শিমুলিয়া মাদ্রাসায় মহিলাদের হাতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ! আসাদুল্লার গ্রেফতারিতে সিঁটিয়ে ডাঙাপাড়াবাসী
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই আসাদুল্লাহ ডাঙাপাড়ার বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় আসাদুল্লা।
নিজস্ব প্রতিবেদন : টিনের চালের দু’ কামরার মাটির বাড়ি। উঠোনে আগাছার জঙ্গল। মাটির বারান্দায় পাখির বাসা। বাড়ির পিছন ও টিনের চালের অবস্থা তথৈবচ। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের নিত্যানন্দপুর পঞ্চায়েতের ডাঙাপাড়ার এই বাড়ির দিকে একবার তাকালেই বোঝা যায়, এখানে দীর্ঘকাল ধরে কেউ থাকে না। এটাই আসাদুল্লা শেখ ওরফে রাজার বাড়ি।
জামাত-উল-মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) ওরফে জেএমবির চাঁই সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) মঙ্গলবার ভোরে চেন্নাইয়ের থোরিয়াপক্কনম এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে আসাদুল্লাকে। ওই বাড়িতে সে মাস তিনেক ধরে ভাড়া নিয়ে থাকছিল বলে এসটিএফ জানতে পেরেছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই আসাদুল্লাহ ডাঙাপাড়ার বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় আসাদুল্লা। এনআইএ খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে। তার মধ্যে ভাতারের আসাদুল্লার নামও ছিল।
জানা গিয়েছে, আসাদুল্লার শ্বশুরবাড়ি কুলসুনো গ্রামে। শ্বশুরবাড়িতে থাকার সময়েই আবুল কালামের সঙ্গে আসাদুল্লার পরিচয় হয়। আবুল কালামের সঙ্গেই সে শিমুলিয়ার মাদ্রাসায় যেত। মহিলাদের হাত ধরে তাঁর জেহাদি প্রশিক্ষণ হয়েছিল। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, আসাদুল্লারা ছ’ভাই। সে পঞ্চম। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর আসাদুল্লা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। তার কিছুদিন পরেই আসাদুল্লার স্ত্রী হালিমা বিবি তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে কুলসুনো গ্রামে চলে যান। তারপর থেকে ওই বাড়ি তালাবন্ধ হয়ে রয়েছে।
এনআইএ খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্ত হাতে নেওয়ার পর গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার আসাদুল্লার এই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন পড়শি বলেন, “ওই সময় এনআইএ আসাদুল্লার খোঁজে এসে আমাদেরকেও জেরা করেছিল। তারপর থেকে ওই বাড়ির দিকে আমরা ভুলেও তাকাই না। মঙ্গলবার আসাদুল্লা ধরা পড়ার খবর পৌঁছাতেই ডাঙাপাড়া কার্যত ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছে। প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। সবাই মনে করছেন, কিছু বললেই এনআইএ যদি ফের জেরা করে! তার চেয়ে চুপ থাকাই ভাল।
আরও পড়ুন, মালদায় ধৃত জেএমবি-র দুই 'মাথা'র সঙ্গে কাশ্মীর যোগ! সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
ধৃত আসাদুল্লা শেখ খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কওসরের কাছের লোক। কওসরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বেঙ্গালুরু থেকে। আসাদুল্লা তারপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল। ওখানে বসেই বর্ধমান মডিউল চালনা করছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে এসটিএফ।