Lakshmi Puja: সিংহবাড়ির ৪০০ বছরের প্রাচীন লক্ষ্মীপুজোয় ১০ টাকায় হত রাতভর যাত্রা...
Lakshmi Puja: মেদিনীপুরের ডেবরার লোয়াদা গ্রামে সিংহবাড়ির ৪০০ বছরের প্রাচীন লক্ষ্মী পুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে! এক সময় আত্মীয়-স্বজন এবং লোকজনে গমগম করত সিংহদের এই বিশাল জমিদারবাড়ি। তবে, কালের নিয়মে পরিবর্তন এসেছে।
ই গোপী: জমিদারি নেই। প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের প্রথাও অনেক কাল আগেই তো উঠে গিয়েছে। তবুও ৪০০ বছর ধরে স্বমহিমায় লক্ষীদেবী পূজিতা হন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের লোয়াদা গ্রামের সিংহ পরিবারে।
আরও পড়ুন: Lakshmi Puja: বুনোহাতির কবল থেকে বাঁচতে এখানে ১০০ বছর ধরে চলছে গজলক্ষ্মীর পুজো...
এক সময় আত্মীয়-স্বজন এবং লোকজনে গমগম করত সিংহদের এই বিশাল জমিদারবাড়ি। পূর্ব,পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ মিলে তিনতলা বাড়ি সিংহদের। এখন অবশ্য তার ভগ্নদশা। তবে বাড়ি এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেই বাড়ি আঁকড়ে পড়ে রয়েছে পরিবারের ১০০-রও বেশি সদস্য। বাড়ির মধ্যে গেলে চোখে পড়বে, সুদৃশ্য দালান। সেখানকার চুন-সুরকির কাজ আর কাঠের জানালা মন কাড়বে। সরু খাড়া সিঁড়ি দিয়ে উপরে গেলে দেওয়ালে চোখে পড়বে প্রাচীন সব কারুকার্য।
বাড়ির ভেতরে রয়েছেন কুলদেবী লক্ষ্মী। দেবীর নিত্যপুজোর জন্য একজন পুরোহিতও রয়েছেন। নিয়ম মেনে প্রতি বছরই লোয়াদার এই সিংহবাড়িতে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো হয়। এখন আর আগের মতো চাকচিক্য দেখা যায় না। তবুও পুজোর কটা দিন হই-হুল্লোড়ে কাটান পরিবারের সদস্য-সহ আত্মীয় বন্ধু-বান্ধবরা। পুজোর দিন থেকেই পরিবারে নিরামিষ রান্না-বান্না হয়। সবাই মিলে একসঙ্গে বসে হয় খাওয়া-দাওয়া।
বাড়ির তরফে অরুণকুমার সিংহ বলেন, দাদু-ঠাকুরদার কাছে শুনেছি, আমরা তৃতীয় মৌর্য সম্রাট রাজা অশোকের বংশধর। তৎকালীন ঘাটালের নাড়াজোলের রাজার সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল সিংহদের। সেই যুদ্ধে নাড়াজোলের রাজারা সিংহ পরিবারের কাছে পরাস্ত হন। তারপর থেকেই জমিদার মহেন্দ্র সিংহর উদ্যোগে শুরু হয় এই লক্ষীপুজো।
আরও পড়ুন: Lakshmi Puja: লক্ষ্মীলাভের আশায় জল ঢালল স্বয়ং লক্ষ্মীমূর্তিই! মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের...
পরবর্তী সময়ে বংশপরম্পরায় টিকে যায় ঐতিহ্যশালী এই পুজো। এবং আজও তা স্বমহিমায়। আজও সিংহ পরিবারের কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোকে ঘিরে এখানে উৎসবে মাতে আশপাশের পরিবেশ। সিংহবাড়ির তরফে জানা যায়, অতীতে দশ টাকার বিনিময়ে এখানে অপেরার যাত্রাপালা হত। যাত্রা দেখতে গ্রামবাসীরা তো আসতেনই। বাইরে থেকেও প্রচুর লোকজন ভিড় করতেন। তবে, কালের নিয়মে পরিবর্তন এসেছে। জৌলুস কমেছে। আড়ম্বর কমেছে। যাত্রাপালা আজকাল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।