বাঁচতে হলে মমতাকে আলিমুদ্দিনে আসতে হবে: গৌতম দেব
বিজেপিকে ঠেকাতে বাংলায় জোট করবে সিপিএম-তৃণমূল? এমন প্রশ্নে গৌতম দেবের জবাব, `হতে পারে না বলে রাজনীতিতে কোনও কথা হয় না। হবেই বলছি না। তবে হতেও পারে।`
নিজস্ব প্রতিবেদন: ত্রিপুরায় বামেদের হারের পর সারা ভারতব্যাপী অ-বিজেপি জোট গড়ার যে ভেলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাসিয়েছেন, তার পালে হাওয়া দিলেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোটের নৌকায় উঠতে আগেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মুলায়ম পুত্র অখিলেশ সিং যাদব এবং লালুপ্রসাদ যাদবরা। মহা জোট নিয়ে কথা হয়েছে মমতা-চন্দ্রশেখরেরও। মঙ্গলবারই ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনও জানিয়েছেন যে, মমতা তাঁকে ফোন করে অ-বিজেপি ফ্রন্ট গড়ার প্রস্তাবে সামিল হতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এবার কি সেই বৈতরণীতেই সামিল হবে সিপিএমও? বিজেপিকে ঠেকাতে বাংলায় জোট করবে সিপিএম-তৃণমূল? এমন প্রশ্নে গৌতম দেবের জবাব, "হতে পারে না বলে রাজনীতিতে কোনও কথা হয় না। হবেই বলছি না। তবে হবে না, এটাও বলছি না।"
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় পালাবদলের পর ভেঙে দেওয়া হল লেনিনের মূর্তি
ত্রিপুরা জয়ের পরই 'উল্লাসে' মেতেছে গৈরিক বাহিনী। ২৫ বছর পর ত্রিপুরা থেকে বাম বিদায় হতেই শাসক দলের তাণ্ডবে ঘর ছাড়া নেতা-কর্মীরা। এমনটাই অভিযোগ সিপিএম-র। ত্রিপুরাকে 'রাম রাজ্য' বানাতে ইতিমধ্যেই ভাঙা হয়েছে লেনিনের মূর্তি। মূর্তি ভাঙার সেই ভাইরাল ভিডিও খবরের শিরোনামে আসতেই নিন্দার ঝড় গোটা দেশ জুড়ে। এমনকী সিপিএম বিরোধী অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কড়া নিন্দা করেছেন এই ঘটনার। প্রশাসনিক সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার নিন্দা করে জানান, "মার্ক্স-লেনিন আমার নেতা নন, কিন্তু মূর্তি ভাঙা বরদাস্ত করব না'। একই সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডকে ঘৃণা করেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় লেনিনের মূর্তি ভাঙাকে সমর্থন করে টুইট রাম মাধব ও রাজ্যপাল তথাগত রায়ের
এদিকে, ত্রিপুরার ঘটনার প্রতিবাদে আজই কলকাতার রাস্তায় নামেছে সিপিএম। নেতৃত্ব দিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা কারাত, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো নেতারা। বিজেপিকে ঠেকাতে বামেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সমগ্র অ-বিজেপি শক্তিকে এককাট্টা করতে হবে, একথা আগেই জানিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। লেনিন মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ মিছিলে ফের একবার সেই লাইনেই সরব হলেন গৌতম দেব। বিজেপিকে বামেরাই ঠেকাবে, দাবি এই বাম নেতার। একই সঙ্গে 'সরকার টেকাতে' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আলিমুদ্দিনে আসতে হবে বলেও মত গৌতম দেবের। তাঁর সাফ কথা, "বাঁচার জন্য মমতাকে আলিমুদ্দিনে আসতেই হবে"।
আরও পড়ুন- মমতা ফোনে তৃতীয় ফ্রন্টের কথা বলেছেন: স্ট্যালিন
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, যে সিপিএম'কে দু'চোখে দেখতে পারেন না নেত্রী, সেই যুযুধান শিবিরের প্রতি তিনি এখন অনেকটাই নরম। উল্টে বিজেপিকে ঠেকাতে সিপিএম-কেও পাশে টানছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, ত্রিপুরা ভোটের আগে কংগ্রেস সভাধিপতিকে জোট করে লড়ার কথা বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রীই। তবে মানিক সরকারের 'একলা চলো' নীতির কারণেই তা হয়নি। একা একাই লড়েছে সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি। যার ফল গেরুয়া ঝড়ে ধূলিসাৎ বামদুর্গ।