তন্ময় প্রামাণিক: "আমরা হাতজোড় করে সকলের কাছে অনুরোধ করেছি। যেভাবেই হোক এই সংক্রমণ-মৃত্যু আটকাতে হবে।" চিকিৎসকদের বারংবার অনুরোধ, সরকারি বার্তা, আদালতের নির্দেশিকার পরও যেন টনক নড়ছে না। পুজোয় আরও ৪ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে হারাল রাজ্য। বিসর্জন আবহেও অব্যাহত রইল চিকিৎসকদের মৃত্যু মিছিল। আপাতত ৪ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গত একমাসের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী একদিকে লাফিয়ে বাড়ছে এ রাজ্যে সংক্রমনের সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা। আর অন্যদিকে চিকিৎসকদের মৃত্যুমিছিলও থামানো যাচ্ছে না। উৎসব কার্যত পরিণত উৎ'শবে'। পরিস্থিতিতে বিরক্ত চিকিৎসকদের বড় অংশ।এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত এ রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের মৃত্যু সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ জন।


আরও পড়ুন:  রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজারের ওপরেই, একদিনে মৃত্যু ৫৯ জনের


পুজোর আবহের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বর্ধমানের মেমারিতে ৭৫ বছর বয়সী চিকিৎসক দিলীপ ভট্টাচার্যের। তালিকায় রয়েছেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ৮০ বছরের সুজন কুমার মিত্র। চিকিৎসক অমল রায় এবং ৬৫ বছর বয়সী দিলীপ বিশ্বাস। জানা গিয়েছে, ৬৫ বছর বয়সী দিলীপ বিশ্বাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অষ্টমীর দিন তাঁর মৃত্যু হয়সিউড়ি জেলা হাসপাতাল। চিকিৎসক অমল রায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একিউট কোভিড নিউমোনিয়া। তার মৃত্যু হয় আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে।


আশঙ্কা আর উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসক মহলে। ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের ডঃ রাজীব পান্ডে বলেছেন, "আমরা হাতজোড় করে সকলের কাছে অনুরোধ করেছি। যেভাবেই হোক এই সংক্রমণ-মৃত্যু আটকাতে হবে। কিন্তু বাস্তব তো দেখলাম। উদ্বেগ বাড়ছে। প্রাণ বাঁচানোর কাজে যুক্ত চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীরাও প্রাণ হারাচ্ছেন।"


অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস ডক্টরসের রাজ্য সম্পাদক মানস গুমটা এ প্রসঙ্গে বলেন,  "প্রশাসন বা সাধারণ মানুষের কাছে আমরা প্রতি মুহূর্তে সতর্ক করেছি, করছিও। কিন্তু কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করলেও অনেকেই উদাসীন। জানি না কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা হবে। চিকিৎসকেরা আপ্রাণ লড়ছেন। কিন্তু তাঁদেরও ক্লান্তি আছে। এটা মনে রাখতে হবে। চিকিৎসকরা মৃত্যুর বলি হচ্ছেন প্রায় প্রত্যেকদিনই। এখনও সময় আছে, সতর্ক হতে হবে।"


সবমিলিয়ে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলেই জানিয়েছে একাধিক চিকিৎসক সংগঠন। মানুষ সচেতন না হলে আরও বিপজ্জনক হবে পরিস্থিতি। আশঙ্কা চিকিৎসকদের। আরেকটু সচেতন হয়ে এই উৎসব পালন করলে মৃত্যু এবং সংক্রমণ কমানো যেতে পারত এমনটাই অভিমত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।