প্রসেনজিত্ সর্দার: রাস্তায় আড়াআড়িভাবে যেন শুয়ে রয়েছে সারি সারি লাশ! কোনওটা মাটি উপড়ে, কোনওটা মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে রয়েছে রাস্তায়। কোথাও আবার চার-পাঁচ ফিট ধড় দাঁড়িয়ে, বাকিটা উধাও। ক্যানিং থেকে গোসবা যাওয়ার পথে এমন ভাবেই ভেঙে পড়েছে একাধিক বিদ্যুতের পোস্ট! আমফান বিদায় নেওয়ার সপ্তাহ খানেক পরও সুন্দরবনবাসীর 'ভবিষ্যত্' কার্যত অন্ধকার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আমফান বয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের বুকের উপর দিয়ে। কার্যত নিশ্চিহ্ন ক্যানিং, গোসাবা, পাখিরালা, ঝড়খালি, কুমিরমারি, পুইজালী, আমতলি। কাঁচা বাড়ির ছাদ উড়েছে, ভেঙেছে কয়েক হাজার গাছ। তবে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিন পোস্টগুলির। আর তার জেরেই দিনের আলো ফুরোলেই নিকষ অন্ধকার ঘনিয়ে আসে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।



সুন্দরবনে নদীর দুই পাড়ে পোঁতা রেল পোস্ট। তার মাধ্যমেই এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে বিদ্যুত্ পৌঁছয়। ঝড়ে প্রায় সব খুঁটিই ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকার সাবস্টেশনগুলি। ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সুকুমার সাহানি বলেন, "একের পর এক গ্রাম পুরো শ্মশান হয়ে গেছে। কোথাও কোন বিদ্যুতের পোস্ট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নভেম্বর মাসে হওয়া বুলবুলের ক্ষতি এখনও পুরোটা কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তার মধ্যে নতুন করে আমফানের দাপটে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বেহাল হয়ে গেছে। সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক করতে সময় লাগবে।"



আরও পড়ুন- ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাজ্যের সব সরকারি স্কুল, তবে উচ্চমাধ্যমিক নির্দিষ্ট দিনেই 


দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রাম সাবস্টেশন থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইন পৌঁছেছে বাসন্তীর সোনাখালিতে। সেখান থেকেই একের পর এক নদী পেরিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে ক্যানিং-সহ গোসাবা, পাখিরালা, ঝড়খালি, কুমিরমারি, পুইজালী, আমতলির মতো দ্বীপে। এই সব এলাকায় বিদ্যুত্ পৌঁছে দিতে যুদ্ধকালীন তত্পরতায় এখন কাজ চলছে। কিন্তু বাধ সেধেছে দক্ষ শ্রমিকের।


এক আধিকারিক জানান, জরুরি ভিত্তিতে কাজ চললেও কর্মীর অভাব রয়েছে। লকডাউনের জেরে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিন সরঞ্জামও নেই। গাছ কাটার মেশিনও কম। তবে, শহরগুলিতে বিদ্যুত্ পৌঁছে দিতে তত্পর জেলা প্রশাসন। মেশিনের সাহায্যে কাটা হচ্ছে গাছ। পোঁতা হচ্ছে বৈদ্যুতিন খুঁটি। কিন্তু দুর্গম এলাকাগুলি এখনও অথৈ অন্ধকারে। সূর্য ডুবলেই ঝুপ করে অন্ধকার নামে। সে অন্ধকার ভেদ করে আদৌ আলো আসবে কিনা জানা নেই তাঁদের।  দীপের টিমটিম আলোই এখন একমাত্র ভরসা দ্বীপগুলির।