নিজস্ব প্রতিবেদন: দীর্ঘদিনের দাম্পত্য। জীবনের অনেকটা চড়াই-উতরাই একসঙ্গে হেঁটে এসেছেন। স্বামীর কাছেই স্ত্রীর রাজনীতির পাঠ নেওয়া। স্বামীর হাত ধরেই স্ত্রীর রাজনীতির আঙিনায় পা ফেলা। রাজনৈতিক কেরিয়ারে স্বামীর ছেড়ে যাওয়া জায়গাতেই স্ত্রীর অভিষেক। কিন্তু দীর্ঘদিনের একসঙ্গে রাজনৈতিক জীবনযাপনের মাঝে হঠাত্ই দাঁড়ি টেনে দিয়েছে এবারের লোকসভা ভোট। রাজনৈতিক ময়দানের লড়াই 'দেওয়াল' তুলে দিয়েছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই। 'রাস্তা' আলাদা হয়েছে। আর 'রাস্তা' আলাদা হতেই, আলাদা হয়েছে ঘরও। একুশের মিছিলে পা মেলানোর আগে সেই 'আক্ষেপ' ধরা পড়ল বনগাঁর তৃণমূল নেতা রতন পোদ্দারের গলায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


বনগাঁর দীর্ঘদিনের তৃণমূল কর্মী তথা নেতা রতন পোদ্দার। ২০০৫ সালে বনগাঁর ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রথমবার তৃণমূল কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১০-এও ফের কাউন্সিলর হিসেবে জয় পান রতন পোদ্দার। তবে তারপরই ব্যাটন তুলে দেন স্ত্রী সুমতি পোদ্দারের হাতে। বনগাঁর ওই নির্দিষ্ট ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায়, স্বামী রতন পোদ্দাদের জায়গায় ২০১৫-র পুর নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান স্ত্রী সুমতি পোদ্দার। স্বামীর পর পর দুবার জিতে আসা ওয়ার্ডে, খুব সহজেই জয় হাসিল করেন স্ত্রী সুমতি পোদ্দার।


কিন্তু ৪ বছরের মাথায় এবারের লোকসভা ভোটের ফল যেন সব হিসেব গোলমাল করে দিল। লোকসভা ভোটের ফল বেরতেই দলে দলে তৃণমূল কর্মী, নেতাদের বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে যায়। তৃণমূলের ঘর ভাঙিয়ে একের পর এক পুরসভা দখলের চেষ্টা করে বিজেপি। বনগাঁ পুরসভার ছবিটাও তার ব্যতিক্রম নয়। লোকসভা ভোটের ফল বেরতেই বনগাঁ পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেন। আর এরসঙ্গেই বনগাঁ পুরসভায় শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি পর্ব। রাজ্য সরকারের প্রশাসক বসানো থেকে, আস্থা ভোটের সময় বিজেপি কাউন্সিলরদের 'আটকে রাখা', ভোটকে চ্যালেঞ্জ করে ফের বিজেপির হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া, হাইকোর্টের কাছে বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যানের ধমক খাওয়া- সব মিলিয়ে 'নাটক' এখনও চলছে।


আরও পড়ুন, ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস দিন দলনেত্রী, চাইছেন একুশের সমাবেশে আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা


আর রাজনীতির ময়দানের এই তৃণমূল-বিজেপি দড়ি টানাটানি পর্ব ফাটল ধরিয়েছে রতন পোদ্দারের সংসারেও। বিজেপিতে যোগদানকারী ১২ জন কাউন্সিলরের সেই দলে রয়েছেন সুমতি পোদ্দারও। আর তাতে যথেষ্ট 'অভিমানী' রতন পোদ্দার। বয়স ৭০ ছুঁই ছুঁই। বয়সের ভারে শরীর ঝুঁকেছে। তবে এবারও যাচ্ছেন একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে। আর তার গেই সাফ জানালেন, তাঁরা এক বাড়িতে থাকলেও, স্বামী-স্ত্রী এখন আর একঘরে থাকেন না। আলাদা আলাদা ঘরে থাকেন। স্ত্রী সুমতি পোদ্দারের বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিগত। প্রত্যেকেই সাবালক। তবে স্ত্রী 'ফুলের রং' বদলাতেও, তিনি তৃণমূলে আছেন ও থাকবেন।