মৃত্যুঞ্জয় দাস: মা সারদার পবিত্র জন্মস্থান জয়রামবাটিতে অন্যান্য বছরের মতোই যথাবিহিত ভক্তি-শ্রদ্ধায় পালিত হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পুজো। মা সারদার মা শ্যামাসুন্দরী দেবীর হাতে প্রায় দেড়শো বছর আগে শুরু হওয়া এই পুজো আজও হয়ে আসছে একই ভাবে। মা সারদার পবিত্র জন্মস্থানের এই পুজো দেখতে সকাল থেকেই দূর দূরান্তের অসংখ্য পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছেন জয়রামবাটির মাতৃমন্দিরে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Lord Shani: একদিনে ৩ যোগ! সৌভাগ্যের জোয়ার! বড়ঠাকুরের কৃপায় শনিদশা থেকে মুক্তি এই রাশির জাতকদের...


মা সারদার মা শ্যামাসুন্দরী দেবী ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপ্রাণা। পরিবারের প্রবল অর্থকষ্টের মধ্যেও প্রতিদিন তিনি এক মুঠো করে চাল তুলে রাখতেন গ্রামের কালী পুজোর জন্য। পুজোর আগে গ্রামের অন্যান্যদের মতোই সেই চাল দিয়ে আসতেন কালী মন্দিরে। ১৮৭৭ সালে শ্যামাসুন্দরী দেবী সারা বছর ধরে কষ্টে জমিয়ে রাখা চাল মন্দিরে দিতে গেলে পুজো উদ্যোক্তারা তা নিতে অস্বীকার করেন। এতে প্রবল মনোঃকষ্ট নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন শ্যামাসুন্দরী দেবী।


জনশ্রুতি, ওই রাতেই শ্যামাসুন্দরী দেবী স্বপ্নে দেখেন, লাল পাড় সাদা শাড়ির এক মহিলা তাঁকে বলছেন, ওই চাল দিয়ে তাঁর পুজো দিতে। শ্যামাসুন্দরী দেবী লাল পাড় সাদা শাড়ির ওই মহিলাকে চিনতে পারেননি। মা সারদাকে প্রশ্ন করলে মা সারদা জানান, ওই মহিলা আসলে মা জগদ্ধাত্রী। এর পরই নিজের বাড়িতে ক্ষুদ্র সামর্থ্যে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করেন শ্যামাসুন্দরী দেবী। আগাগোড়া এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন মা সারদা। পরবর্তীতে মা সারদা তাঁর মায়ের শুরু করা এই জগদ্ধাত্রী পুজো যথারীতি চালিয়ে যেতে থাকেন। জীবনের শেষ বছর পর্যন্ত এই পুজোর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়েছিলেন সারদাদেবী। 


পরবর্তীতে মা সারদার পবিত্র জন্মস্থানে মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠা হলে জগদ্ধাত্রী পুজোর যাবতীয় আয়োজন করতে শুরু করেন মাতৃমন্দির কর্তৃপক্ষই। আজ, রবিবার সকাল থেকে মাতৃ মন্দিরের মহারাজ ও সন্ন্যাসীরা অত্যন্ত ভক্তিশ্রদ্ধার সঙ্গে পুজো অর্চনার ব্যবস্থা করেন। মায়ের বাড়িতে মায়ের পুজো দেখতে ভিড় জমান দেশ বিদেশের অসংখ্য পুণ্যার্থী ও ভক্ত।


আরও পড়ুন: Bangladesh: হিন্দুদের উপর অত্যাচার এবার বন্ধ করতে হবে! ইউনূসের বাংলাদেশকে কড়া হুঁশিয়ারি মোদীর...


ওদিকে চিরাচরিত রীতি মেনে রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড়ের সারদা পীঠে হচ্ছে জগদ্ধাত্রী পূজা। মঠের নিয়ম অনুসারে, নবমীর দিনেই সপ্তমী অষ্টমী এবং নবমীর পূজা একসঙ্গে করা হয়। গতকাল, শনিবার সায়ংকালে আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠান হয়েছে। আজ, রবিবার ভোর ছটায় হয়েছে পূর্বাহ্নের পূজা। দশটায় পুষ্পাঞ্জলি। দুপুর এগারোটায় মধ্যাহ্নের পূজা। সাড়ে এগারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত ভোগদান পর্ব। দুপুর দুটায় অপরাহ্ণের পূজা। বিকাল চারটায় হোম এবং পুষ্পাঞ্জলি। সন্ধ্যা ছটায় আরতি।


আগামীকাল, সোমবার সকাল সাতটায় দশমীর পুজা। সন্ধে ছটায় মায়ের ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন। সারদা পীঠের এই জগদ্ধাত্রী পূজা দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)