Flash Flood in Sikkim: মেঘভাঙা বৃষ্টি, সিকিমে লোনক হ্রদ ফেটে তিস্তায় হড়পা বান! নিখোঁজ বহু সেনা জওয়ান
ভয়ঙ্কর তিস্তার রুদ্ররূপ পাহাড়ে যে ধ্বংসলীলা চালাল তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ সমতলেও। তিস্তায় হলুদ সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। পাহাড়ে বৃষ্টির তেজ বাড়লে তাই চিন্তা বৃদ্ধি পায় জলপাইগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ এবং বাংলাদেশে। সিকিমের চুংথামে হ্রদ ফেটে পড়ার জেরে তিস্তার জলস্তর বৃদ্ধির প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে তিস্তার উপর তৈরি একাধিক ব্যারাজে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো:ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে উত্তর সিকিম। বুধবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফেটে হুড়মুড়িয়ে জল নেমে আসে তিস্তায়। আচমকাই হড়পা বান আসায় তিস্তার জলস্তর বেড়ে যায়। আর তাতেই ভেসে নিখোঁজ হয়ে যান সেনার ২৩ জওয়ান। তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে সেনার বহু গাড়ি এবং বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনিও। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন, Swasthya Sathi: স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেও অতিরিক্ত ২০ হাজার দাবি, না পেয়ে মাঝপথেই বন্ধ অপারেশন!
বেশ কয়েকটি জায়গায় ধসও নেমেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। এই ঘটনার জেরে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চুংথাম। সেনার ইস্টার্ন কমান্ড জানিয়েছে, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়ে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। এর ফলে মুহূর্তে তিস্তার জলস্তর প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে যায়। দু’পাশ ছাপিয়ে পাহাড়ি সিকিমে ধ্বংসলীলা চালাতে থাকে তিস্তা। জলের তোড়ে সিংতামে সেনার একটি ছাউনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, অন্তত ২৩ জন সেনা জওয়ানের কোনও খোঁজ মিলছে না। ভেসে গিয়েছে ছাউনির প্রায় সমস্ত কিছুই। জলের তলায় চলে গিয়েছে সেনার গাড়ি-সহ গোটা ছাউনি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, সিংতামের কাছে বারদাংয়ে সেনা ছাউনিটি ছিল। ভয়ঙ্কর তিস্তার রুদ্ররূপ পাহাড়ে যে ধ্বংসলীলা চালাল তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ সমতলেও। তিস্তায় হলুদ সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
জলপাইগুড়ি জেলার বিশাল অংশ দিয়ে তিস্তা প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশে। তারপর তা মিশে যায় ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে। পাহাড়ে বৃষ্টির তেজ বাড়লে তাই চিন্তা বৃদ্ধি পায় জলপাইগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ এবং বাংলাদেশে। সিকিমের চুংথামে হ্রদ ফেটে পড়ার জেরে তিস্তার জলস্তর বৃদ্ধির প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে তিস্তার উপর তৈরি একাধিক ব্যারাজে। প্রশাসনের আশঙ্কা, জলস্তর ২৫ থেকে ২৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। তিস্তার গতিপথের দু’পাশে পড়ছে গাজলডোবা ব্যারাজ, দোমহনি, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি শহর।
তিস্তার বৃদ্ধি পাওয়া জলস্তরের জেরে ওই সব এলাকাই প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকাও। প্রশাসন সূত্রে খবর, সিংথামে তিস্তার উপর একটি ফুটব্রিজ ছিল। নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে সেই সেতুটি ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়াও তিস্তার দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিকিমের গোটা লাচেন উপত্যকাই। বহু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। বহু মানুষও নিখোঁজ হয়েছেন বলে আশঙ্কা।
মূলত, হিমবাহ গলা জলে পুষ্ট তিস্তা। যদিও বর্ষাকালে তাতে বৃষ্টির জলও মেশে। স্বভাবতই বর্ষায় তিস্তার রূপ থাকে ভয়ঙ্কর। এরই মধ্যে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে আসা হড়পা বানে উত্তরবঙ্গের প্রধানতম নদী ফুঁসছে। সিকিমে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে মানুষকে সরাতে শুরু করেছে। সিকিম রাজ্য প্রশাসন মানুষকে তিস্তা নদী থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
আরও পড়ুন, Bengal Weather Today: বিদায়বেলায় উলট পুরাণ, বর্ষা বাড়ল বঙ্গে
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)