নোটিস দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হল DHR স্টেশনগুলির প্রাচীন স্টল; `পলিসি ডিসিশন` মত সংশ্লিষ্ট মহলের
রেল এক সময়ে একটা কমপ্যাশনেট সংস্থা হিসেবেই পরিচিত ছিল, আজ সেটি ক্রমশ কনজিউমারিজমের দিকে যাচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নতুন বছরের শুরুতেই বিষাদের ছায়া দার্জিলিংয়ে। আর একটু স্পষ্ট করে বললে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েজ-য়ে। হঠাৎ করেই 'ডিএইচআর'-এর একটি নোটিশের সূত্রে বিপদে পড়েছেন কিছু মানুষ, তাঁদের পরিবার।
'ডিএইচআর' এবং 'ইউনেসকো'র একটি স্থানীয় স্কিম ছিল। তার নাম 'সহায়তা'। নামের মতোই সেই স্কিমটির লক্ষ্য ছিল স্থানীয় ভাবে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষগুলির জীবিকার ব্যবস্থা করে তাঁদের দিকে 'সহায়তা'র হাত বাড়িয়ে দেওয়া। সেই হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কাজটি এতদিন ঠিকই চলছিল। বিভিন্ন এনজিও-র মাধ্যমে স্থানীয় মানুষদের ডিএইচআর-এর আয়ত্তাধীন রেলস্টেশনগুলিতে স্টল খোলার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। 'মোমো অন হুইলস', 'হিমালয়ান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ' জাতীয় স্টলগুলি এদের দ্বারাই পরিচালিত ছিল। ছিল বইয়ের স্টলও। কোথাও কোথাও এমন স্টলও ছিল যা চালাতেন কয়েকজন বিধবা। কোথাও কোথাও এমনও হয়েছে, তিন জেনারেশন ধরে একটি নির্দিষ্ট স্টল চালিয়ে এসেছে নির্দিষ্ট একটি পরিবার। বহুদিন ধরে এগুলি চলে আসছিল। ঘুম বা দার্জিলিং বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনগুলিতে এই ধরনের স্টল রমরম করে চলত।
কিন্তু সেই গৌরবের দিন বোধ হয় শেষ হতে চলল। কেননা। ১১ জানুয়ারি ডিএইচআর এই স্টলগুলি অচিরেই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশিকা দিয়ে একটি নোটিস দিয়েছিল। যেখানে সময় ছিল মাত্র ১৫ দিন। ফলে ইতিমধ্যেই এই ধরনের স্টলগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
কী হবে এর বদলে?
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, যেখানে যেখানে স্থানীয় মানুষদের দ্বারা পরিচালিত এই ধরনের স্টল এতদিন চলত, সেখানে তাঁদের সরিয়ে দিয়ে ওই একই কাজের জন্য 'ওপেন টেন্ডার' ডাকা হচ্ছে। আর সেখানে পাত্তা পাচ্ছে না ছোটখাটো সংস্থা। বরং সুযোগ পাচ্ছে বড় ও ভারী নামই। অদূর ভবিষ্যতেও ঘুম বা এনজেপি স্টেশনগুলিতে এমনই হতে চলেছে বলে অনুমান।
যে মানুষগুলি এতদিন ধরে স্টলগুলি চালিয়ে আসছিলেন তাঁদের প্রতি হঠাৎ কেন এই 'অবিচার' তা জানিয়ে তাঁদের সংগঠন ডিএইচআরকে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু রেল কোনও জবাব দেয়নি। রেল এদের সঙ্গে কোনও কথাই বলছে না।
ঘটনা কী ঘটল?
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, বিষয়টি একেবারেই কেন্দ্রের রেল মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত। তাদের কারও কারও মত, রেল এক সময়ে একটা কমপ্যাশনেট সংস্থা হিসেবেই পরিচিত ছিল, তবে আজ সেটি ক্রমশ কনজিউমারিজমের দিকে যাচ্ছে। এটা এখন তাদের পলিসি ডিসিশন। এ নিয়ে কিছু বলার নেই। ডিএইচআর ইন্ডিয়ান সাপোর্ট স্টাফ সেক্রেটারি জেনারেল রাজ বসু জানান, রেল এখন 'মার্কেট-ড্রিভেন' একটি সংস্থা। তা ছাড়া রেল প্রাইভেটাইজেশনের দিকেও ঝুঁকছে। ফলে, এটা তারই ফলশ্রুতি।
আরও পড়ুন: Blood Sport: মুরগি 'খুন করা'র অভিযোগ উঠল হাঁসের বিরুদ্ধে! থানায় ডেকে পাঠানো হল অভিযুক্তকে