Khardaha Singer Beaten Up: ইউটিউবে কেন আইটেম সং? বাংলায় নীতি পুলিসের নোংরা হুমকি-মারধর দুই তরুণীকে
শ্রী ভদ্র বলেন, এভাবে তো আমাদের থামানো যাবে না। ভাবতেই পারছি না, একটা গানের জন্য এভাবে হামলা হতে পারে। ওদের বক্তব্য বাঙালি মেয়ে হয়ে তোরা এটা কীভাবে করিস! তোদের বারোটা বাজাব।
পিয়ালি মিত্র: ইউটিউবে হিন্দি আইটেম সং আপলোড করায় কঠিন শাস্তি। রাস্তায় ঘিরে ধরে বেধড়ক মার, গরম রডের ছ্যাঁকা খড়দহের ২ শিল্পীকে। অশ্লীল ভিডিয়ো এই অভিযোগ তুলে ওই দুজনকে বেধড়ক মারধর করে 'নীতি পুলিস'। থানায় অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। এমনটাই দাবি ওই দুজনের। গত ১২ সেপ্টেম্বর খড়দহের দোপেরিয়ার বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার সময়ে তাদের উপরে হামলা করা হয়। শ্রী ভদ্র নামে এক তরুণী শিল্পীর হাত ও বুকে আঘাত করা হয়। পাশাপাশি সন্নতি মিত্রের মাথায় আঘাত করা হয়।
আরও পড়ুন-Ota Benga: লজ্জার ইতিহাস! চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দি এই তরুণকে দেখতে টিকিট কাটত লোক...
সন্নতি মিত্রের মাথায় আঘাত করা হলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বুক ও পায়েও আঘাত লাগে। জি ২৪ ঘণ্টাকে সন্নতি বলেন, ২০১৭ সালে মিস ইন্ডিয়াতে অংশ নিই। তার পর থেকে আমরা মডেলিং, অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত। আমাদের একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে। কয়েক বছর ধরে সেখানে ভিডিয়ো আপলোডও করছি। ঠিক করেছিলাম একটি মিউজিক অ্যালবাম বের করব। গানটির নাম রসগোল্লা। ওই গানটিতে নিজেদের কনসেপ্ট ব্যবহার করে ভিডিয়ো আপলোড করেছি। সেটি বিশাল হিটও হয়েছে। তা সেলিব্রেট করার জন্য দেপেরিয়ায় যাচ্ছিলাম। তখন সন্ধে হয়ে গিয়েছে। সেইসময় পেছন থেকে দুটি ছেলে হেলমেট ও মাস্ক পরে এসে পেছন থেকে আমার বন্ধুকে খুব মারে। আওয়াজ শুনে পেছনে ঘুরতেই আমাকে প্রচণ্ড জোরে মাথায় আঘাত করা হয়। দুজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। বলা হয়, তোরা রসগোল্লার মতো নোংরা গান বের করেছিস? তোদের মেরে ফেলা উচিত।
ওই হামলা নিয়ে শ্রী ভদ্র বলেন, এভাবে তো আমাদের থামানো যাবে না। ভাবতেই পারছি না, একটা গানের জন্য এভাবে হামলা হতে পারে। ওদের বক্তব্য বাঙালি মেয়ে হয়ে তোরা এটা কীভাবে করিস! তোদের বারোটা বাজাব।
এদিকে, ওই হামলা নিয়ে পরিচালক শতরূপা সান্যাল। জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, এরকম নীতি পুলিসের কথা বাংলায় আগে শুনেছি বলে মনে পড়ছে না। উত্তরভারতে এসব শুনেছি। বাংলা সেই তুলনায় অনেক বেশি প্রগতিশীল। তবে আরও ভয়ঙ্কর বিষয় হল পুলিসের কাছে গেলেও তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। কীভাবে এই দুই মেয়ে নাচবে, গাইবে তা কি নীতি পুলিস বলে দেবে? সাফ কথা, এখানে এসব চলবে না। ইউটিউবে ওই গান আপলোড করা হয়েছে। যার ইচ্ছে সে দেখবে, ইচ্ছে না হলে দেখবে না। টিকটকেও রুচির বাইরে ভিডিয়ো আপলোড করা হচ্ছিল। কোনও সমস্যা তো হয়নি!
ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নারী আন্দোলন কর্মী শাশ্বতী ঘোষ বলেন, মেয়েদুটির যে নাচকে অশ্লীল বলে তাদের রাস্তায় ধরে মারধর করা হল সেই ভিডিয়োটি এবার ভাইরাল হয়ে যাবে। কারণ সংবাদমাধ্যমে তা খবর হয়েছে। তাই নীতি পুলিস যে করতে চেয়েছিল তার আর হবে না। সবাই সার্চ করে ওই ভিডিয়ো বের করে নেবে। অর্থাত্ আজকের যুগে ওই নীতি পুলিসির কোনও মানে নেই।
অন্যদিকে, ওই ঘটনায় রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই অনেক বিষয় আমাদের পছন্দ নাও হতে পারে। কোনও আপত্তি থাকলে তা আমি দেখব না। এর জন্য কারও গায়ে হাত দেওয়া যায় না। এই নীতি পুলিসির অধিকার কারও নেই। যে থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে তার এনিয়ে কী করেছেন তা খোঁজখবর নেব। আশা করছি আগামী কাল-পরশু কোনও সদার্থক পদক্ষেপ নিতে পারব।