জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আজ, ২৬ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন। আজই নবদ্বীপের নাস্তিক ভিলায় একটু অন্যরকম সুরে সম্মান জানানো হল বিদ্যাসাগরকে। একটু ব্যতিক্রমী ভাবনায় এখানে পালিত হল বিদ্যাসাগরের জন্মদিন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কী রকম ব্যতিক্রমী? 


দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা প্রথা হল, দেবী সরস্বতীর (যাঁকে বিদ্যার দেবী বলে মনে করা হয়) সামনে শিশুদের হাতেখড়ি দেওয়া। এই রেওয়াজ বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে ভেঙে দিলেন নবদ্বীপ শহরের নাস্তিক ভিলার বিজ্ঞানকর্মী দম্পতি মৌসুমী ও প্রতাপ। এই দম্পতির সন্তানের নাম অনীশ সংকল্প। বাবা মা'য়ের পদবি থাকলেও ছেলের নামে কোনো পদবি নেই। এই দম্পতিকে অবশ্য অনেক লড়াই করতে হয়েছিল ছেলের নামের শেষে পদবি না রাখার জন্য। তা নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া-সহ সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। আজকের এই ব্যতিক্রমী কাজের পরেও আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা, আবার খুলে গিয়েছে তর্ক-বিতর্কের পরিসর।


আরও পড়ুন: Bengal Weather Update: পুজোয় বৃষ্টির আশঙ্কা, উদ্বিগ্ন স্বয়ং মমতা! কলকাতা কি ভাসবে?


উনিশ শতকে বাংলার এক অংশের সাধারণ মানুষ ধর্মীয় গোঁড়ামিতে নিমজ্জিত ছিলেন। সে সময়ে সমাজের স্রোতের এই উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে প্রবল যুক্তিবাদে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মকে নস্যাৎ করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর জন্মদিনে বিদ্যাসাগরের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞানকর্মী মৌসুমী দেবনাথ। অনুষ্ঠানে পাড়ার ছাত্রছাত্রীরাও অংশ নেয়। বিদ্যাসাগরের জন্মদিনটাকে বাঙালির জাতিসত্তার 'শিক্ষক দিবস' হিসাবে এবং শিশুর হাতেখড়ি'র দিন হিসেবে পালনের আবেদনও রাখেন এই দম্পতি।


অনীশ সংকল্পের মা মৌসুমী দেবনাথ বলেন, 'পুরাণের কাল্পনিক দেবী সরস্বতীর কাছে হাতেখড়ি দেওয়ার অর্থ কুসংস্কার ও অপবিজ্ঞানকে প্রশ্রয় দেওয়া। আমরা চাই না, আমাদের সন্তান কুসংস্কারের মধ্যে বড়ো হয়ে উঠুক। তাই, বাস্তবের 'ঈশ্বর' বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে অনীশের হাতেখড়ি দিলাম। এটা কুসংস্কার ও ধর্মীয় অচলায়তনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ।' অনীশের বাবা প্রতাপচন্দ্র দাসও বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী আন্দোলনের এক কর্মী। তিনি বলেন, 'বিদ্যাসাগরের যুক্তিবাদী শিক্ষা, তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা আজও আমাদের স্পর্শ করে। নারীশিক্ষার প্রসার, নতুন গদ্যরীতির প্রবর্তন, সমাজসংস্কার, বিধবাবিবাহ প্রচলন, জ্যোতিষ শাস্ত্রের পরিবর্তে জ্যোতির্বিদ্যার শিক্ষার মতো ব্যতিক্রমী নানা কাজ তিনি করে গিয়েছেন। কাল্পনিক দেবদেবীকে নিয়ে প্রায় সকলেই ব্যস্ত। আমাদের উচিত ঘরে ঘরে কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার ছবি না রেখে বিদ্যাসাগরের ছবি রেখে তাঁকে সম্মান জানানো এবং আগামী প্রজন্মকে বিদ্যাসাগরের দেখানো পথেই চলার পরামর্শ দেওয়া।'


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)