Lakshmi Puja: লিখেছেন নজরুল থেকে সত্যজিৎ! ৭৭ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে চলেছে হাতে-লেখা শারদীয়া...
Lakshmi Puja: আজও তারা প্রতি কোজাগরী লক্ষ্মীপূর্ণিমায় হাতে-লেখা সাহিত্য পত্রিকাই প্রকাশ করে আসছে। পুরো বিষয়টির পিছনে রয়েছেন একদল সাহিত্যপ্রেমী মানুষ। হাতেলেখা ব্যতিক্রমী সেই পত্রিকার নাম-- `প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা`। প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল সেই ১৯৪৭ সালে!
অরূপ লাহা: কোজাগরী লক্ষ্মীকে স্মরণ করে ৭৭ বছর ধরে, সেই ১৯৪৭ সাল থেকে, পূর্ব বর্ধমানের আনগুনা গ্রামে প্রকাশিত হয়ে আসছে হাতে-লেখা সাহিত্য পত্রিকার শারদসংখ্যা। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখনকার লেখালেখিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে ঠিকই, এসেছে ডিজিটাল-যুগ। তবে আনগুনা সেই পথে হাঁটেনি। আজও তারা প্রতি কোজাগরী লক্ষ্মীপূর্ণিমায় হাতে-লেখা সাহিত্য পত্রিকাই প্রকাশ করে। পুরো বিষয়টির পিছনে রয়েছেন একদল সাহিত্যপ্রেমী মানুষ। হাতেলেখা ব্যতিক্রমী সেই পত্রিকার নাম-- 'প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা'। পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার অখ্যাত গ্রাম আনগুনার এই সাহিত্যচর্চার খ্যাতি ইতিমধ্যেই অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। তা রাজ্যের সাহিত্যিক মহলেও সাড়া ফেলেছে।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর পরে ফের দুর্গাপুজো! জেনে নিন আশ্চর্য ইতিহাস...
আনগুনা গ্রামের 'প্রভাত স্মৃতি সংঘে'র সাহিত্যপ্রেমী সদস্যদের চেষ্টাতেই মূলত প্রকাশিত হয়ে আসছে এই পত্রিকা। নামী-দামি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিবছর শারদ সংখ্যা প্রকাশ করে পাঠকদের নজর কাড়ে। কিন্তু আনগুনা গ্রামের হাতে-লেখা এই সাহিত্য পত্রিকার কদর সেই সব উজ্জ্বল বর্ণময় পত্রিকার পাশে আজও নিজগুণেই অটুট। শুধু তাই নয়, যত দিন যাচ্ছে ততই ছোট পত্রিকার দুনিয়ায় বেড়ে চলেছে 'প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা'র পরিচিতি, খ্যাতি ও গৌরব।
কেমন এই সাহিত্য পত্রিকা, যা নিয়ে এত হইচই?
আট ইঞ্চি বাই বারো ইঞ্চি মাপের প্রভাত সাহিত্য পত্রিকার পৃষ্ঠাসংখ্যা দু'শোরও বেশি। নামজাদা কবি ও সাহিত্যিক থেকে শুরু করে একেবারে নবাগতদের লেখাও স্থান পায় এতে। একদা এখানে লিখেছেন কাজী নজরুল ইসলাম, কালিদাস রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, সত্যজিৎ রায়ের মতো লেখক!
এই পত্রিকা প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত আনগুনা গ্রামের বাসিন্দারা জানান-- ১৯৪৭ সালে গ্রামের কয়েকজন সাহিত্যপ্রেমী মানুষ প্রথম এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার পর থেকে একই ধারায় পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়ে আসছে। পত্রিকাটি এখন আনগুনা গ্রামের ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক-বাহক হয়ে উঠেছে। তাঁরা আরও জানান-- প্রতি বছর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন সন্ধ্যায় গ্রামের মন্দিরে লক্ষ্মীদেবীকে সাক্ষী রেখে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয় 'শারদীয়া প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা'! এবছরও শনিবার লক্ষ্মীপুজোর দিন সন্ধ্যায় পত্রিকার ৭৭ তম সংখ্যা প্রকাশিত হল।
আরও পড়ুন: Lakshmi Puja: পাঁচ দিন ধরে লক্ষ্মীপুজো! নৌকায় করে মহানন্দা নদীতে ভাসান...
লক্ষ্মীপুজোর অনেক আগে থেকেই শুরু হয় পত্রিকা প্রকাশনার কাজ। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, লেখকেরা যে লেখা পাঠান তা কোনও ছাপাখানায় পাঠানো হয় না, কম্পিউটারে টাইপ করেও নেওয়া হয় না। পত্রিকা প্রকাশনার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা নির্দিষ্ট মাপে কাটা আর্ট পেপারের উপর তা নিজের হাতে যত্ন করে লেখেন। শুধু লেখাই নয়, লিখিত অংশকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে লেখার পাশাপাশি থাকে রং-তুলির আঁকিবুকিও!