নিজস্ব প্রতিবেদন: সোনার পাথরবাটি চাই, না হলে জঙ্গি ছিলেন, আবার জঙ্গিই হয়ে যাবেন-- অনেকটা এমনই হুমকি দিলেন এক প্রাক্তন klo জঙ্গি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আক্ষরিক অর্থেই এরকম না হলেও জলপাইগুড়ি বজরাপাড়া বিস্ফোরণ মামলা-সহ ২২টি রাষ্ট্রদোহিতার মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি নারায়ণ সিংহরায় ওরফে তরুণ থাপা সোমবার তাঁর বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে যা বলেছেন, তার বাচ্যার্থ অনেকটা তাই-ই। 


অবৈধ বালিখাদান নিয়ে একদিকে বিজেপি নেতা, অন্য দিকে পুলিশ ও প্রশাসনের লাগাতার চাপ। সেই সহ্য করতে না পেরে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জলপাইগুড়ির অবৈধ বালি খাদানে সরকারি অনুমোদনের দাবি করলেন তরুণ। এ-ও জানালেন, দ্রুত দাবি পূরণ না হলে ফের আগের জীবনে ফিরে যাবেন তিনি।


কে এই প্রাক্তন জঙ্গি তরুণ? 


একটু পিছনে ফিরে তাকাতে হবে। জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের মন্থনী গ্রামের বাসিন্দা তরুণ। ২০০১ সালে কামতাপুরী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভুটানের পিপিংয়ে ছ'মাসের ক্যাম্পে জীবন সিংয়ের উপস্থিতিতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। পুলিশ একসময় তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজেছে। ২০১৪ সালে নেপালে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ঠাঁই হয় জেলে।


২০১৫ সালের শেষে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চেয়ে জেল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন তরুণ-সহ একাধিক রাষ্ট্রদ্রোহী। ২০১৬ সাল নাগাদ জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। ২০১৭ সাল থেকেই তিনি অবৈধ বালিখাদানের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।


হঠাৎ কী করে এক কোমর বালিতে নেমে দাঁড়ালেন তিনি?


সাংবাদিক সম্মেলনে তরুণের দাবি, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে মামলা ও সংসারখরচ চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে তাঁকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে তদানীন্তন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে তাঁর আর্থিক সমস্যার কথা বলেন। তরুণের দাবি, তাঁরাই তখন তাকে বালি খাদান থেকে বালি তুলে ব্যবসা করার কথা বলেন! ফলে প্রশাসনের মৌখিক অনুমতিতে রাজগঞ্জ ব্লকের মন্থনী থেকে ফাটাপাড়া পর্যন্ত এলাকায় স্থানীয় নদী থেকে বালি তুলে রোজগার করতে শুরু করেন তিনি।


সম্প্রতি এলাকাবাসীরা অবৈধ ভাবে বালি তোলার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন। প্রশাসন এসে প্রতিশ্রুতি দেয়, বালি পাচার আটকানো হবে। এরপর সক্রিয় হয় পুলিশও।


তরুণ জানান, সম্প্রতি (বিজেপি'র) পঞ্চায়েত তপন রায় ও বেলাকোবা পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিক সুব্রত সাহা তাঁর উপর বালিখাদান নিয়ে লাগাতার চাপ সৃষ্টি করছেন। ফলে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি দাবি করেন, তিনি একজন তৃণমূল সমর্থক। তাঁর দখলে থাকা বালিখাদানের দ্রুত সরকারি অনুমোদন দেওয়া হোক, নইলে তিনি আবার বিপথগামী হতে পিছপা হবেন না।


বিজেপি নেতা তপন জানান, বালি পাচারের ফলে শ্মশান-সহ বিভিন্ন এলাকা ক্ষতির মুখে। এলাকাবাসীর দাবি মেনে তিনি এর প্রতিবাদ করেছেন। পুলিশও সক্রিয় হয়েছে। বালি পাচার বন্ধ হয়েছে। এখন যদি বিষয়টি নিয়ে সরকার অনুমতি দেয় তবে তাঁর কিছু আপত্তি নেই। তিনি জানান, এই আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি এখন বিভিন্ন ভাবে হুমকির শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি তিনি থানায় লিখিত অভিযোগও করবেন বলে জানান।


এই ঘটনা নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনও রকম অবৈধ বালি পাচার করতে দেওয়া হবে না।


Also Read: তৃণমূলে টাইগার, তরাই-ডুয়ার্সের আদিবাসী ভোট টানতে মোক্ষম চাল শাসকদলের