নারায়ণ সিংহ রায়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

শীতকাল মানেই কমলালেবু। শুধু বাঙালি বা ভারতীয় নয়, দার্জিলিঙের কমলালেবুর কদর রয়েছে বিদেশেও। কিন্তু এবার শীতে সেই কমলালেবুর স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে চলেছেন কমলাপ্রেমীরা। ফলন কমেছে। তাই শীত পড়ে গেলেও, বাজারে দেখা নেই উজ্জ্বল কমলা রঙের কমলালেবুর। যদি বা অল্প পরিমাণে কিছু কমলা বাজারে এসেছে, তাও খুব নিম্নমানের। কিন্তু কমলার এই দুর্ভোগ কেন?


চাষিদের কথা অনুযায়ী এর পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ-


কারণ এক, ২০১২ সালে ভূমিকম্পে বহু কমলার বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেইসব বাগানে বন্ধ হয়ে যায় কমলার চাষ। চাষিদের অভিযোগ, সরকারি তরফে সেই বাগানগুলিতে ফের কমলার চাষ শুরুর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।


কারণ দুই, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়ক যোজনায় তৈরি হয়েছে ঝকঝকে রাস্তা। বেড়েছে গ্রাম থেকে শহরে যাতায়াত। কিন্তু পাশাপাশি যানবাহন বেশি চলায় ধুলোতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কমলা গাছ।



কারণ তিন, অক্টোবর মাসে কমলা ফুল এলে গাছে ওষুধের পাশাপাশি সার প্রয়োগ করতে হয়। এদিকে অশান্তির জেরে ১০৫ দিন পাহাড়ে চলে বনধ। ফলে চাষিরা কমলা গাছে কোনওপ্রকার ওষুধই দিতে পারেননি।


কারণ চার, বনধের জেরে এবার নতুন করে পাহাড়ে সেভাবে কমলার নতুন চারা লাগাতে পারেননি চাষিরা। যার ফলে ১০০ থেকে ৮০ বছরের পুরনো গাছের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। এদিকে সেই গাছগুলির ফলন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় কমেছে উত্পাদন।


কারণ পাঁচ, চাষিদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা গাছ পরিচর্যার প্রশিক্ষণ দাবি আসলেও রাজ্য সরকার ও জিটিএ কেউ-ই এব্যাপারে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে পুরানো পদ্ধতিতেই পরিচর্যা চলছে গাছের। ফলে কমছে কমলার গুণগত মান।


আরও পড়ুন, পর পর কন্যাসন্তান, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে খুন করল স্বামী


কারণ ছয়, রাজনৈতিক কারণে মাঝে মাঝেই বন্ধ থাকে পাহাড়। ফলে পেটের তাগিদে পাহাড়ের বাসিন্দারা বেছে নিয়েছেন উপার্জনের অন্য রাস্তা। অনেকে পাহাড় ছেড়ে ভিনরাজ্যবাসী হয়ে গেছেন। সব মিলিয়ে কমেছে পাহাড়ে কমলার চাষ।


এহেন পরিস্থিতিতে চাষিরা তাকিয়ে আছেন রাজ্য সরকারের দিকেই। তাঁদের সাফ বক্তব্য, রাজ্য সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। নইলে দার্জিলিংয়ের কমলা একদিন মিউজিয়ামে জায়গা পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চাষিরা।