নিজস্ব প্রতিবেদন: দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৫টা বছর। দেশের সব থেকে পুরনো রাজভবনের বাসিন্দার সময় হয়েছে ঘর ছাড়ার। তার আগে Zee ২৪ ঘণ্টাকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার দিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। রাজ্যপাল হিসাবে তাঁর অভিজ্ঞতা ও হতাশার কথা জানালেন আমাদের প্রতিনিধি শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়কে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এদিন একাধিক বিষয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেন রাজ্যপাল। জানান, বেশ কিছু বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা সুখের, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ততটা নয়। রাজ্যপাল জানান, পশ্চিমবঙ্গের অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে শিল্প সংস্কৃতির ক্ষেত্রে। 


 



কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মতে, রাজ্যে শিল্প-সংস্কৃতির সঠিক চর্চা হলে তার মূল্যবোধ মানুষের ভিতরে প্রবেশ করবে। যার প্রভাব দেখা যাবে সমাজজীবনে। আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যপাল জানান, গোটা বিশ্বের মতো পশ্চিমবঙ্গেও মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। যা বেশ উদ্বেগজনক। 


রাজ্যপাল বলেন, রাজ্য সরকারকে সাংবিধানিক বিধিনিষেধের মধ্যে থেকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তার মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি পরামর্শ গ্রহণ করেছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে কলেজে গোটা ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে রূপান্তরিত করা ও ছাত্র সংসদ গঠনে সংশোধন। 


রাজ্যে ছোট, মাঝারি ও বড় শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে উৎসাহিত করলে গরিব ও মধ্যবিত্ত উপকৃত হবে। একই সঙ্গে শিল্প সম্মেলনের ফল রাতারাতি পাওয়া সম্ভব নয় বলে রাজ্য সরকারের পাশে দাঁড়ান তিনি। 


এদিন তাঁর বিরুদ্ধে 'বিজেপির এজেন্ট' হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দেন রাজ্যপাল। বলেন, আমি রাজ্যপাল মনোনীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। তার পরও এমন অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক। 


কেশরীনাথ ত্রিপাঠী জানান, নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ নিয়ে নানা কথা ওঠে। খবর ছড়ায় প্রধানমন্ত্রীকে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ৪২ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছি আমি। কিন্তু সত্যি বলতে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আমি তাঁকে ৪২টা শব্দও বলিনি। একশ্রেণির বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম ওই সাক্ষাৎ নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, এই ধরণের সম্প্রচার থেকে বিরত থাকা উচিৎ সংবাদমাধ্যমগুলির। 


বিদায়ী রাজ্যপাল জানান, রাজ্যপাল হিসাবে সেফটি ভালবের কাজ করেছেন তিনি। কোনও ক্ষেত্রে ক্ষোভের চাপ খুব বেড়ে গেলে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চাপ কমানোর চেষ্টা করেছি। স্মারকলিপি গ্রহণ করে তা উপযুক্ত কতৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য পাঠিয়েছি। সব দলের লোকেরা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এতে কিছু মানুষ ক্ষুণ্ণ হয়েছেন। 


সিপিএমের ধাঁচে তৃণমূলে ৩ লক্ষ হোল টাইমার, সোমবার ঘোষণা করতে পারেন মমতা


রাজ্যে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটানাকে ব্যতিক্রমী বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধরণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রকে ডেকে বোঝানো উচিত। আক্রান্ত শিক্ষকের কোনও খামতি থাকলে সেটাও তাঁকে জানানো উচিত। 


রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। বলেন, একাধিক কারণের মধ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম রাজনীতি। আমি ডিজি, পুলিস কমিশনারকে ডেকে আইনশৃঙ্খলা উন্নতি করতে পরামর্শ দিয়েছি। সম্প্রীতি রক্ষা করতে বলেছি। 


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিদায়বেলায় কোনও পরামর্শ দেবেন? জবাবে কেশরীনাথ বলেন, দেখা হলে দেব। তবে রাজ্যের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে রাজ্য সরকারের পরামর্শ গ্রহণের ইচ্ছাশক্তি থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।