শ্রীকান্ত ঠাকুর: জলের অভাবে চাষবাস বন্ধ হতে বসেছে আত্রেয়ী নদী-তীরবর্তী অঞ্চলে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু 'আরএলআই' বা 'রিভার লিফট ইরিগেশন' মেশিন। যার ফলে, সমস্যায় পড়েছেন বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু, জলঘর, ফতেপুর, গঙ্গাসাগর, ময়ামারি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকরা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কৃষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, পরিস্থিতি এরকম চলতে থাকলে জলের অভাবে আগামী দিনে গ্রীষ্মকালে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ শুখা মরশুমে সেচের জলের একমাত্র উৎস আত্রেয়ী নদী। কিন্তু বছর দু'য়েক ধরে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এখন বিস্তীর্ণ নদীর কোথাও এক হাঁটু জল, কোথাও চড়া পড়ে গিয়েছে। স্নানের জলেরও অভাব দেখা দিয়েছে নদীতে। 


আরও পড়ুন: Maharashtra: এই একুশ শতকেও কালা জাদু? জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হল দু'জনকে, মিলল শুধু পোড়া শরীর...


বালুরঘাট শহরের চক ভবানী এলাকায় স্বল্প উচ্চতার একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে রাজ্য সরকার। যেখানে  জল ধরে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে আপার স্ট্রিমে। কৃষকদের অভিযোগ, এই বাঁধ নির্মাণের পর থেকেই আত্রেয়ী নদীর জলের স্রোত কমে গিয়েছে। কৃষিকাজে প্রয়োজনীয় জল পাচ্ছেন না কৃষকরা। তাঁদের দাবি, হয় বাঁধ খুলে দেওয়া হোক, নতুবা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে বেশ কিছু ভেতরে ফতেপুর এলাকায় আরও একটি স্বল্প উচ্চতার বাঁধ নির্মাণ করা হোক। অবশ্য কৃষকদের এই দাবি কতটা মানা সম্ভব, তা এখনও স্পষ্ট নয় প্রশাসনের কাছে। প্রয়োজন পড়লে প্রস্তাব পাঠানো হবে, এমনই খবর জেলা প্রশাসন সূত্রের।


বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু ও জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা আত্রেয়ী নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত। এবং এই এলাকাটি কৃষিপ্রধান। আত্রেয়ী নদী ও তার সংলগ্ন বিভিন্ন খাঁড়ির জল দিয়ে সারা বছর চাষবাস হয়, কিন্তু যতদিন যাচ্ছে জলের পরিমাণ কমছে। খাঁড়িতে জল ধরে রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। বর্ষার সময় খাঁড়িতে জল আসে। বর্ষা শেষ হলে জল চলে যায়। আত্রেয়ী নদীতে বাংলাদেশের বাঁধের ফলে দীর্ঘদিন জলকষ্টে ভুগেছে কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাট ব্লকের কৃষকরা। 


পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বালুরঘাটে একটি স্বল্প উচ্চতার বাঁধ নির্মাণ করা হবে আত্রেয়ী  নদীতে। সেই বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন বালুরঘাট, মাহিনগর, পরানপুর, পতিরাম থেকে কুমারগঞ্জের কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু নীচের দিকে প্রায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার নদী-এলাকায় জলের স্রোত একেবারেই কমে গিয়েছে। যেটুকু জমা জল আছে, সেই জল দিয়ে কোনও রকমে চাষের কাজ চলছে। কিন্তু বৃষ্টি যদি না নামে তাহলে সেই জল কত দিন জমা থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে কৃষকদের মধ্যে।


নদীর উপর স্বল্প উচ্চতার বাঁধ দেওয়ার ফলে নীচের দিকে আর জলস্রোত সেভাবে নেই। কৃষকদের প্রয়োজনীয় জল থেকে শুরু করে বালুরঘাট শহরের পানীয় জলের সরবরাহ সবই এই নদীর জলের উপরই নির্ভরশীল। যে কারণে কৃষকদের মধ্যে থেকে দাবি উঠেছে, নতুন আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করা হোক ফতেপুর এলাকায়। যার ফলে খাঁড়িতে যেমন সারা বছর জল থাকবে তেমনই বালুরঘাট শহর-সহ দুটি পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতেও জলের সমস্যা হবে না।


আরও পড়ুন: Bengal weather Today: ১১ দিনে ১৩ ডিগ্রি কমল কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা! আর কত কমবে? বৃষ্টি কবে? কালবৈশাখী...


জেলাশাসক জানিয়েছেন, বিভিন্ন মহল থেকেই নতুন বাঁধের প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরকে খোঁজ-খবর করতে বলাও হয়েছে। তবে, নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ার কারণ অবশ্য ওই বাঁধ নয়। গত প্রায় ১০ দিনে তাপপ্রবাহের কারণে জল কমে গিয়েছিল। গোটা জেলাতেই এক ছবি। তবে, ভবিষ্যতে যদি এই সমস্যা চলতেই থাকে তাহলে নতুন করে বাঁধের কথা ভাবা যেতেই পারে।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)