Dilip Ghosh: `পশ্চিমবঙ্গে সংগঠন শুয়ে পড়েছে, কর্মীরা বেরোননি।` দল নিয়ে ফের বিস্ফোরক দিলীপ...
Dilip Ghosh: ভোটে হারজিত হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সংগঠন শুয়ে পড়েছে। কর্মীরা বেরোননি। আমি নিজে মেদিনীপুরে বুথলেভেল পর্যন্ত সংগঠন তৈরি করেছিলাম গতবার। সেখানে প্রচুর কাজ করেছিলেন সাংসদ কোটার টাকায়। মানুষ খুশি ছিল। সব দলের লোক আমার পক্ষে ছিল। যে কোনো কারণে হোক পার্টি ওখানে আর আমাকে দেয়নি।
অয়ন ঘোষাল: ফের বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ। আজ, বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ ইকোপার্কে তাঁর মর্নিং ওয়াকের পর নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এল দল সম্বন্ধে তাঁর মূল্যায়ণ, নিজের সম্বন্ধে তাঁর মনোভাব, তাঁর আগামীর কর্মপরিকল্পনা। কী বললেন তিনি?
বেনজির দর-কষাকষি দিল্লিতে
হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙ লাথি মারে। হাতি তো কাদায় পড়ে গিয়েছে। তবে মোদী-শাহ জুটি আছেন। আর এঁরা পুরনো পার্টনার। চিনি এঁদের। একটু বেশি দর হাঁকছেন। মানুষ ম্যান্ডেট দিয়েছে। সুশাসন দিতেই হবে। সেটা যেন কেউ ভুলে না যায়। আঞ্চলিক দল সবসময় নিজের কথা ভাবে। অনেকে আগে নিজের স্বার্থেই জোট ছেড়েছে আবার নিজেই ফিরে এসেছে।
'বিকশিত ভারত' ধাক্কা খাবে?
মোদী ভোটের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি উন্নয়নের জন্য সরকার চালান। উনি একটা রোড ম্যাপ তৈরি করেছিলেন। আমার মনে হয় না, এই সব ঘটনায় ওই কাজে খুব বাধা আসবে। কারণ, দেশের আর্থিক স্থিতি ভালো। পৌনে দুই লক্ষ কোটি টাকা গত মাসে জিএসটি কালেকশন হয়েছে। টাকার অভাব নেই। ইচ্ছার অভাব নেই। যাঁরা এগুলিতে বাধা দেবেন তাঁদের নিজের এলাকায় গিয়ে জবাব দিতে হবে। ২০০৪ সালের কথা মনে আছে। বাজপেয়ীর সঙ্গে যাঁরা বেশি দর কষাকষি করেছিলেন, তাঁরা পরে সাফ হয়ে গিয়েছেন। এর মধ্যে মমতা ব্যানার্জির পার্টিও ছিল।
কর্মীদের মনোবল আবার চাঙ্গা করা যাবে?
ভোট এলেই এই রাজ্যে এই জিনিস হয়। যাঁরা বিজেপি করেন, তাঁরা এটা জেনেই বিজেপি করেন। প্রায় দশ বছর ধরে এটাই চলে আসছে। পুলিসের উপর আর কেউ ভরসা করে না। তা সত্ত্বেও দলীয় কর্মীরা পার্টির সঙ্গেই আছেন। ১৯ জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে।
আপনি নিজের মনোবল বাড়াবেন?
আমি সব জেলায় যাব। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব। আজ থেকেই আমি এই কাজ শুরু করছি। আগেও করেছি। এখনও করব।
পরাস্ত প্রার্থীর ফোন পেয়েছেন দল থেকে?
না, এখনও সেরকম কিছু হয়নি। আগে সরকার গঠন হোক। পরিস্থিতি পর্যালোচনা হোক।
মেদিনীপুরের সাংসদ হিসেবে আপনার ভূমিকা অ্যাক্টিভ ছিল। এবার আপনি কী করবেন?
আমাকে মেদিনীপুর থেকে ওরা ফোন করেছিল। ওদের মন খারাপ। ভেবেছিল আমি প্রার্থী হয়েছি। জিতে যাব। আমি যাব ওখানে। বর্ধমান যাব। ওখানেও কর্মীরা আক্রান্ত। আমি রাজ্য সভাপতি থাকার সময় পুরো রাজ্যে ঘুরতাম। দল আমাকে সেই দায়িত্ব দিক বা না দিক, আমার সেই একই ভূমিকা থাকবে। যতদিন আমি রাজনীতি করব, আমার ভূমিকা পাল্টাবে না।
তৃণমূলের তারকা জয়ী প্রার্থীদের আর এলাকায় দেখা যাবে?
ইতিহাস তো উল্টো কথা বলছে। মুনমুন সেন, সন্ধ্যা রায়, মিমি, নুসরত। মানুষকে লোভ দেখানো হয়। দিয়ে বিভ্রান্ত করে ভোট টেনে নেওয়া হয়। ভোট মিটলে আর খেয়াল থাকে না। উল্টে ওরা বলে, বিজেপির লোক কোথায়? আমরা তো ছিলাম। কাজের দায়িত্ব কিন্তু আমাদের নয়। এই দায়িত্ব সরকারের। এবার মানুষের এটা বোঝা উচিত।
দলে ক্ষোভ বাড়ছে?
ভোটে হারজিত হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সংগঠন শুয়ে পড়েছে। কর্মীরা বেরোননি। আমি নিজে মেদিনীপুরে বুথলেভেল পর্যন্ত সংগঠন তৈরি করেছিলাম গতবার। সেখানে প্রচুর কাজ করেছিলেন সাংসদ কোটার টাকায়। মানুষ খুশি ছিল। সব দলের লোক আমার পক্ষে ছিল। যে কোনো কারণে হোক পার্টি ওখানে আর আমাকে দেয়নি। সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল, এটা প্রমাণ হয়ে গেল। দলের সংগঠন ঢিলে হয়ে গিয়েছে। আমরা এবারে প্রথমে লোকই খুঁজেই পাইনি। তাই সব জায়গায় আমাদের ভোট কমে গিয়েছে আর পরাজয় হয়েছে।
সংখ্যালঘু ভোট
বিজেপির রাজনীতি দেশের স্বার্থে। কিছু প্রকল্প করেও কোনো লাভ হয়নি। সংখ্যালঘু মানুষ সব থেকে বেশি কেন্দ্রীয় গরিব কল্যাণ যোজনার লাভ পেয়েছেন। কিন্তু আমাদের ভোট দেয়নি। দেয়নি তো দেয়নি। আমরা চেষ্টা করেছি। সবার জন্য কাজ করছে বিজেপি। সবাই ভোট দেয়নি তো কী হয়েছে?