নিজস্ব প্রতিনেদন: প্রকৃতির কোলে অকৃত্রিম পরিবেশ ছাড়া বাউলের আসর আবার জমে না কি? দিনের আলোয় বা রাতে ধুনো জ্বেলে খালি গলার গানের আসর। সেদিন আর নেই জয়দেব-কেঁদুলির মেলায়। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে ওই মেলায় এখন বাউলের মেঠো সুরই হারিয়ে যায়। মাইক, সাউন্ড বক্স, বৈদ্যুতিন আলোর দাপটে বাউলের সেই আকর্ষণই আর থাকে না।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জয়দেব-কেঁদুলির মেলা গত কয়েক বছর ধরে হাঁসফাঁস করছে আধুনিকতার ছোয়ায়। গান শুনে মন আকুল হবে কী, কান ঝালাপালা হয়ে যায় মাইকের আওয়াজেই। রাতে বাহারি আলোয় কৃত্রিম পরিবেশে বাউলের আসরের সেই মাহাত্ম্য আর খুঁজে পান না রসিক জন। ভিন দেশ থেকে আসা কিছু তরুণী বাউল এবার উদ্যোগী হয়েছেন পুরোনো পরিবেশ ফেরাতে। বিশেষ করে মাইক ছাড়াই এ বার আসর বসানোর জন্য শুরু হয়েছে প্রচার। গানই প্রচারের মাধ্যম। আর এই মাইকের তাণ্ডবে কোথায় যেন হারিয়েই যেতে বসেছে জয়দেব মেলার বাউল ঐতিহ্য।


আরও পড়ুন- স্কুল বাঙ্ক করে মদের আসর, সোশ্যাল মিডিয়ায় নগ্ন নাচের ভিডিয়ো পোস্ট পড়ুয়াদের!


মাকি কাজুমির কথায়, ‘অর্ন্তমুখী হতে হয় নিজেকে জানার জন্য। মানুষের মধ্যেই তো ভগবান। তার জন্য মাইক, লাইট, মঞ্চ লাগে না। বরং শব্দের দাপটে নষ্ট হয়ে যায় পরিবেশের মাধুর্য। তাই আমরা আমাদের আখড়া থেকে প্রচার শুরু করেছি, জয়দেবে বার মাইক মুক্ত হোক।’ শুধু মাকি কাজুমি নন, ওই আখড়ার সাধিকা আরও কয়েক জন জাপানি তরুণী। এঁদের মধ্যে আছেন কাজুমি ফুকাজয়া, শোকো নিশিমুড়া, কানাকো শিমিজু। যাঁরা মানব মনের খোরাক পেতে অর্থ, বৈভব ছেড়ে জড়ো হয়েছেন বাউলের দেশে। মনের মানুষের  আখড়ার প্রধান বিশিষ্ট বাউল গায়ক সাধন দাস বৈরাগ্য। তাঁর সমর্থনেই প্রচার ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। তিনি নিজেও সামিল প্রচারে। সাধন দাস বলেন, “আমরা সেই প্রাচীন ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীর জয়দেব কেঁদুলি গ্রামে ফিরতে চাই। যেখানে অর্থের অভাব থাকলেও মনের মানুষের খোঁজ মেলে। জয়দেব মেলায় দেশ বিদেশ থেকে আসা লোকেদের কাছে আমরা প্রার্থনা করব, কেঁদুলিকে দূষণ মুক্ত করুন।”


আরও পড়ুন- টোটো বাড়িয়েছে আয়, কাগজ কুড়িয়েই সংসার চলে গৌরীর


জয়দেবেই প্রায় ২৫০ আখড়া আছে। মকর সংক্রান্তির মেলায় আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে বাউলরা আখড়া সাজান। ‘মনের মানুষ’ আখড়ার উদ্যোগ কিন্তু নাড়া দিয়েছে অন্য আখড়ার বাউল সাধকদের মনেও। সকলেই মাইক, লাইট বর্জন করে অজয় নদের তীরে পুরোনো পরিবেশ ফেরাতে আগ্রহী।