জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ঝকঝকে হাসি। প্রাণচ্ছ্বোল স্বভাব। শিক্ষিত। চিকিৎসক। স্বনির্ভর। ভালোবেসে সঙ্গীর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। কিন্তু সেই লিভ-ইন রিলেশনশিপের পরিণতি হল মর্মান্তিক। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তোলপাড় নেটদুনিয়া। প্রজ্ঞাদীপা হালদার নামে ৩৭ বছরের ওই চিকিৎসক বারাসত-১ ছোট জাগুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। বেশ ভালো লেখালেখির হাতও ছিল ওই তরুণীর। তাঁর গুণমুগ্ধ পাঠকও ছিলেন অনেকে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রজ্ঞাদীপা হালদারের নিথর, নিষ্প্রাণ দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। যে সুইসাইড নোটে বেশি কথা লেখা নেই। খুব সংক্ষিপ্ত। কিন্তু তাতেই স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া তাঁর মৃত্যুর কারণ। সুইসাইড নোটে প্রজ্ঞাদীপা লিখে গিয়েছেন,'যে প্রহারের দাগ নিয়ে চলে গেলাম / এর শোধ কেউ নেবে। / আমার মৃত্যুর জন্য কৌশিক দায়ী।' ভাঁজ করা ছেঁড়া পাতায় লেখা ৩ লাইনের সুইসাইড নোট। এই সুইসাইড নোটের ভিত্তিতেই পুলিস অভিযুক্ত তথা প্রজ্ঞাদীপা হালদারের ৪ বছরের লিভ-ইন পার্টনার সেনা ডাক্তার কৌশিক সর্বাধিকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। পদমর্যাদায় তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল।


পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে,  ২০২০ সাল থেকে ব্যারাকপুরের ফ্ল্যাটেই তাঁর সঙ্গী কৌশিক সর্বাধিকারীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। প্রজ্ঞাদীপা হালদারের পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার ভারতীয় সেনার চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারী।  প্রজ্ঞাদীপার মা ঝরনা হালদার অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেননি। তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় লিভ-ইন পার্টনার সেনা চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনেছে তাঁর পরিবার। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তে প্রজ্ঞাদীপার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। যে আঘাতের চিহ্ন খুব একটা পুরনো নয়। মৃত্যুর কিছু আগেই এই আঘাতগুলি পেয়েছিলেন প্রজ্ঞাদীপা। এমনকি তাঁর দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটেও উল্লেখ রয়েছে প্রহারের কথা!


এমনকি মৃত্যুর আগে প্রজ্ঞাদীপার শেষ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেও ধরা পড়েছিল মানসিক অবসাদের কথা। তিনি লিখেছেন, 'কেউ নেই কিছু নেই সূর্য দুবে গেছে।' কিছুদিন আগে একটি ছবির ক্যাপশনে প্রজ্ঞাদীপা লিখেছিলেন,'না পাওয়ার রঙ নাও তুমি....।' পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, লিভ-ইন পার্টনার কৌশিক অত্যাচার করতেন প্রজ্ঞাদীপার উপর। অভিযুক্তের একাধিক সম্পর্কের কথা জেনে গিয়েছিলেন প্রজ্ঞাদীপা। আর তারপরই অশান্তির শুরু। নিয়মিত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতেন প্রজ্ঞাদীপা। এমনকি প্রজ্ঞাদীপার মৃতদেহ যে অবস্থায় উদ্ধার রয়েছে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। 


কারণ, প্রজ্ঞাদীপার দেহ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় বিছানায় হাঁটু মুড়ে পড়েছিল। ঘর ছিল অগোছালো অবস্থায়। মেঝেয় ছড়ানো জিনিসপত্র। বিছানার পাশে পড়েছিল মদের বোতলও। ওদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন অভিযুক্ত কৌশিক সর্বাধিকারী। শেষে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিস। 


আরও পড়ুন, Panchayat Election 2023: বিদেশ থেকেও পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন! কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)