দেবব্রত সরকার: মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগে কার্যত সিলমোহর বর্তমান গোঘাট হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা অনিতা মন্ডলের নিয়োগ। স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়োগপত্র নাড়াচাড়া করতেই চঞ্চল্যকর তথ্য। হাইকোর্টের নির্দেশের কপি নেই সহ-শিক্ষিকা নিয়োগের অথচ বিদ্যালযের রেজুলেশনে উল্লেখ আছে। বিদ্যালয়ের রেজুলেশনের বইতে উল্লেখিত হাইকোর্টের নির্দেশে ১৯৯৭ সালে "ভূগোল" বিষয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে নিযুক্ত হন সহকারি শিক্ষিকা অনিতা মন্ডল। পরবর্তীকালে এই বিদ্যালয়েই ২০০৫ সালে অনিতা মন্ডল সহকারী প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Balurghat: কাজের লোভ দেখিয়ে নাবালিকাকে 'ধর্ষণের' চেষ্টা 'বাহুবলী' তৃণমূল নেতার!


১৯৯৭ সালে যখন অনিতা দেবী তথাকথিত হাইকোর্টের নির্দেশে ইন্টারভিউয়ে বসেন এবং পরিচালন সমিতির প্যানেল অনুযায়ী শিক্ষিকা হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু যখন তিনি এই গোঘাট হাইস্কুলে চাকরিতে জয়েন করেছিলেন সেই সময়  হাইকোর্টের নির্দেশেই ইন্টারভিউ এর উপস্থিতির কপি জমা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন পরিচালন সমিতির সভাপতি নারায়ণ পাঁজা।‌ উল্লেখ্য, বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষিকা অনিতা মন্ডলের দাদা স্বপন মন্ডল সিপিআইএমের দাপুটে নেতা ছিলেন তৎকালীন রাজনীতিতে। এই স্বপন মন্ডল নিজে একজন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক এবং তৎকালীন সময়ে হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদেও ছিলেন বলে জানা গেছে।


আর এই স্বপন মন্ডল নিজের প্রভাব খাটিয়েই নিজের দুই ছেলে, বোন অনিতা এবং ভাইকে চাকরিতে নিয়োগ পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। এ বিষয়ে তৃণমূলের আরামবাগ সংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, বামফ্রন্টের আমলে যে চিরকুটে চাকরি হয়েছে তার একটা জ্বলন্ত প্রমাণ এই অনিতা মন্ডলের নিয়োগ। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই নিয়োগের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যদিও সিপিআইএমের হুগলি জেলা সম্পাদকমন্ডলী সদস্য ভাস্কর রায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে হাইকোর্টে যাক এবং সেখানে গিয়ে প্রমাণ করে দিক এই নিয়োগ স্বচ্ছভাবে হয়নি। 


যদিও অনিতা মন্ডলের দাদা অর্থাৎ সিপিআইএমের দাপুটে  নেতা স্বপন মন্ডল ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি। এই বিষয়ে হুগলি জেলা সম্পাদক মন্ডলের সিপিআইএমের সদস্য ভাস্কর রায় সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন। এলাকায় শোরগোল সিপিএম নেতা স্বপন মন্ডলের পরিবারের লোকজন হওয়ার কারণে তার পরিবারের ভাই, বোন, ছেলে, ভাইপো থেকে আরম্ভ করে সবাই চিরকুটে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। সাধারণ বেকার যুবক থেকে আমআদমির চাকরি চুরি করেছে সিপিএম।


এই নিয়ে গোঘাট এলাকা জুড়ে চলছে শোরগোল। যদিও সিপিএম নেতা স্বপন মন্ডল এর বোন কোন ভাবে চাকরি বাঁচানোর তাগিদে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও এই বিষয়টি ক্যামেরার সামনেই অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক অনিতা মন্ডল।তিনি বলেছেন,সমস্ত কিছুই ঠিকঠাক ভাবেই হয়েছে। কোন দুর্নীতি হয়নি। সঠিক ভাবেই নিয়োগ হয়েছে। এদিকে এই বিষয়ে রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, প্রথম ইন্টারভিউ বাতিল করে পূনরায় স্বপন মন্ডলের বোনের জন্য নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়া হয় এবং স্বপন মন্ডলের বোন দাবি করেন তার হাইকোর্টের অর্ডার আছে। তাহলে হাইকোর্টের অর্ডারের কপি বিদ্যালয়ের কাছে নেই কেন? আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। 


তাহলে কি চিরকুটে চাকরি হয়েছে দাপুটে সিপিএম নেতা স্বপন মন্ডলের বোন অর্থাৎ বর্তমানে গোঘাট হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা অনিতা মন্ডলের। এই নিয়েই চাপানউতোর শুরু হয়েছে আরামবাগ মহকুমা জুড়ে। তাহলে কি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেই সিলমোহর পড়ল? স্বপন মন্ডলের বোন অনিতা মন্ডল বাংলা ছেড়ে উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে ভূগোলের মাস্টার ডিগ্রির সার্টিফিকেট এনে ইন্টারভিউ বসার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে গোঘাট হাইস্কুলে ইন্টারভিউ দেয়। তাহলে ওই নির্দেশের কপি গেল কোথায়? এমনটাই অভিযোগ। তাহলে কি সবটাই ভুয়ো ছিল? 


তবে এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায় সিপিআইএম প্রভাব খাটিয়ে ই দাপুটে সিপিএম নেতা অর্থাৎ তৎকালীন গোঘাট ১ নম্বর লোকাল কমিটির সম্পাদক স্বপন মন্ডলের বোন অনিতা মন্ডলের চিরকুটে চাকরি হয়েছে। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে আরামবাগের এক ব্যক্তি সেখ মিয়াজুল গোঘাট হাইস্কুলে সিপিএম নেতা স্বপন মন্ডলের বোন অনিতা মন্ডলের চাকরির বিষয়ে গোঘাট হাইস্কুলে তথ্য জানার অধিকারে আরটিআই করতেই। বিদ্যালয় থেকে প্রদেয় আরটিআই এর উত্তরপত্র ভাইরাল হয়ে যায়। যা নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ শুরু হয়েছে এলাকা জুড়ে।



আরও পড়ুন, Baruipur: চোর সন্দেহে আশ্রমের ভিতরই পিটিয়ে 'খুন' নাবালক!


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)