চিত্তরঞ্জন দাস: নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকেই পশ্চিম বর্ধমান জেলার শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের দূষণে জেরবার শিল্পাঞ্চলবাসী। এই বছরে গত ১৪ নভেম্বর এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল সব থেকে বেশি-- ৩৯৬! আজ সেই মাত্রা ছাড়িয়ে শুধু নয়, দিল্লির দূষণমাত্রা ছাড়িয়ে ২৬ নভেম্বর বাতাসের গুণমান সূচক ৪৫৩!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Lord Hanuman: জেনে নিন সেই সব মহাভাগ্যবান রাশির নাম, হনুমানজির কৃপায় যাঁদের উন্নতি কেউ কোনও দিন ঠেকিয়ে রাখতে পারে না...


শিল্পশহর দুর্গাপুরের দূষণবিষ ছাড়াল দিল্লিকে। দূষণের মাত্রা এতটা বেশি থাকায় চিন্তিত দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। উদ্বিগ্ন দুর্গাপুর নগর নিগম। একাধিক কারখানা বন্ধের নির্দেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী দিল্লির সঙ্গে দূষণে পাল্লা দিচ্ছে শিল্পশহর দুর্গাপুরও। চারিদিকে শুধু কালো ধোঁয়া আর ছাই উড়ছে! দেখে মনে হচ্ছে, দূষণের চাদরে ঢেকেছে শিল্পাঞ্চলের আকাশ। সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বেরোনোই আতঙ্কের হয়ে দাঁড়াচ্ছে।


রাজধানী দিল্লিতে শীতকালে দূষণের প্রধান কারণ নাড়াপোড়া। ধান গম কাটার মরশুমে ধান গম কাটার পরে জমিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায় বায়ু দূষণ। এই দূষণের জেরে বন্ধ স্কুল, কলেজ, অফিস সবই। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়াও সেখানে নিষেধ। মঙ্গলবার সেখানে বাতাসের গুণমান সূচক (AQI/Air Quality Index) ৩৯৪। আর এদিনই শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) ৪৫৩। এই মাত্রা মারাত্মক বলে গণ্য করা হয়েছে।


বাংলার অন্যতম শিল্পশহর দুর্গাপুরে একাধিক কলকারখানা থেকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া বেরোয়, যা ঢেকে দেয় সব কিছু। বাড়ি থেকে বেরোনো তো দূরের কথা, জানালা খুললেও ঘরে দমবন্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়! এই নিয়ে একাধিকবার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকাবাসী। কখনও আবার কলকারখানার সামনেই দূষণের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গিয়েছে দুর্গাপুরের মানুষজনকে। কিছুদিন আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী দুর্গাপুরের দূষণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'দুর্গাপুরের দূষণের বিষ দিল্লির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। দিল্লিতে বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) ৩৫৭, আর দুর্গাপুরে বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) ৩৩০-র কাছাকাছি! তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।' রাজ্যের আর এক মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, 'ডেস্টিনেশন দুর্গাপুর করতে গেলে দুর্গাপুরকে আগে দূষণমুক্ত করতে হবে।' আর এর ঠিক দু'দিন পরেই দিল্লিকে ছাড়িয়ে গেল দুর্গাপুরের দূষণ।


আরও পড়ুন: Road Accident: ভয়ংকর! হাড়হিম! দুর্ঘটনায় ৫৭৫ জনের প্রাণহানি! রাস্তায় বেরলে মৃত্যুই কি ভবিতব্য?


এ নিয়ে প্রশাসনিক মহলের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আঞ্চলিক চিফ ইঞ্জিনিয়ার অরূপ দে বলেন, 'হাওয়া না চলায় আজ দূষণ বেশি আছে। ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বাতাসের গুণমান সূচক। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরের দুটি কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিনটি কারখানাকে সতর্ক করা হয়েছে। দিল্লিতে আজকের পরিস্থিতি জানি না, তবে দুর্গাপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা চিন্তিত।' দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, 'আমরাও চিন্তিত। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ-সহ বিভিন্ন সরকারি অফিস এবং কারখানার সঙ্গে বৈঠক করব। কলকারখানাগুলি থেকে কালো ধোঁয়া কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করব। এলাকায় এলাকায় মানুষকে সচেতন করা হবে।'


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)