Durga Puja 2023: ৪৩৯ বছরের `পোড়া মা`! স্বপ্নাদেশে বললেন, `মুখের রং কালো করেই আমার পুজো কর`!
Durga Puja 2023 in Canning: মহালয়ের দিনেই মা দুর্গার কালো মুখে চক্ষুদান করা হল নিয়ম মেনেই। কালো কেন? আসলে প্রায় ৪৪০ বছরের পুজোয় ৩০০ বছর আগের এক ঘটনার জেরে বদলে যায় এ পুজোর কিছু প্রকরণ। বদলে যায় মায়ের মুখের রংও।
প্রসেনজিৎ সর্দার: গতকাল, মহালয়ের দিনেই মা দুর্গার কালো মুখে চক্ষুদান করা হল নিয়ম মেনেই। কালো কেন? আসলে প্রায় ৪৪০ বছরের পুজোয় ৩০০ বছর আগের এক ঘটনার জেরে বদলে যায় এ পুজোর কিছু প্রকরণ। বদলে যায় মায়ের মুখের রংও। দেবীর স্বপ্নাদেশের পরে আজও ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা একই রকম নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে পুজোর আয়োজন করে চলেছেন। মহালয়ার দিনে তুলির টানে দুর্গার কালো মুখে চক্ষুদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছেন। সেই আয়োজনই ছিল গতকাল, মহালয়ার দিনে।
মহালয়ার দিনেই তৈরি হয় কয়েকশো নারকেলের নাড়ু। এবারও তৈরি হল। যা পরবর্তী পাঁচদিন ধরে মায়ের ভোগে নিবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: যা চাইবেন, তাই পাবেন এই বড় দুর্গা মার কাছে! দূর-দূরান্ত থেকে আসেন মানত করতে...
ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য পরিবারের পূর্বপুরুষরা এই পুজো ওপার বাংলার ঢাকার বিক্রমপুরে বাইনখাঁড়া গ্রামে শুরু করেছিলেন। সেখানে খড়ের চালায় দুর্গা মায়ের পূজা চলত। পাশের একটি মন্দিরে মনসা পূজা হত। সেখানে ৩০০ বছর আগে মায়ের পূজার সময়ে ঘটেছিল এক দুর্ঘটনা। ঠাকুরমশাই মনসা মন্দিরে পূজা সেরে যখন দুর্গামন্দিরে পূজা শুরু করেন, সেই সময়ে হঠাৎই একটি কাক মনসা মন্দির থেকে প্রদীপের জ্বলন্ত সলতে তুলে নিয়ে এসে দুর্গা মন্দিরে খড়ের চালে বসে। নিমেষের মধ্যে সেই চাল-সহ দুর্গা মা-ও পুড়ে যান। এরপর ভট্টাচার্য পরিবার ভাবে, মা হয়তো আর তাঁদের হাতে পূজা নেবেন না, তাই তাঁরা ঠিক করেন, পরের বছর থেকে তাঁরা এই পূজা বন্ধ করে দেবেন।
কিন্তু সেই বছরেই পরিবারের এক সদস্য স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নাদেশে মা জানান, তাঁর পূজা করতে হবে, বন্ধ করা যাবে না। তবে, তাঁর মুখের রং কালো করতে হবে, গায়ের রং হবে বাদামি! এই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরে আবার শুরু হয় পূজা। তখন থেকেই এখানে মায়ের মুখের রং কালো, গায়ের রং বাদামি।
যে কাঠামোয় মাকে গড়া হয় সেই কাঠামো বিসর্জনের তিনদিন পরে জল থেকে তুলে রাখা হয়, পরের বছরে একই কাঠামোয় আবার পূজা হয়। এই ভাবেই ৪৩৯ বছর ধরে পূজা হয়ে আসছে ভট্টাচার্য পরিবারে। জানা যায়, দেশ যখন ভাগ হয় তখন বাংলাদেশ থেকে ভট্টাচার্য পরিবার নদীপথে বাংলার ক্যানিংয়ে চলে আসে, সঙ্গে আনেন মায়ের সেই কাঠামো। এভাবেই ৪৩৯ বছর ধরে একই পিতলের অস্ত্র মায়ের হাতে দেওয়া হচ্ছে। আগে এই পরিবারে মোষ বলি হত, পরে কিছু বছর পাঁঠা বলি দেওয়া হত। একবার পাঁঠা বলি দিতে গিয়ে বাধা পান তাঁরা। এর পর থেকেই নিয়ম বদলায়। ঠিক হয়, অষ্টমীর দিন চালকুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: মহালয়াতেই আবাহন ও বিসর্জন! শুনেছেন এমন আশ্চর্য 'ওয়ান-ডে' দুর্গাপুজোর কথা?
এ পুজোর আগের মতো জাঁকজমক আর নেই। তবে ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য পরিবার নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গেই আজও করে চলেছে পুজোটি।