সাত দিন কাজ করে সাত দিন ছুটি ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্য কর্মীদের, ঘোষণা মমতার
অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে। দয়া করে এইসময় কারো চাকরি কেড়ে নেবেন না, আবেদন মমতার
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩২। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। ফলে গত ৪ দিন ধরে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সাতেই দাঁড়িয়ে রইল রাজ্যে। গত ২৪ ঘন্টায় পজিটিভ কেস ধরা পড়েছে ১৭টি। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা।
আরও পড়ুন-করোনা ‘হটস্পট’-র তালিকায় কলকাতা-সহ ৬ বড় শহর; রয়েছে দেশের ১৭০ জেলা, জানাল কেন্দ্র
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একেবারে সামনের সারিতে রয়েছেন চিকিত্সক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের কাজের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজের চাপে তাঁরা ছুটি পাচ্ছেন না। বাড়ি যেতে পারছেন না। তাঁদের জন্য সুখবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন-
# চিকিৎসক নার্সরা ২৪ ঘন্টা ধরে কাজ করছেন। আমাদের চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীরা সাতদিন কাজ করে সাতদিন ছুটি পাবেন। অলটারনেটিভ সপ্তাহে কাজ করবেন। এদের হেনস্থা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবান্নে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের কিছুটা শান্ত করার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্লবার মুম্বইয়ের বান্দ্রায় ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করার জন্য বিক্ষোভ দেখান কয়েক হাজার বাঙালি ও বিহারি পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের একটাই দাবি, ফেরার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এনিয়ে মমতা বলেন-
# আমি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে বিষয়টা নিয়ে কমিউন্যাল ভাইরাস ছড়াবার চেষ্টা করছে। ওখানে কিছু কিছু মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের কিছু টাকা পাঠাবার ব্যবস্থা আমরা করছি। এছাড়া দিল্লি, সুরাত, বেঙ্গালুরু, বৃন্দাবন যেখানে যেখানে প্রয়োজন আছে আমরা সাহায্য করছি।
# মাস্কটা বাধ্যতামূলক করুন। বাড়ি থেকে বের হলে এটা পরতেই হবে। আগে ছিল পরিবারভিত্তিক। কিন্তু এখন বাইরেও ছড়াচ্ছে।
# কোয়ারেন্টাইন কোনো জনবসতিপূর্ণ এলাকায় করা হবে না। আমি ডিএম, এসপি সবাইকে বলছি, এটা খেয়াল রাখবেন সেন্টার তৈরি করার সময়।
# যারা লাস্ট সময়ে এসেছে তাদের আমরা বাঁচাতে পারিনি। আমরা ৪২ জনকে ভালো করেছি। খুব অ্যাকিউট কেস ছাড়া। আমাদের ডাক্তার নার্সের কাজে কোথাও কোনো গাফিলতি নেই। সবাই খুব ভালো কাজ করছে।
# আগে তো একটা ল্যাব ছিল, এখন তো তাও দুটো ল্যাব হয়েছে। মালদাও পারমিশন পেয়েছে। কিন্তু যারা টেষ্ট করবে তাদের তো ট্রেইনড করতে হচ্ছে।
# কে কোরোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন সেটা আমি বা সিএস বা স্বাস্থ্য সচিব বলি না। আমাদের একটা ডেথ অডিট কমিটি আছে। তারাই ঠিক করে বলে।
আরও পড়ুন-করোনা আতঙ্কে মায়ের শ্রাদ্ধে বাধা, মাত্র ২ ঘণ্টার জন্য আবাসনে ঢুকতে পারবেন মেয়েরা
সম্প্রতি রাজ্যে লকডাউন কার্যকর করার জন্য আধাসেনা ব্যবহারের কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল। এদিন নাম না করে রাজ্যপালকেও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন-
# কেউ কেউ তো বলছে প্যারা মিলিটারি নামানো হোক। বলে দিলেই হল! আরে আর্মির ডাক্তারদেরও তো করোনো হচ্ছে। সিআইএসএফ-এর ডিজি কোয়ারেন্টাইনে চলে গিয়েছেন। ঘোলা জলে মাছ ধরাটা কি এখন খুব প্রয়োজন ?
# করোনা যেন সমষ্টিগতভাবে না বাড়ে। সেটা যেন সবাই একটু খেয়াল রাখি।
# যদি কারো কোনো সমস্যা হয় তাহলে স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
# অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে। দয়া করে এইসময় কারো চাকরি কেড়ে নেবেন না।
# পুলিসের ক্ষেত্রে ৬ ঘন্টা করে যদি ডিউটি আওয়ার্স করা যায় সেটা দেখার জন্য ডিজি, সিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।