বিশ্বজিৎ সিংহ রায়: মদের খরচ তুলতে প্রতারণার (Fraud) ফাঁদ। অনলাইনে দেড়শো টাকার বিনিময়ে ফর্ম ফিলাপ। আর OR কোড দেওয়া মদের দোকানের। ফলে গোটা টাকাটাই চলে যেত সেখানে। তারপর অনায়াসেই দোকান থেকে প্রিয় মদের বোতল সংগ্রহ করত প্রতারক। শেষমেশ প্রতারিত এক মহিলার মিষ্টি সুরের ফাঁদে পা দিয়েই শ্রীঘরে ঠাঁই হল প্রতারকের। ভারতীয় সেনার পোশাকে থাকা ভুয়ো ওই কম্যান্ডোকে দেখে চুক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে পুলিসেরও। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির (Hooghly) চুঁচুড়ায়। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অভিযুক্তের নাম অরিন্দম ভাদুড়ি। বাড়ি চুঁচুড়ার নন্দীপাড়া মনসাতলা এলাকায়। পুলিস সূত্রে খবর, বছর চল্লিশের অরিন্দম চাকরি দেওয়ার নামে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপন দেখেই বহু বেকার যুবক-যুবতী যোগাযোগ করে। তাঁদের জন্য প্রথম শর্ত ছিল, আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে। অনলাইনে সেই আবেদন পত্র পূরণের জন্য ১৫০ টাকা ফি-ও করে ধার্য করা হয়। ফোন পে-তে টাকা মেটানোর জন্য দেওয়া হয় QR (ক্যুইক রেসপন্স) কোড। আবেদনকারীরা সেই কোড স্ক্যান করে ১৫০ টাকা পেমেন্ট করতেন। আর সেই টাকা সোজাসুজি চলে যেত মদের দোকানে।


জানা গিয়েছে, চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার বাসিন্দা শিল্পা দাসও মাস দেড়েক আগে সেই আবেদন করেছিলেন। কথা ছিল, শিল্পাদেবী অন্য ছেলে-মেয়েদেরও ফর্ম ফিলাপে আগ্রহী করে তুলবেন। শিল্পার হাত ধরে যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁরা অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার চাকরি পাবেন। আর শিল্পা শুধুমাত্র নতুনদের ঢুকিয়ে মাসে ১৮ হাজার টাকা করে বেতন পাবেন। শিল্পার অভিযোগ, তাঁর কথায় এখনও পর্যন্ত ৩০ জন এভাবে ১৫০ টাকা করে দিয়ে চাকরির আবেদন করেছেন। কিন্তু কেউ-ই চাকরি পায়নি। মাস দেড়েক হয়ে গেলেও বেতন পাননি শিল্পা নিজেও। 



এরপরই শিল্পা অনলাইনে পেমেন্টের জন্য দেওয়া QR কোড ডিটেলস লক্ষ্য করে দেখেন যে, সবার টাকা চুঁচুড়ার একটি বিলিতি মদের দোকানে পৌঁচ্ছছে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে এবার পাল্টা ফাঁদ পাতেন শিল্পাদেবীও। মোবাইল ফোনে মিষ্টি সুরে অরিন্দমকে পাল্টা টোপ দেন শিল্পা। শিল্পার কথামতো বৃহস্পতিবার দুপুরে একেবারে এনএসজি কম্যান্ডোর পোষাকে চুঁচুড়া লঞ্চ ঘাটের সামনে হাজির হয়ে যায় অরিন্দম। সঙ্গে সঙ্গেই শিল্পা সহ সেখানে উপস্থিত বাকি প্রতারিতরা অরিন্দমকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে যান। 


কাঁধে অশোক স্তম্ভ। জংলি ছাপ সেনার পোশাকে থাকা ওই ব্যাক্তিকে দেখে থানার পুলিসকর্মীরা তখন হতভম্ব। প্রতারিতদের কাছ থেকে গোটা ঘটনা শুনে চক্ষু চড়কগাছ পুলিসেরও। পুলিস সূত্রে খবর, ভুয়ো কম্যান্ডো অরিন্দম মদ্যপানের জন্য টাকা তুলতে নতুন নতুন ছক কষত। এদিনও তার পকেট থেকে একটি মদের বোতল উদ্ধার হয়। প্রতারিতদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।


আরও পড়ুন, Malda: অনুমতি ছাড়াই একশো দিনের প্রকল্পের কাজ, তদন্তের নির্দেশ জেলাশাসকের


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)