কীভাবে তৈরি হচ্ছিল ভুয়ো আধার কার্ড? হানা দিতেই পর্দা ফাঁস
টুইটারে নিজের আধার নাম্বার শেয়ার করে নিজের আধার তথ্য ফেরত পেয়েছিলেন খোদ ট্রাই চেয়ারম্যান।
নিজস্ব প্রতিবেদন : অভিযোগ অনেকদিন ধরেই ছিল। কিন্তু প্রশাসন গা করছিল না বলে অভিযোগ। অবেশেষে অভিযান চালিয়ে পর্দা ফাঁস হল ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির বড়সড় চক্রের। হাতেনাতে গ্রেফতার করা হল ৩ জনকে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে।
আসানসোলের দক্ষিণ থানার হটন রোড। সেখানেই পসরা সাজিয়ে বসেছিল ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির চক্রের কারবারিরা। কী ছিল না সেখানে? আধার কার্ড তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামই মজুত ছিল সেই ঘরে। কম্পিউটার, ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন, আইরিশ স্ক্যানার সবই ছিল সেখানে। একেবারে এলাহি ব্যবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সকলের চোখের সামনে চলছিল এই কারবার। প্রায় বছরখানেকের উপর সক্রিয় ছিল চক্রটি। এই নিয়ে তাঁরা বেশ কয়েকবার প্রশাসনের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেইসময় প্রশাসনের টনক নড়েনি। এই দীর্ঘ সময়ে বহু মানুষ এই জাল আধার কার্ড তৈরির চক্রের খপ্পরে পড়ে।
আরও পড়ুন, কীভাবে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ফাঁদে গ্রাহকরা? তদন্তে ফাঁস 'মোডাস অপারেন্ডি'
ইতিমধ্যেই এই খবর গিয়ে পৌঁছয় রাঁচিতে আধার কার্ডের রিজিওনাল অফিসে। এরপরই বুধবার আধার কার্ডের রিজিওনাল অফিসারের নেতৃত্বে আসানসোলের হটন রোডে ওই সেন্টারে হানা দেয় জেলা প্রশাসন। হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় ৩ জনকে। সেইসঙ্গে ওই সেন্টার থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রচুর জাল আধার কার্ড ও জাল আধার কার্ড তৈরির সরঞ্জাম।
এই ঘটনার পর বারংবার স্থানীয়দের সতর্ক করেছেন আধিকারিকরা। তাঁদের সাফ বক্তব্য ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিস ছাড়া কোথাও আধার কার্ড বানানো হচ্ছে না। এমনকি আধার কার্ড সংশোধনও হচ্ছে এই দুটি জায়গাতেই। সংশোধনের ক্ষেত্রে ৩০ টাকা করে চার্জ লাগছে। তাই কোনও মানুষ যাতে কোনওভাবে ভুয়ো চক্রের ফাঁদে পা না দেন, সেইজন্য চোখ-কান খোলা রাখতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন, ২ পাতার লম্বা সুইসাইড নোট লিখে নিজেকে নির্মমভাবে শেষ করে দিল কলেজছাত্রী
উল্লেখ্য, গত শনিবারই আধার বিড়ম্বনার শিকার হয়েছিলেন খোদ ট্রাইয়ের চেয়ারম্যান। টুইটারে নিজের আধার নাম্বার শেয়ার করে নেটিজেনদের উদ্দেশে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন তিনি। যার উত্তরে তাঁকে রীতিমত চমকে দিয়েই তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য তাঁকে জবাবে পাঠিয়েছিলেন নেটিজেনরা। এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়ে আধার নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুটি। বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ে আধার কর্তৃপক্ষ। নিজের আধার নম্বর প্রকাশ্যে না জানানোর জন্য দেশের মানুষকে সাবধান করেন আধিকারিকরা।