকে গ্রেফতার করে ৪০ জনের একটি দল। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০০৯-এর ১৪ জুন লালগড়ের ধরমপুরে সিপিআইএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় ছত্রধর মাহাতোকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এরপর ওই বছরই রাজধানী ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। ২০০৯-এর শেষেরদিকে জানেশ্বরী এক্সপ্রেস নাশকতায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন জঙ্গলমহলের তৎকালীন জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো। ইতিমধ্যেই দশ বছরের বেশি জেলবন্দি ছিলেন ছত্রধর। ২০২০-র শুরুতে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন ছত্রধর। তবে তদন্ত চলছিল। বারবার ছত্রছরকে শমন পাঠালেও তদন্তে সহযোগিতা না করায় আজ তাঁকে গ্রেফতার করা হল।


২০১১ সালে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম যদি তৃণমূল সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করে তাহলে বলতে হয় তত্কালীন সিপিএমের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতেছিল জঙ্গলমহল। কার্যত নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে তৃণমূল জঙ্গলমহলে তাঁদের সংগঠনিক শক্তিকে বাড়িয়ে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল তত্কালীন বাম সরকারকে। দশ বছর শাসকদল হিসেবে রাজ্যে ক্ষমতা চালানোর নেপথ্যে জঙ্গলমহলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই জঙ্গলমহলের একদা নায়ক ছত্রধর মাহাতো কারাবাস কাটিয়ে ফের সক্রিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরপর সরাসরি তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে নেন ছত্রধর মাহাতো। 


গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছিল জঙ্গলমহলের একাংশ মানুষ। মূলত ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া দুটি লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। কেন হাতছাড়া হয়েছে তা নিয়ে গত একবছরে অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ হলেও তৃণমূল সুপ্রিমো মনে করেছেন জঙ্গলমহলের ক্ষত এখনও সারেনি। তাই সেই ক্ষততে প্রলেপ দিয়ে ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় সংগঠনে বড়সড় রদবদল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতে যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে জঙ্গলমহল। তাই ঝত্রজধরের কাধে ভর করেই জঙ্গলমহলের হারানো ভোট ফেরাতে আশাবাদী তৃণমূল।