Kharagpur: পড়ে থেকে ধুলো পড়ছে লক্ষ লক্ষ টাকার মেশিনে, ১২ বছরেও শুরু হলনা খড়গপুরের ট্রমা কেয়ার
খড়গপুরবাসীর দাবি, রাস্তাতেই অনেক সময় বড় বিপদ ঘটে যায়! হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে রবিবার এক রোগীর পরিজন জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি, খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ICCU চালু করা হয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। তবে, এই হাসপাতালের ক্ষেত্রে যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, সেই ট্রমা ইউনিটই চালু করা হয়নি!’
ই গোপী: ১৩ বছর ধরে পড়ে পড়ে ধুলো খাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার মেশিনপত্র, জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ট্রমা ইউনিট আজও অধরা। ৬০ নম্বর এবং ৬ নম্বর এই দুটি জাতীয় সড়ক গিয়েছে খড়্গপুরের উপর দিয়ে। অবস্থান আর গুরুত্ব বুঝেই প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে গড়ে উঠেছিল ট্রমা ইউনিট (Trauma Unit)। সালটা ছিল ২০০৯-১০। এসেছিল অত্যাধুনিক সব মেশিনপত্র। তবে, গত ১২-১৩ বছরে সেই সব মেশিনপত্রে শুধু ধুলোই জমেছে! ট্রমা ইউনিট আর চালু হয়নি। অথচ, জাতীয় সড়কে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা! হাত-পা ভাঙা থেকে শুরু করে মাথায়-শরীরে চোট নিয়ে আসা রোগীদের রেফার করে দেওয়া হয় ১৭-১৮ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
খড়গপুরবাসীর দাবি, রাস্তাতেই অনেক সময় বড় বিপদ ঘটে যায়! হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে রবিবার এক রোগীর পরিজন জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি, খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ICCU চালু করা হয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। তবে, এই হাসপাতালের ক্ষেত্রে যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, সেই ট্রমা ইউনিটই চালু করা হয়নি!’
খড়গপুরের 'আমরা বামপন্থী' সংগঠনের সম্পাদক অনিল দাস রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে জানিয়েছেন, ‘আগের সরকার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বুঝেই জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত এই হাসপাতালে ট্রমা ইউনিট চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিল। দামি মেশিনপত্র সহ সব সবকিছুই পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, এঁরা তা ফেলে রেখেছে বছরের পর বছর ধরে। ব্যস্ততম এই খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী আসেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আসেন নানা ধরনের দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু, তাঁদের পরিষেবা দেওয়া যায় না। মেদিনীপুরে রেফার করা হয়, সেখান থেকে পিজি! রাস্তাতেই অনেকে মারা যান’।
আরও পড়ুন: Kultali: মদ্যপ পুলিসের গাড়ির ধাক্কা, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে দুই শিশু
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি একটা ছোট আইসিইউ চালু করা হয়েছে, ভালো কথা। কিন্তু, আইসিইউ তো যেকোনও সময়ই চালু করা যায়। যেটা সবথেকে প্রয়োজনীয়, সেই ট্রমা ইউনিট চালু করার কোনও উদ্যোগই নেই এই সরকারের। মেশিনপত্র সব পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। আমার অবিলম্বে এই বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার আবেদন জানাই। নাহলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব আমরা’।
আরও পড়ুন: Bengal Weather Today: এবার কমের দিকে পারদ, পতন দিন ও রাতের তাপমাত্রায়
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানান, ‘জাতীয় সড়কের পাশে প্রতি ২৫ কিলোমিটার অন্তরই ট্রমা ইউনিট থাকার কথা। সেই হিসেবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, কিছু মেশিনপত্র দিলেই এই ইউনিট চালু করা যায়না। একটা বিশাল সেটআপের প্রয়োজন হয়। নিউরো, অর্থো সহ একাধিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়। যতদিন না সেই অভাব পূরণ হচ্ছে, ততদিন এখানে ট্রমা ইউনিট চালু করা সম্ভব নয়। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এই হাসপাতালে চলতি মাসের মধ্যেই সিটি স্ক্যান পরিষেবা চালু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া (টেন্ডার প্রক্রিয়া) শুরু করার বিষয়ে। এছাড়াও, এখানে ICCU (Intensive Critical Care Unit) চালু করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ট্রমা ইউনিট চালু করার বিষয়েও আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাব’।