নিজস্ব প্রতিবেদন : মায়ের কোলে মেয়েকে ফিরিয়ে দিল পুলিস। স্বামীর মৃ্ত্যুতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল মেয়ে। বাজারে বেরিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল সে। সেই মেয়েকে খুঁজে পেয়ে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল বসিরহাট থানার পুলিস। সামনে এল পুলিসের মানবিক মুখ। আর মেয়েকে ফিরে পেয়ে চোখের জল বাঁধ মানল না মায়ের। সকলের সামনেই মেয়েকে জড়িয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলেন তিনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের বাসিন্দা কিংকর বাদ্যকর ও মিনা বাদ্যকর। দম্পতির দুই মেয়ে, তাঁদের মধ্যে বড় চন্দনা মন্ডল। কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় চন্দনার। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন চন্দনার স্বামী কাজল মণ্ডল। কিছুদিনের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর।


স্বামীর মৃত্যুতে এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়ে চন্দনা। একদিন বাজারে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। সেটা গত ৫ বছর আগেকার কথা। এই ৫ বছর ধরে মেয়েকে অনেক খুঁজেছেন মিনা বাদ্যকর। কিন্তু মেয়ের কোনও খোঁজ পাননি। শেষমেশ একসময় মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন মিনা বাদ্যকর।


এদিকে চন্দনা ঘুরতে ঘুরতে একদিন হাজির হয় বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জের কানাইকাটি গ্রামে। সেখানেই স্থানীয় বাসিন্দা একজনের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে শুরু করে সে। বাড়ি ও পরিবারের কথা তখন তাঁর কিছুই মনে নেই। কাজের বাড়িতেই কাজের বিনিময়ে দুবেলা দুমুঠো খাবার জুটত তার। অভিযোগ, কাজ ঠিকমতো না হলে, মাঝেমধ্যেই চলত মারধর। এরপর একদিন চন্দনা অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে কাজের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন, সিদ্ধি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল মন্দির দালানে! ভোর রাতে পুঁটুলি সমেত ধরা পড়ল চোর


বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র জানিয়েছেন, অসুস্থ চন্দনাকে একদিন তাঁর কাছে নিয়ে আসেন দফতরের এক কর্মী। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একটু সুস্থ হলে বাড়ির ঠিকানা বলতে পারে চন্দনা। তারপরই আসানসোলে চন্দনার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুলিসের কাছে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার খবর পেয়েই আসানসোল থেকে বসিরহাট ছুটে আসেন মিনা বাদ্যকর।


দীর্ঘ ৫ বছর মেয়েকে দেখে তখন মায়ের চোখের জল বাঁধ মানছে না। আবেগঘন সেই মুহূর্তে চোখ ছলছল করে ওঠে থানায় উপস্থিত অন্য সবারও। মা-মেয়ের মিলনের সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকেন বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র ও তাঁর দপ্তরের কর্মীরা। দীর্ঘ ৫ বছর পর এবার বাড়ি ফিরবে মেয়ে। বাঁধ মানছে না খুশি। অন্যদিকে, হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে মায়ের হাতে তুলে দিয়ে তাঁরাও খুশি বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র।