North Dinajpur News: বাড়ির আসবাব ভাঙচুর; সিল করে দেওয়া হয়েছে টয়লেট, দুষ্কৃতী তাণ্ডবে ৩ মাস ঘরছাড়া মা-ছেলে
North Dinajpur News: বাড়ির প্রতিটি ঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আসবাবপত্র। আলমারি ভাঙা, ক্যাবিনেট থেকে মালপত্র নীচে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির শৌচালয় সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে। কেটে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুত্ সংযোগ।
ভবানন্দ সিংহ: জমি মাফিয়াদের তাণ্ডবে কার্যত ঘরছাড়া উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির বিহিনগরের এক পরিবার। ওই পরিবারে রয়েছেন মা ও ছেলে। দুজনই সরকারি কর্মচারী। অভিযোগ স্থানীয় তৃণণূলের দুই নেতা তাদের ঘরবাড়ি থেকে উত্খাতের চেষ্টা করছে। বাড়িতে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের জেরে ৩ মাস ঘরছাড়া ছিলেন মা ও ছেলে। শেষপর্যন্ত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। তাদের বাড়িতে পুলিস পিকেট বসেছে। আদালতের নির্দেশে বাড়িতে ফিরে মাথায় হাত ওই পরিবারের। বাড়ির বেশকিছু অংশে অবাধে ভাঙচুর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোটে বড় একটা বাঁশ দিয়ে.....বসিরহাটে বিস্ফোরক নুসরত
বাড়ির প্রতিটি ঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আসবাবপত্র। আলমারি ভাঙা, ক্যাবিনেট থেকে মালপত্র নীচে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির শৌচালয় সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে। কেটে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুত্ সংযোগ। পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ির কর্তী বলেন, প্রবল আশঙ্কার মধ্যে রয়েছি। রাতে থাকার মতো অবস্থা নেই। অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল নেতা ফিরোজ ও তার ভাইয়ের দিকে। আক্রান্ত পরিবার পুলিস সুপার, মহকুমা শাসক, জেলা শাসকের কাছে গিয়েছে। প্রশাসনের প্রতিটি স্তরেই তারা কড়া নেড়েছে। কোনও লাভ হয়নি। প্রশ্ন উঠছে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে।
ওই পরিবারের ছেলে বলেন, আমাদের একটা শরিকি বিবাদ রয়েছে। কার ভুল কার ঠিক তা আদালত বিচার করবে। সেই ইস্যু নিয়ে ওরা আমাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে চায়। আমাদের বাস করতে দেবে না। গত জানুয়ারি মাসে আমাদের উপরে হামলা হয়। আমারা থানায় যাই। তার পর থেকে অস্ত্র হাতে লোকজন আমাদের বাড়ির চারপাশে ঘোরাফেরা করছে। আমরা আর বাড়িতে ফিরতে পারিনি। এখানে রয়েছে লুত্ফর রহমান ও তার ভাই। এরা এলাকায় মাফিয়ারাজ চালাচ্ছে। এরা জমি মাফিয়া। এখানকার অন্তত ৬টি পরিবারকে তারা এখন থেকে তাড়িয়েছে। বাড়ির কত্রী বলেন, ৩৫ বছর ধরে তিলে তিলে বেড়ে ওঠা এই বাড়ি। এসব ছেড়ে কীভাবে চলে যাব? বাড়ির আসবাবপত্র, জিনিসপত্র নিয়ে চলে গিয়েছে। বারবার পুলিসে অভিযোগ করেছি। এসপি, ডিএম, আইসি এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করেছি। কোনও সুরাহা হয়নি। শেষপর্যন্ত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালতের নির্দেশে বাড়ি ফিরে যা দেখছি তাতে আমার চোখ ছানাবড়া। ডাস্টবিনের থেকেও পরিস্থিতি খারাপ। টয়লেট ব্লক করে দিয়েছে। জল, বিদ্যুত্ কেটে দিয়েছে। বাড়িতে কিচ্ছু নেই।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই লুত্ফর ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তাতে কি তারা জামিন নিয়েছেন? তাদের বক্তব্য তাদের জামিন নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। পুলিস জানে আমরা কোনও অন্যায় করিনি। ফিরোজ খান নামে অভিযুক্ত তৃণণূল নেতা বলেন, পুলিস তো দেখছে আমাদের কোনও দোষ নেই। তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেবে? ওদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় মামলা ছিল। তাই ওরা ৩ মাস বাড়ি ঢোকেনি। করনদিঘির ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুভাষ সিনহা বলেন, অনেক দিনের বিবাদ। প্রশাসন তার মতো করে কাজ করছিল। যতদূর জানি গোটা বিষয়টি কোর্টে গিয়েছে। এটা একটা পারিবারিক বিবাদ। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্কে নেই।