Duare Sarkar : পদবির জায়গায় `কুত্তা`, জয়েন্ট বিডিওকে ঘিরে টানা ঘেউ ঘেউ যুবকের
ওই ব্যক্তি বলেন, রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলাম, প্রথম পর্যায়ে যখন রেশন কার্ড হাতে পাই তখন দেখি আমি শ্রীকান্তি দত্ত হয়ে গিয়েছে শ্রীকান্ত মণ্ডল। সংশোধনের আবেদন করে আমি হয়ে গেলাম শ্রীকান্ত কুমার দত্ত। ফের দুয়ারে সরকারে গিয়ে সংশোধনের আবেদন করলাম। এরপর আর মানুষ নয়, হয়ে গেলাম কুকুর
মৃত্যুঞ্জয় দাস: হাতে ব্যাগ আর তাতে প্রচুর কাগজ নিয়ে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি সরকারি এক আধিকারিকের গাড়ির দরজায় মুখ রেখে সমানে ঘেউ ঘেউ করে যাচ্ছেন! 'দুয়ারে সরকার' ক্যাম্পে এই দৃশ্য দেখে স্বভাবতই বিস্মিত অনেকেই। খানিক হতবাকও! আর এই পরিস্থিতিতে 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি' অবস্থা ওই আধিকারিকের! কোনওক্রমে ওই জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারলে যেন বেঁচে যান তিনি! তিন তিন বার নামের সংধোধন করতে গিয়ে হয়রান ওই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন-জিনপিংয়ের মুখোমুখি কমলা হ্যারিস! বৈঠকে দুই দেশ পরস্পরকে কী বার্তা দিল?
কিন্তু ঘটনাটা কি? ওই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, বাঁকুড়া-২ নম্বর ব্লকের বিকনা গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশিয়াকোল গ্রামের শ্রীকান্তি দত্ত রাজ্যের খাদ্য ও সরবারহ দফতরের তরফে যে আর.কে.এস.ওয়াই রেশন কার্ড হাতে পেয়েছেন সেই জায়গায় দত্ত নয়, তার পদবি হয়ে গেছে 'কুত্তা'। আর এই ঘটনায় যথেষ্ট বিব্রত ও অসম্মানিত তিনি। তাই গত বুধবার বিকনা গ্রাম পঞ্চায়েতের 'দুয়ারে সরকার' ক্যাম্পে জয়েন্ট বি.ডি.ও পরিদর্শণে এলে কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে 'প্রতিবাদ' জানান তিনি। সামনের সিটে বসে থাকা ওই আধিকারিকের জানালায় মুখ লাগিয়ে ক্রমাগত কুকুরের মতো আওয়াজ করতে থাকেন। এক পলকে দেখলে মনে হবে তিনি হয় কথা বলতে পারেন না। বিষয়টি বুঝতে পরে অস্বস্তিতে পড়ে যান ওই আধিকারিক।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে শ্রীকান্তি দত্ত নামে ওই ব্যক্তি বলেন, রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলাম, প্রথম পর্যায়ে যখন রেশন কার্ড হাতে পাই তখন দেখি আমি শ্রীকান্তি দত্ত হয়ে গিয়েছে শ্রীকান্ত মণ্ডল। সংশোধনের আবেদন করে আমি হয়ে গেলাম শ্রীকান্ত কুমার দত্ত। ফের দুয়ারে সরকারে গিয়ে সংশোধনের আবেদন করলাম। এরপর আর মানুষ নয়, হয়ে গেলাম কুকুর! শ্রীকান্তি দত্তের জায়গায় শ্রীকান্তি কুমার কুত্তা। এই ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে জয়েন্ট বি.ডি.ও কে হাতের কাছে পেয়েও দত্ত কী করে কুত্তা হয় এই প্রশ্ন তাঁর কাছে রাখলেও তিনি কোন উত্তর না দিয়ে এলাকা ছাড়েন বলে শ্রীকান্তি বাবু দাবি করেন।
ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ শ্রীকান্তি দত্তের মা হীরা দত্ত। পদবির জায়গায় কুত্তা লেখায় তাঁদের 'সামাজিক 'সম্মানহানি' হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজে 'চুক্তিভিত্তিক আর অশিক্ষিত' কর্মী নিয়োগের ফলেই এই ঘটনা ঘটছে। আর যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে তাঁদের মতো সাধারণ মানুষকে। আমার ছেলের আমি একটা নাম রেখেছি। দোকান করে ছেলে সংসার চালায়, আর এই ঘটনায় শতগুণ সম্মানহানি হয়েছে বলে তিনি জানান।